আওয়ামী সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ঢাকা সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির তিন প্রশ্নেই খালেদা জিয়া কুপোকাত। প্রশ্ন শুনে উনি হতভম্ব। প্রশ্নের উত্তর দেবেন কি করে, উনিতো (খালেদা) সব কিছুর সঙ্গেই জড়িত আছেন। খালেদা গণতন্ত্রের বিরাট চোতা তুলে ধরেছিলেন। আর মোদি বলেছেন, ভারত সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ মৌলবাদের প্রশ্রয় দেয় না। তিনি বলেন, ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলো এক হতে পারলে আমরা কেন পারব না। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রাখতেই হবে। তিস্তা চুক্তি অবশ্যই হবে ইনশালাহ।
বর্তমানে উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রে পথে খালেদা জিয়া প্রধান বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা খালেদা জিয়ার আমদানি। এই রোহিঙ্গাদের দমনে প্রয়োজন পৃথক ট্রাইবুন্যাল করতে হবে। খালেদাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেওয়ারও দাবি জানান শেখ সেলিম।
রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ সেলিম বলেন, ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাসহ বেশ কিছু পত্রিকায় নরেন্দ্র মোদি-খালেদার বৈঠক নিয়ে খবর ছাপা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে মোদির তিন প্রশ্নে হতভম্ব খালেদা। এ সময় জাতীয় সংসদে তিনি প্রশ্ন তিনটি তুলে ধরে বলেন, প্রথম প্রশ্ন ছিল ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর বাংলাদেশ সফরে হরতাল দিয়েছিল কারা? খালেদা বলেছিলেন, বিএনপিসহ শরিক জোট। এরপর দ্বিতীয় প্রশ্ন করেছিলেন, ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কারা অস্ত্র পাচার করতে চেয়েছিল। সেটাতো আপনার প্রধানমন্ত্রীরত্বের সময়। আপনার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী জড়িত ছিলো। প্রশ্ন শুনে তো হতবম্ভ। একদম চুপ। তৃতীয় প্রশ্ন ছিল খাগড়াগড় নিয়ে। এর কোনটিরই উত্তর দিতে পারেননি খালেদা। দেবেন কি করে উনি (খালেদা) তো সব কিছুর সঙ্গেই জড়িত।
শেখ সেলিম খালেদা জিয়া উদ্দেশ্যে বলেন, এত আশা নিয়ে দেখা করলেন, আপনি তো কিছুই পেলেন না। তাহলে এত গুলো মানুষ মারলেন কেন? তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে গণতন্ত্রের বিরাট চোতা তুলে ধরেছিলেন। তিনি জবাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্সের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সন্ত্রাস, মৌলবাদ মানবতার শত্রু। আমরা এক সঙ্গে কাজ করব। বুঝার থাকলে ইশরাই কাফি। এ সময় তিনি বলেন, ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলো এক হতে পারলে আমরা কেনো পারব না। তিনি বলেন, এক গ্লাস পানি আনতে পারে না, আবার তিস্তা চুক্তির বিরোধীতা করে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রাখতেই হবে। তিস্তা চুক্তি অবশ্যই হবে ইনশালাহ।
শেখ সেলিম বলেন, বর্তমানে গণতন্ত্র বলেন, উন্নয়ন বলেন সবচেয়ে বড় বাধা খালেদা। নির্বাচন না করে তিনি ভুল করেছেন। সেখানে আমাদের কি করার আছে। উনি অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় আসতে চান। তিনি নাকি আপোষহীন নেত্রী। ক্ষমতা থেকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরেবন না! কি হয়েছে? অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আনার জন্য আন্দোলন করে সাধারণ মানুষের জীবন নষ্ট করেছেন। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য খালেদা জিয়া সালাহউদ্দিন গুমের নাটক করেছেন। সালাউদ্দিন কোথায় ছিলো, ইলিয়াছ আলী কোথায় আছে খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞাস করলেই পাওয়া যাবে। কারণ উনার গুমের রাজনীতি করার অভ্যাস রয়েছে। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় উনি নিজে গুম হয়েছিলেন, বিডিআর বিদ্রোহের সময় গুম হয়েছিলেন। তাই উনার গুম করার অভ্যাস আছে। তিনি বলেন, বাংলার মাটিতে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। জনগণকে আগামীতে চূড়ান্তভাবে তাকে প্রত্যাখান করার আহ্বান জানান তিনি। চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখান করে তাকে (খালেদা) পাকিস্তানে পাঠানোর কথাও বলেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জুন, ২০১৫/মাহবুব