ইনস্টাগ্রাম ও টিকটক স্ক্রল করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করছেন? এমন হলে আপনি হয়তো ভুগছেন, ‘ব্রেইন রট’-এ। এটিকেই এ বছরের সেরা শব্দ হিসেবে নির্বাচিত করেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (ওইউপি)।
এটি এমন এক শব্দ যা প্রচুর সংখ্যক নিম্নমানের অনলাইন কনটেন্ট দেখার উদ্বেগ প্রকাশ করে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শব্দটির ব্যবহারের মাত্রা অন্তত ২৩০ শতাংশ বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
মনোবিজ্ঞানী ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যান্ড্রু প্রজিবিলস্কি বলেছেন, “আমরা যে সময়ের মধ্যে বাস করছি তারই লক্ষণ এ শব্দের জনপ্রিয়তা।” ‘ডেমিওর’, ‘রোমান্টাসি’ এবং ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’সহ ওইউপি’র সংক্ষিপ্ত তালিকায় আরও পাঁচটি বাক্যাংশ বা শব্দকে হারিয়েছে ‘ব্রেইন রট’।
ব্রেইন রট আসলে কী?
একজন ব্যক্তির মানসিক বা বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থার অনুমানযোগ্য অবনতিকে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে ‘ব্রেইন রট’ বলে। বিশেষত তুচ্ছ বা চ্যালেঞ্জিং নয় এমন কনটেন্টে অত্যধিক যুক্ত থাকার ফলাফল হিসাবে দেখা হয় ব্রেইন রট-কে। এ শব্দ প্রথম লেখা হয় ইন্টারনেট তৈরির বহু আগেই। ১৮৫৪ সালে প্রথম হেনরি ডেভিড থোরো তার বই ‘ওয়াল্ডেন’-এ শব্দটি লিখেছিলেন।
সমাজের জটিল ধারণাকে অবমূল্যায়নের প্রবণতা এবং কীভাবে এটি মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থার পতনের অংশ তা নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি। “ইংল্যান্ড যখন আলুর পচন ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন ব্রেইন রট (মস্তিষ্কের পচন) নিরাময়ের কোনো প্রচেষ্টা হবে না - যা এত ব্যাপক ও গভীরভাবে রয়েছে?” – নিজের বইতে লেখেন থোরো। এ শব্দটি প্রথমে ‘জেন জি’ ও ‘জেন আলফা’ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় হয়। পরবর্তীতে মূলধারার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিম্ন মানের কনটেন্ট বর্ণনা করার জন্য ব্যবহার হতে থাকে এটি।
“আদতেই মস্তিষ্ক পচে যাওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।” -বলেছেন প্রফেসর প্রজিবিলস্কি। তিনি জানান, “এর পরিবর্তে এটি অনলাইন জগতের প্রতি আমাদের অতৃপ্তিকেই বর্ণনা করে। এর ব্যবহারে আমরা সোশাল মিডিয়া সংশ্লিষ্ট উদ্বেগগুলো এক শব্দে প্রকাশ করতে পারছি।”
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ