শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য চাই আধুনিক যুগের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা। আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই সঙ্গে আমরা চাই নতুন প্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধের জাগরণ, সততা, নিষ্ঠা, জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্বশীল এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ পরিপূর্ণ মানুষ তৈরি করাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। ’ আজ বিকালে গাজীপুরে বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নুরুলল ইসলাম নাহিদ আরো বলেন, 'আমাদের উচ্চশিক্ষার সঠিক মান অব্যাহতভাবে উন্নত করতে হবে। এজন্য আধুনিক সিলেবাস ও মানসম্মত পাঠদান পদ্ধতি অব্যাহতভাবে উন্নত করতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হবে জ্ঞানচর্চার গবেষণা, নতুন জ্ঞান অনুসন্ধানের কেন্দ্র। সকল বিষয়ে গবেষণা ও গুণগত মান উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিশ্বের সকল বিশ্ববিদ্যলয়ের সঙ্গে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সরাসরি যোগাযোগ নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সরকার নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।'
গাজীপুর ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হমিদের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল সলাম নাহিদ এমপি সভাপতিত্ব করেন এবং গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবুল হোসেন আহমেদ ভুঁইয়ার পরিচালনায় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ মাননান। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন।
মন্ত্রী বলেন, 'উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম একটি বৃহৎ ও বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও দূরশিক্ষণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতির অন্যতম মাধ্যম। এই বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজটহীনভাবে কোর্স ক্রেডিট পদ্ধতিতে শিক্ষাদান অব্যাহত রাখছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে যারা বঞ্চিত তারা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদের কাজে লাগাচ্ছেন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।'
সমাবর্তন বক্তা ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, 'বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা, মানবিক বিকাশ, গণতান্ত্রিক চেতনার স্ফ’রণ ও সংস্কৃতির মুক্ত আঙ্গিনা বিশ্ববিদ্যালয়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-লার্নিং, ভার্চুয়াল লার্নিং ও ব্লেন্ডেড এডুকেশনসহ শিক্ষার নানাবিধ প্রযুক্তির কৌশল ব্যবহার করে এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে মধ্য ভার্চুয়াল ইউনিভাির্সিটিতে রূপান্তর করতে হবে।'
বাউবি কর্তৃপক্ষ জানায়, উন্মুক্ত এবং দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের জন্য দেশের একমাত্র এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭ হাজার গ্রাজুয়েট প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদেরকে এ সমাবর্তনে সনদ প্রদান করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ এপ্রিল ২০১৫/শরীফ