সে টাইটানিক নয়। কিন্তু সমকালে তারও খ্যাতি ছিল যথেষ্ট। ‘জেনি লিন্ড’ নামের এই জাহাজটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পাড়ি দিচ্ছিল মেলবোর্ন থেকে সিঙ্গাপুর। ১৮৫০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে ডুবে থাকা এক প্রবাল প্রাচীরে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায় জাহাজটি। তিনজন শিশুসহ মোট ২৮জন যাত্রী ও নাবিক এই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।
ডুবন্ত জাহাজ থেকে যাত্রী ও নাবিকরা এক দ্বীপে আশ্রয় নেন। ৩৭ দিন তাদের সেখানেই কাটে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু 'জেনি লিন্ড'র কী হল? এই প্রশ্ন ঘুরপাক সাগরের লোনা বাতাসে খেয়েছে ১০০ বছরেরও বেশি সময়।
১৯৮৭ সালের এক সমুদ্র-জরিপে জানা যায়, এই প্রবাল প্রাচীরের কাছে অগভীর সমুদ্রে 'জেনি লিন্ড'র ধ্বংসাবশেষকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তোড়জোড় শুরু হয় সেই সময় থেকেই। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল মেরিটাইম মিউজিয়াম এবং সাইলেন্টওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন নামের এক সমুদ্র-প্রত্নতত্ত্বের গবেষক দল যৌথভাবে অভিযান চালায় সংশ্লিষ্ট সমুদ্রে।
১১ জন পেশাদার ডুবুরি ও প্রত্নতাত্ত্বিকের একটি দল অস্ট্রেলিয়া থেকে কেন রিফ নামের ওই অঞ্চলে পৌঁছায়। পানিতে ডুব দিয়ে খোঁজ পাওয়া যায় হারিয়ে যাওয়া 'ডেনি লিন্ড'র। পাওয়া যায় কামান, নোঙর ইত্যাদির অবশেষ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ১৮৫০ সালের নেভিগেসন চার্টে ওই প্রবাল প্রাচীরটির উল্লেখ ছিল না। সেই কারণেই ডুবে গিয়েছিল 'জেনি লিন্ড'।
আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গবেষক দলের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে আরো জাহাজের অবশেষ থাকতে পারে। কারণ ১৯ শতকে কেন রিফ নাবিক মহলে ছিল দুর্ঘটনার জন্য কুখ্যাত। 'জেনি লিন্ড'র ব্যাপারে সন্ধান জারি রয়েছে এখনো। পাওয়া যাচ্ছে নিত্য নতুন তথ্যও।
বিডি প্রতিদিন/১০ জুন ২০১৭/আরাফাত