মহান মে দিবস উপলক্ষে জনতা পার্টি (জেপিবি) বাংলাদেশের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় তৎপরতা ছাড়া শ্রমিকের ভাগ্যোন্নয়ন সম্ভব নয়। শ্রমিকের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর খোঁজ-খবর রাখতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো সরকার এবং মালিক দ্বারা প্রভাবিত।
তিনি দুঃখ করে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো আর রাজনীতিতে নাই। হারিয়ে ফেলেছে রাজনীতি। সে কারণেই শ্রমিকদের স্বার্থের কথা কেউ ভাবছে না।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জেপিবি’র মহাসচিব শওকত মাহমুদ দলের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের লিখিত একটি বক্তব্য পড়ে শোনান। লিখিত বক্তব্যে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমি বিশেষ প্রয়োজন ও শারীরিক চেক আপের জন্য বর্তমানে লন্ডন অবস্থান করছি। আজকের এই মহতি আয়োজনে উপস্থিত না থাকতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রথমে আমি দেশবাসীকে জানাই মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা। শ্রমিকের অধিকার আদায়ে (বিশেষ করে পরিবহন শ্রমিকদের) আমি আগেও যেমন আমার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের মাধ্যমে সোচ্চার ছিলাম। তেমনি আজ রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমি দেশের সকল শ্রেণি-পেশার শ্রমিকের অধিকার আদায়ে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।
সভায় সভাপতির ভাষণে পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সরোয়ার মিলন বলেছেন, আমরা মনে করি শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা এবং অধিকার না দিলে বাংলাদেশ এগোবে না। একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমরা যে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছি, সমাজে-দেশে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।
সাবেক এমপি বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা দলের উপদেষ্টা শাহ মো. আবু জাফর প্রধান বক্তার ভাষণে উল্লেখ করেন, এতো আন্দোলন বিপ্লবের পরও শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের কোনো ইউনিয়ন করার অধিকার নেই। তাদের অধিকার আদায়ে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যেতে হবে। শ্রমিক নেতৃত্বে দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় আমি জেপিবির মাধ্যমে সকলের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় এককাতারে থেকে কাজ করে যাবো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব শওকত মাহমুদ। তিনি বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থের কথা জেপিবি সবসময় বলবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে মহান মে দিবসে জেপিবির লক্ষ্য হচ্ছে ন্যায্যতার বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
তিনি নতুন রাজনৈতিক দল জেপিবি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই অভূতপূর্ব কর্মযজ্ঞে। এ জন্য শুধু চাই ইমানি অঙ্গীকার ও পরিকল্পনা। অন্যান্য দলের তুলনায় আমাদের পার্থক্য হবে নিখাদ দেশপ্রেম, চিন্তা-চেতনায় স্বচ্ছতা ও সাহসিকতা, দলের ভেতরে-বাইরে গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা, উচ্চারণে-কর্মে-জনসেবায় অভিন্ন লক্ষ্যাভিসারী হওয়া। জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ও নীতিনির্ধারণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও শ্রম বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কাজী আবদুল হান্নান, দলের উপদেষ্টা ও ফরহাত হোসেন মাহবুব, উপদেষ্টা মেজর (অব.) মুজিব, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল হক হাফিজ, ভাইস চেয়ারম্যান নির্মল চক্রবর্তী, ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট ওয়ালিউর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আজিজুল নাহার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এম আসাদুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রাজা জাকির হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব নাজমুল আহসান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেপিবি’র সমন্বয়ক নুরুল কাদের সোহেল।
বিডি প্রতিদিন/এমআই