সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়ে গেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনও কি ঐক্যের বাকি আছে? সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য তো হয়ে গেছে। যাদের নিয়ে ঐক্য হলে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ সম্ভব তাদের মধ্যে ঐক্য হয়ে গেছে। গ্রামে গ্রামে কমিটি হচ্ছে। সর্বস্তরের মানুষ সচেতন হয়ে উঠেছে।
অন্য দলগুলোর জাতীয় ঐক্যের আহ্বান নাকচ করে দিয়ে বরাবরের মতোই বলেছেন, তাদের কথা আলাদা। তারা একদিকে সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও পুড়িয়ে মানুষ হত্যার সঙ্গে জড়িত, অন্যদিকে আবার এসব মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের কথা বলে।
এ প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘সর্প হইয়া দংশন করবে আর ওঝা হইয়া ঝাড়বে...’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটরে ১১তম এশিয়া- ইউরোপ মিটিং (আসেম) সম্মেলনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
আসেম সম্মেলনে বিশ্বনেতারা বাংলাদেশ, তুরস্ক ও ফ্রান্স হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিয়ে তুরস্কের মানুষ আবারও প্রমাণ করেছে জনগণই সব ক্ষমতার উৎস।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। গুলশান হামলার বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের জানিয়েছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন আবারও না ঘটে, তার সব ব্যবস্থা বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছি। তিনি বলেন, গুলশান ঘটনায় জাইকার সহায়তা বা অন্য কোনও প্রকল্পে জাপানের অর্থ ছাড়ে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে জাপান সরকার জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনও ধরনের হামলার ঘটনায় বিশ্ব নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে বাংলাদেশের কোনও ঘটনা ঘটলে তা নেতিবাচকভাবে দেশের মিডিয়াই আগে তুলে ধরে। তারাই আগে সেই ঘটনার লাইভ করে দেখায় কোথায় লাশ পড়ে আছে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফলে বিশ্ব মিডিয়াগুলো সেগুলো প্রকাশ করে। এতে দোষটা কার সেটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই ক্ষমতায় এসে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেছে। আর অন্যরা নিজেদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে কাজ করেছে। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।
পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা মানুষের জন্য পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে। সাংবাদিকরা সেটা কখনও লেখেননি। কিন্তু আমি তখন থেকেই এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। কারণ আমি চ্যালেঞ্জ নিতে জানি। আমরা এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। যা তারা কখনও চিন্তা করেনি।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ