কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, হাওরে ধানের ঝুঁকি কমাতে আমরা কাজ করছি। আগাম জাতের বিশেষ করে ১৫-২০ দিন আগে পাকে এমন জাতের ধান চাষের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিক সংকটের কথা চিন্তা করে, দ্রুততার সাথে ধান কাটার জন্য হাওরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার দেওয়া হচ্ছে।
রবিবার কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার সদরের হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। মিঠামইন উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান হয়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বছরে মাত্র একটি ফসল বোরো ধানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে উচ্চফলনশীল জাতের ধান যেমন ব্রিধান ৮৯, ৯২ উদ্ভাবন করেছেন। এসব উন্নত জাতের হাইব্রিড ধানের বীজ কৃষকদের দেওয়া হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী এগুলো চাষে এগিয়ে আসার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, হাওরে চাষযোগ্য জাতের ধানের জাত উদ্ভাবনের জন্য হাওরে ‘ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের' আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকার দেশের কৃষকের মুখে অমলিন হাসি ধরে রাখতে চায়। সেজন্য সরকার কৃষিকে লাভবান ও কৃষকের জীবনমান উন্নত করতে অত্যন্ত উদারভাবে কৃষকদের সার, বীজ, সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমানো ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপারসহ বিভিন্ন যন্ত্র কৃষকদের দিচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, ব্রির মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর, বারির মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক ছাইফুল আলম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আছিয়া আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী কৃষকদের মাঝে ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাওরে এক লাখ দুই হাজার ৫০০ হেক্টর ও নন- হাওরে ৬৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত (২৪ এপ্রিল) হাওরের ৫৩ ভাগ ও নন-হাওরের ৩৯ ভাগ জমির ধান কর্তন হয়েছে। এ বছর জেলায় সাত লাখ ১১ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই