আর কোনো দলকে এককভাবে ক্ষমতায় এনে স্বৈরাচার হতে দেবেন না বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
তিনি বলেছেন, কোনো দল যেন সংসদে এককভাবে মাতব্বরি করতে না পারে, তাই আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। ভবিষ্যতের সংসদকে কার্যকর করা, জনগণের প্রতিটি ভোটের মূল্য দেওয়ার জন্য, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল, যারা যে অনুপাতে ভোট পাবে তারা সেই অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব করবে। একদল এককভাবে ক্ষমতায় গেলে কি হয়, সেটা আমরা গত ৫০ বছরে দেখেছি।
শুক্রবার বিকেলে পটুয়াখালীর ঝাউতলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে জেলা গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুর এসব কথা বলেন।
ভিপি নুর বলেন, পরিষ্কার কথা, যারা ১৫ বছর আন্দোলন করেছে, রক্ত দিয়েছে তাদের নিয়ে যদি বিএনপি জাতীয় সরকার নির্বাচন করে তাহলে তাদের সঙ্গে সমঝোতা হবে। অন্যথায়, বিএনপির বিকল্প জোট হয়ে, বিকল্প শক্তি নিয়ে এককভাবে নির্বাচন করা হবে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসেন প্রার্থী দিবে গণ অধিকার পরিষদ। প্রত্যেকের বয়স হবে ৩০, ৪০ ও ৫০ বছরের মধ্যে। কারণ আগামীতে ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের সংগঠিত প্রয়োজন। যারা এমপি, পৌরসভা ও উপজেলা নির্বাচন করবেন এখন থেকে জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণের কাছে নিজেদের তুলে ধরতে হবে।
গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ করে ভিপি নুর বলেন, আজকে চিন্তা করতে পারেন, আমরা আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করে মুক্ত হয়েছি, অথচ আজ আমি আমার জেলায় আসবো, সেই জায়গায় বাঁধা সৃষ্টি করা করা হয়। মিছিল নিয়ে আসতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। আমার দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেওয়া ও পোস্টার ছিড়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার খালু লাউকাঠীতে থাকে। তাদের ইউনিয়নের পাতি-ছাতি নেতারা হুমকি দিচ্ছে ও হয়রানি করছে। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নুর বলেন, তোমাদের টপ লিডাররা আমাদের সঙ্গে কথা বললে, বিনয়ী আচরণ করে, দেখা করার সময় নেয়, আর তোমরা এখানে আগের জুতা লীগ মোজা লীগের মতো আচরণ করো। তোমাদের শায়েস্তা করার জন্য আমি যৌথবাহিনীকে অনুরোধ জানাই।
এসময় নুরুল হক নুর বিএনপির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, আমরা স্বৈরাচার পতনে ৫০টি দল যুগপৎ আন্দোলন করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ক্ষমতায় যেতে না যেতেই বিএনপির নেতাকর্মীদের চেহারার বদল আমরা দেখতে পাচ্ছি। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ড তাদের ফুটে উঠেছে। যদি বিএনপি উপলব্ধি করতে না পারে, তাহলে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী-মাফিয়া-দখলধার-লুটেরাজ-স্বৈরাচারী সরকারকে যেভাবে উৎখাত করা হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবেই নব্য মাফিয়া, দখলধার, লুটেরাজ ডাকাতদের প্রতিহত করা হবে।
সংগঠনটির জেলা শাখর আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম, হাসান আল মামুন, রবিউল হাসান, শহিদুল ইসলাম শাহ আলম শিকদার, নাহিদ হাসান, রফিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান মুন্না, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, হেলেনা আক্তার, এইচএম ইলিয়াস, মো. কামাল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান ও শহিদুল ইসলাম সুমন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই