আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি বিকলাঙ্গ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৫-১৬ বছরের শাসনামলে যুবলীগ-ছাত্রলীগ মূর্তিমান আতঙ্ক ছিল। যুবলীগ-ছাত্রলীগ যেদিক দিয়ে হেঁটে যেত, মানুষ সেদিক দিয়ে যেতেও ভয় পেত।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এমন বন্য আইন ও শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন তার শাসনকালে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে দেখলে ভয় পেত। বন্ধু বন্ধুকে দেখলে ভয় পেত। মানুষ ফিসফিস করে কথা বলতো, নীরবে কথা বলতো। তারা ভাবতো তাদের কথা যুবলীগ-ছাত্রলীগ জেনে গেলে বাড়ি-ঘরে আক্রমণ করবে অথবা পুলিশ-র্যাব তুলে নিয়ে যাবে। চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ করে দেবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দাতে প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্প’ এর উদ্বোধনের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এসব কথা বলেন রিজভী।
গত জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো ও চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর উদ্যোগে দ্বিতীয় দিনের মতো চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এই চক্ষুসেবা ক্যাম্প পরিচালিত হয়।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, বিএনপি নেতা ও চিকিৎসক ডা. এম এ মুহিত প্রমুখ।
এ সময় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ছাত্রদল নেতা শারিফুল ইসলাম, মশিউর রহমান মোহান ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে সারাদেশেই শুধু রক্ত ঝরেছে। সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, হাসপাতালে হাসপাতালে কাতরিয়েছে। অনেকে হাসপাতালে যেতেও ভয় পেত। কারণ হাসপাতালে এসেও আক্রমণ করেছে শেখ হাসিনার ক্যাডাররা।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, সেখানে শেখ হাসিনা কল্পনাই করতে পারেননি যে, তাকে এত প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে-তিনি এটা চিন্তাও করতে পারেননি। তিনি ভেবেছিলেন-তার পাশে আছে ভারত এবং বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এখানে বেনজীর আছে, মামুন আছে, হারুন আছে-আরও তার কত পুলিশ অফিসার আছে, যারা নির্দেশ দেওয়ার আগেই নিরীহ মানুষদের উপর গুলি চালাতেন, ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা করতেন। বিএনপি-ছাত্রদলের কত ছেলে যে ক্রসফায়ারে মারা গেছেন, কত ছেলে যে গুম হয়েছেন-তার ঠিক নেই। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরুর মতো যারা অনেকেই এমপি ছিলেন-তাদেরকেও নিরুদ্দেশ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত