গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার সব তথ্য আগেই পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ছিল বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রবিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত 'জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা' বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ''গুলশান হামলার আগে এ বিষয়ে সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে ছিল। গোয়েন্দা তথ্য ছিল, গুলশান এলাকায় কিছু একটা ঘটতে পারে। এ কারণে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। এর পেছনে কারা মদদ দিয়েছে, তা আমাদের জানা আছে। প্রস্তুতি থাকার কারণেই দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পেরেছে। ঘটনার তিন মিনিটের মাথায় আমাদের পুলিশ সদস্য এসআই ফারুক সেখানে যান। তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর কমিশনার জানতে পেরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। সেখানে হামলাকারীরা ভেতরে কী অবস্থায় ছিল, জিম্মিদের কী অবস্থায় রেখেছিল, তা জানার জন্য যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর আপনারা সবাই দেখেছেন, সেনাবহিনীর নেতৃত্বে দক্ষতার সঙ্গে ১৩ মিনিটের মাথায় আমাদের অভিযান সফল হয়।''
শোলাকিয়ার ঘটনায়ও আগাম তথ্য ছিল বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, গুলশান হামলায় নিহত ৫ হামলাকারীর মৃতদেহ তাদের পরিবারের কেউ নিতে আসেনি।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশানে একটি রেস্তোরায় ও ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এই হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিদের মধ্যে দুই তরুণ নিবরাস ইসলাম ও আবির রহমান বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। এছাড়া কয়েকবছর আগে থেকেই বিভিন্ন সময় জঙ্গি হামলায়ও এই বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রের নাম আলোচনায় আসে। অন্যদিকে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও জঙ্গিদের সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক প্রতিনিধি এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ''আজ আপনাদেরকে ডেকেছি কিভাবে দেশকে এই অবস্থা থেকে বের করে আনা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ করতে। ইতোমধ্যে সরকারের সব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আপনারাও সচেতন হয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়িয়েছেন, এ জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। অনেক আগে থেকেই আপনাদের প্রতি আমাদের এই আহ্বান ছিল। কিন্তু তখন এত সাড়া দেননি। এখন সাড়া দিয়েছেন কিন্তু একটু দেরি হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন আর কোনও জঙ্গি সন্ত্রাসীদের উৎপত্তি না হয়, সেদিকে আপনাদেরই খেয়াল রাখতে হবে।''
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ''আপনাদের সন্তানকে আপনারা সবসময় খেয়াল রাখবেন। তারা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে, সবকিছু তদারকি করবেন। তাদের ভেতরে সামাজিকতা, সচেতনতা সৃষ্টি করার দায়িত্ব আপনাদের।''
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ