ধনী ও আর দরিদ্রের মহামিলন এর চেয়ে ভালো হয়তো হয় না। ইরানের বংশোদ্ভূত নাজানিন জাফারিয়ান ঘাইসারিফা (২৮)। বেড়ে উঠেছেন ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারে। ছোটবেলায় তার বাবা মায়ের বিচ্ছেদ হয়। ঋণের কারণে তার মা নওশিনকে ২০১৪ সালে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি ব্রিটেনের একটি রাজপ্রাসাদে নাজানিনেরর বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চোখ ধাঁধানো সেই বিয়েতে খরচ হয়েছে মোট ৫০ লাখ পাউন্ড!
দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠায় স্বাভাবিকভাবেই অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে নাজানিনকে। এর মধ্য দিয়েও ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োমেডিক্যাল বায়োইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়েছেন। আইন নিয়ে স্নাতক করেছেন। মডেলিং করেছেন। বিজ্ঞাপন পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। নাজানিন জাফারিয়ান ঘাইসারিফা গত নভেম্বরে নাইজেরিয়ার লাগোসে বিয়ে করেন।
নাজানিনের স্বামী এই মুহূর্তের বিশ্বে সবচেয়ে ধনী কৃষ্ণাঙ্গ নারী ফোলোরানশো আলাকিজার সন্তান ফোলারিন। তিনি পেশায় উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও চিত্রগ্রাহক। বন্ধুদের মাধ্যমেই ফোলারিনের সঙ্গে পরিচয় হয় নাজানিনের। ফোলারিনের প্রথম স্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ওই সংসারে এক সন্তান আছে তার। গত বছর নাজানিনের সঙ্গে ফোলারিনের বাগদান হয়। এরপর গত নভেম্বরে নাইজেরিয়ায় তাদের স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী বিয়ে হয়।
নাজানিনের বিয়ে উপলক্ষ্যে গত সপ্তাহে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের ওডস্টকে অবস্থিত ব্লেনহেইম প্রাসাদে সম্প্রতি বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একসময় এ প্রাসাদে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার উইন্সটন চার্চিল থেকেছেন। বিয়ের জন্য ৩০ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে পুরো প্রাসাদটিই ভাড়া করা হয়।
প্রাসাদটি সাজানো হয় সাদা রঙের গোলাপ ও অর্কিড ফুল দিয়ে। ফুলের মধ্যে গোলাপই ছিল ১০ লাখ। ফুলের পেছনে মোট খরচ করা হয়েছে দুই লাখ পাউন্ড। এর মধ্য দিয়েই সহজেই বোঝা সম্ভয় বিয়েটা কেমন রাজকীয় ছিল। ৩০ সদস্যের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে পুরো প্রাসাদটি ফুল দিয়ে সাজান জেফ লেথাম। এ জন্য তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে নিয়েছেন আড়াই লাখ পাউন্ড।
বিয়ের ১২ ফুট লম্বা কেকটি অর্ডার করা হয়েছিল বিখ্যাত এলিজাবেথ কেক এমপোরিয়াম থেকে। বিয়ের জন্য পরে সেটি শত শত গোলাপ দিয়ে সাজানো হয়েছিল। আড়ম্বরপূর্ণভোজ পর্ব শেষে অতিথিরা মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী রবিন থিকের পরিবেশনা উপভোগ করেন। দেড় লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে আমেরিকা থেকে নিয়ে আসা হয় ওই শিল্পীকে। বিয়ের সন্ধ্যাটি শেষ হয় প্রাসাদ প্রাঙ্গনে ঝমকালো আতশবাজির মাধ্যমে।
(ডেইলি মেইল ও মিরর অবলম্বনে ফারজানা আক্তার)
বিডি প্রতিদিন/১৪ জুন, ২০১৭