চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নিবার্চনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষনা করা হলেও এখনও চূড়ান্ত করেনি জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীতা। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম ঢাকায় অবস্থান করছেন। এতে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মো. এরশাদ ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপিসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করে নিজ নিজ যোগ্যতা উপস্থাপন করে মনোনয়নপত্র নিশ্চিত করতে নানাবিধ কৌশলে লবিং ও তদবিরও করছেন তারা। এরই মধ্যে নিবার্চনে অংশ নিতে সোলায়মান আলম শেঠ মনোনয়ন পত্রও সংগ্রহ করেছেন। তবে মেয়র পদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীদের নামের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে গত শুক্রবার আওয়ামীলীগের দলীয়ভাবে চট্টগ্রামের মেয়র পদে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে মনোনয়ন ঘোষণা করেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান আহমেদ জুয়েল বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন (চসিক) নিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে এখনও কাউকে মনোনয়ন চুড়ান্ত করেনি। দলের চেয়ারম্যানসহ শীর্ষ নেতারা আলোচনা করেই নিশ্চিত করবেন কে এবং কারা কাউন্সিলর পদে নিবার্চর করবেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মনোনয়নপত্র নিয়ে শনিবার সকালেই ঢাকায় এসেছি। দলের চেয়ারম্যান-মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের সাথে আলোচনা করবো। এতে আশা করছি, আমাকেই দল মনোনয়ন দিবে। চট্টগ্রামের সাধারণ ভোটার গ্রহণ যোগ্য প্রার্থী বিবেচনা করে ভোটে নির্বাচিত করবেন। তবে আমি কথায় নয়, কাছে বিশ্বাসী। দল থেকে মনোনয়ন ফেলেও সম্বিলিত সচেতন নাগরিক পরিষদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলীয় নেতা-কর্মী জানান, জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান শেঠ ও মোরশেদ মুরাদের বিষয়ে নানাবিধ প্রশ্ন উঠেছে। এতে মোরশেদ মুরাদ চট্টগ্রাম চেম্বার নিবার্চনের সময় আর্থিক অনিয়ম, দলীয় কর্মসূচিতে সময় না দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠে। একই সাথে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে সোলায়মান শেঠকে বহিষ্কার করে আবার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারও করেছেন দলের চেয়ারম্যান। তবে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে থেকে দলকে সোলায়মান শেঠ এগিয়ে নিয়ে গেলেও মোরশেদ মুরাদ ড্রয়িংরুমের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তবে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিমকে একাধিবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এতে তার স্ত্রী মেহজাবিন মোরশেদ ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানান (প্রতিবেদক)।
জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মেহজাবিন মোরশেদ এমপি বলেন, দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা নিয়ে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন এবং তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই ঢাকা থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সোলায়মান আলম শেঠকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করায় তার (শেঠ) অনুসারীরা অনেকটা নড়েচড়ে বসেছেন। এদের মধ্যেও শেঠ অনুসারীরা কাউন্সিল পদে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই। একাধিক ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী সংকট দেখা দিলেও কোন কোন ওয়ার্ডে প্রার্থীতা নিয়ে সোলায়মান শেঠ ও দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ মুরাদ অনুসারীদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দলের আশঙ্কাও রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ মার্চ, ২০১৫/ রশিদা