বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সংযোগ মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ট্রাকের সঙ্গে দুটি যাত্রীবাহী বাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪৭ জন। এদের মধ্যে ২৫/৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার সীমান্ত বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের মধ্যে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গাছাবাড়ী গ্রামের মফিজ উদ্দিনের আসাদুল (২২) নামে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকীদের পরিচয় না পাওয়া গেলেও তাদের বয়স ২৫-৫০ এর মধ্যে হবে।
আহতরা হলেন- গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার সাইফুর রহমান (৩০), আনিসুর (২০), সবুজ (১৮), কচুয়া গ্রামের চেন্টু সেখের ছেলে রেজাউল (৪০), পলাশপুর উপজেলার জামালপুর গ্রামের শাহ আলম (৩৫), জয়পুরহাট জেলার কালাই থানার মাতরাই গ্রামের রুহুল আমিন (৩১), কায়ছার (৪২), তৈয়বুর (৩৫), জবিপুর গ্রামের লিটন (২৫), জিগালা উত্তরপাড়া গ্রামের বেলাল (৩০), বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার আড়িমহন গ্রামের আলম, খড়গাড়া গ্রামের আ. হালিম (১৭) ও কাহালু উপজেলার গোয়ালিয়া গ্রামের এনামুলের (২৪)। বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মহাসড়কের দায়িত্বরত সার্জেন্ট রাকিবুল হাসান ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী একটি ট্রাকের চাকা পাঙচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিক আসা অন্তর পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। একই সময়ে নাবিল এন্টার প্রাইজের অপর একটি কোচ পিছন থেকে অন্তর পরিবহনের বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাক চালকসহ ২ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অন্তত ৫০ জন। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও ৪ জন এবং ভর্তির পর আরও ৪ জন মারা যায়।
সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আহমেদ জানান, দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে আনার আগেই ৬ জন মারা যায়। গুরুত্বর অবস্থায় ৫১ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ জন মারা যায়। আহতদের মধ্যে ২৫-৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কজনক বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন, পুলিশ সুপার এস.এম. এমরান হোসেন ও সিভিল সার্জন ডা. শামসুদ্দিনসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মর্তারা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং হতাহতদের খোঁজ খবর নেন।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনা কবলিত অন্তর পরিবহন বাস ও ট্রাকটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। দুর্ঘটনার পর সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের কড্ডার মোড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত সাময়িক যানজট দেখা দিলেও পরে তা স্বাভাবিক হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহায়তায় যানবাহনগুলো উদ্ধার করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন জানান, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং নিহতদের আত্মীয় স্বজনদের সংবাদ দেয়া হচ্ছে। নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের পাশাপাশি বাড়িতে পৌছানো পর্যন্ত সব ধরনের খরচ জেলা প্রশাসন বহন করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ মে, ২০১৫/মাহবুব