ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে নিখোঁজের তালিকা। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী ঢাকাসহ ৫০ জেলায় এই তালিকা গিয়ে ঠেকেছে ২৬২ জনে। গোয়েন্দারা বলছেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তাদের অনেকেই জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়েছেন। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনার পর সারা দেশে বিশেষ অভিযানে নেমে এমন তথ্য পায় গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দারা বলছেন, গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গিরা বেশ কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজ তালিকায় থাকা যুবকদের একটি বড় অংশ এরই মধ্যে দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছে বলে ধারণা তাদের। তবে তাদের কেউ কেউ দেশেই অবস্থান করছেন। সব ক্ষেত্রে নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ না করায় সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হচ্ছে। এরই মধ্যে র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়েছে এমন যুবক সঠিক পথে ফিরে এলে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। নিখোঁজ তালিকার ১৯৫ নম্বরে থাকা শেহজাদ রউফ ওরফে অর্ক যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী পাসপোর্ট নম্বর-৪৭৬১৪৫৯৯২)। বাসা বারিধারা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বাবা তৌহিদ রউফ ক্যান্টনমেন্টের তালিকাভুক্ত সরবরাহকারী। গুলশান হামলায় নিহত নিবরাস ইসলামের বন্ধু। এক সময় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন অর্ক। ড্রামার হিসেবেও খ্যাতি ছিল তার। তিন বছর আগে তার মা মারা যাওয়ার পর থেকে অনেকটা চুপচাপ হয়ে যান অর্ক।
তালিকার ১৯৮ নম্বরে থাকা তাওসীফ হোসেনের বাবা ডা. আজমল হোসেন। রাজধানীর বিভিন্ন খ্যাতনামা হাসপাতালে চাকরি করলেও বর্তমানে ছেলের শোকে সারাক্ষণ বাসাতেই থাকেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার এক ছেলে দুই মেয়ে। মালয়েশিয়াতে লেখাপড়া করত তাওসীফ। দেশে তার খুব একটা বন্ধু-বান্ধব ছিল না। তাওসীফের ব্যাপারে র্যাব-পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আমরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেছি। নিবরাস নিখোঁজের দিন থেকেই নিখোঁজ রয়েছে তাওসীফ। এদিকে নিখোঁজদের মধ্যে কারা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। ঢাকার গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর থেকে পুলিশ সদর দফতর থেকে সারা দেশে নিখোঁজ যুবক বিশেষ করে যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় পরিবার থেকে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন রয়েছে তাদের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। গ্রাম-উপজেলা-জেলা ও মহানগর এলাকার নিখোঁজদের বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশে জঙ্গিদের অবস্থান বেশি সেসব দেশে যেসব যুবক আগে থেকে অবস্থান করছে তাদের পরিবারের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত নিচ্ছে জেলা পর্যায়ের গোয়েন্দা পুলিশ। প্রাথমিক তদন্ত শেষে সন্দেহভাজন যুবকদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে ইমিগ্রেশন বিভাগের ডাটাবেজ থেকে।
এদের সবার নাম ও জেলা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হল: ধুনটের মো. সাইদুল ইসলাম, মিরপুরের ফারহান হোসেন, মগড়াইগ্রামের ওমর ফারুক, পার্বতীপুরের রেজত রানা ফারুক সজল, ঝালকাঠির মো. মামুন হোসেন রায়হান হোসেন, মির্জাগঞ্জের বাদল, ইটবাড়িয়ার মো. মুসা গাজী, আমিনপুরের মো. বাদল মিয়া, মনিরামযুথের মো. আজাদ হোসেন, গাইবান্ধার মো. সোহেল রানা, বগুড়ার সুজন, সাতক্ষীরার রওশন আলী কাজী, নোয়াখালীর মো. ফিরোজ মিয়া ব্যাপারী, ঝালকাঠির মো. জাহাঙ্গীর আলম, আশুলিয়ার আমান উল্লাহ আশিক, মানিকগঞ্জের মো. ইউসুফ আলী, কুড়িগ্রামের মো. আসাদুজ্জামান, কুমিল্লার মো. মেহেদী হাসান, রাজলক্ষ্মীর মো. শামীম রেজা, ঢাকার মো. রিহাব, ঢাকার মো. রিয়াদ, ঢাকার রোমিও, ঢাকার সাগর, গ্রীনরোডের তেহজীব করিম, বাড্ডার মো. সাব্বির হোসেন শুভ, ভাটারার মো. সাজাদ রউফ, আদাবরের মো. মাহমুদুল আহসান রাতুল, যশোরের রাহাত বিন আবদুল্লাহ, বি-বাড়িয়ার মো. ফিরোজ মিয়া, অজ্ঞাত সোহাগ মিয়া, খুলনার সাব্বির, কলাবাগানের মাহমুদুল রহমান কাজল, কক্সবাজারের আদনান, হবিগঞ্জের মো. মঈন উদ্দিন, বরিশালের মো. জুবায়ের হোসেন ফারুক, কুমিল্লার মো. জুয়েল, কুমিল্লার সিরাজুল ইসলাম, ফেনীর মোক্তার আহম্মেদ মাকসুদুর রহমান, উল্লাপাড়ার মো. রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের মো. মঞ্জু, পিরোজপুরের বাবুল জমাদার, নোয়াখালীর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, নরসিংদীর কমর উদ্দিন, সিরাজগঞ্জের মো. হাবিবুর রহমান, কিশোরগঞ্জের হাফেজ মো. আতিকুর রহমান, শাহজাহানপুরের সাইফুল ইসলাম শাকিল, নড়াইলের বেলাল মোল্যা, খিলগাঁওয়ের ওমর হাসান বাবু ওরফে শাহ জালাল, বনশ্রীর মো. আনিস হাওলাদার, ভুইয়াপাড়ার মো. রাসেল, চাঁদপুরের ছানাউল্যা, কুমিল্লার এসএম তাহসান, মগবাজারের মো. সিদ্দিক আলী, কুমিল্লার মো. জাহাঙ্গীর আলম, নারায়ণগঞ্জের মো. ইমরান, শিবগঞ্জের মো. বাদশা আলী, শিবগঞ্জের মো. সুমন, নাচোলের মো. মোস্তফা, চুয়াডাঙ্গার মো. সামসুল হক, ঝিনাইদহের মো. সোহেল, ঝিনাইদহের মো. মামুন রায়হান, ঝিনাইদহের মো. সোহেল রানা, তেঁতুলবাড়ীয়ার মো. দুরন্ত, ঝিনাইদহের মো. রাশেদুজ্জামান, ঝিনাইদহের মো. সজল খান, ঝিনাইদহের মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল, চরখাজুরার মো.ুাজেদুল হক, কালিগঞ্জের মো. আবু সাইদ, ঝিনাইদহের মো. হাসান আলী, মহেশপুরের মো. আ. সালাম, হরিণাকুণ্ডুর মো. আতিয়ার রহমান, শৈলকুপার মো. মাসুম আলী, ঝিনাইদহের মো. শফিকুল ইসলাম, সাতগাছির মো. মজিবর খা, ঝিনাইদহের মো. উজ্জ্বল হোসেন, শৈলকুপার মো. নাইম হোসেন, ঝিনাইদহের মো. ওয়াসিম আকরাম, ঝিনাইদহের মো. রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহের মো. রফিকুল ইসলাম, ঝিনাইদহের মো. তোতা, সাতক্ষীরার মো. রাশেদ গাজী, চুয়াডাঙ্গার মো. ফরহাদ হোসেন, চট্টগ্রামের শামছুল আলম বাবুল, চট্টগ্রামের আজিউর রহমান, চট্টগ্রামের সানাউল্ল্যাহ ইমতিয়াজ, কুমিল্লার আবদুর রহিম, চট্টগ্রামের মো. শাহজালাল শামীম, চট্টগ্রামের মো. মামুন, চট্টগ্রামের আবু তাহের, সাদুল্যাপুরের মো. মিন্টু মিয়া, ফেনীর মো. সাখাওয়াৎ, ফেনীর সাজ্জাদ হোসেন পারভেজ, মিরপুরের মনোয়ার হোসেন সবুজ, ফেনীর কাজি মহিবুল ইসলাম, ফেনীর ওমর ফারুক, কুমিল্লার মো. ইসাফিল, রাজশাহীর আশিক, ফেনীর রাশেদ, ফেনীর তাইফুল ইসলাম, ফেনীর রেজাউর রহমান রাজু, চট্টগ্রামের জানে আলম, চট্টগ্রামের আজিজুর রহমান, দেওয়ানহাটের ফরিদুল হক, কক্সবাজারের রাশেদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের মোজাফফর হোসেন বাবু, চট্টগ্রামের সুজন, চট্টগ্রামের জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রামের শাহজাহান, চট্টগ্রামের ফয়সাল, চট্টগ্রামের হাসান কাউসার, চট্টগ্রামের মিলাদ, চট্টগ্রামের ডাক্তার ইমরান হোসেন, চট্টগ্রামের আসিফ ইকবাল, কুমিল্লার মানিক হোসেন, ভোলার মো. সবুজ, নোয়াখালীর মো. জুয়েল, চট্টগ্রামের মো. আবু ছালেহ রাসেন, চট্টগ্রামের মো. রাজু, কুমিল্লার ওমর ফারুক, চট্টগ্রামের নুরুল হুদা, বি-বাড়িয়ার এনামুল হক সোহেল, ফেনীর মো. রিয়াজ, সিলেটের শামীম আহমদ, সিলেটের মো. তাজুল ইসলাম রুনেল, নারায়ণগঞ্জের মো. জাকির হোসেন, ঢাকার সাদমান হোসেন পাপন, মুন্সীগঞ্জের মো. মোতালেব হোসেন, কুষ্টিয়ার মো. মারজুক হায়দার জাহিন, কুষ্টিয়ার মো. মিন্টু শেখ বৈরাগী ওরফে মিন্টু খা, কুষ্টিয়ার মো. মহিদুল ইসলাম, পাবনার মো. রফিক মোল্যা, টাঙ্গাইলের মো. আব্দুল্লাহ, দিনাজপুরের একেএম সিয়াম, রংপুরের মো. শামীম মিয়া, রংপুরের শায়েস্তা খান, রংপুরের মো. রেজোয়ানুর রহমান, রংপুর সেনানিবাসের মো. সাঈদ হোসেন, রংপুরের সাব্বির আহাম্মেদ আনন্দ, রংপুরের মো. রেজাউল করিম, রংপুরের মো. ইকবাল হোসেন, রংপুরের মো. সাদ্দাম হোসেন, রংপুরের মো. নজরুল ইসলাম, হবিগঞ্জের মো. নাহিদুল ইসলাম ইমন, কিশোরগঞ্জের মো. রিপন মিয়া, কিশোরগঞ্জের মো. রহমত উল্লাহ, রায়পুরার শাহাজউদ্দিন, কিশোরগঞ্জের মো. আজিজুল হক, কিশোরগঞ্জের মো. নাহিদ ওরফে নিপু, কিশোরগঞ্জের মো. মান্নান, কিশোরগঞ্জের মামুন মিয়া, কিশোরগঞ্জের মো. কাউসার আহমেদ সৌরভ, কিশোরগঞ্জের আল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের মো. ছোবহান মিয়া, ঢাকা সেনানিবাসের আফিফ মানসিফ চৌধুরী, ঢাকার আহমেদ আজওয়াদ ইমতিয়াজ তালুকদার (অমি), ঢাকা সেনানিবাসের শামীম রেদওয়ান, ঢাকার জুনুন শিকদার, রাজবাড়ীর মো. শফিউল ইসলাম ওরফে প্রিন্স ওরফে কম্পিউটার নাইম, ঢাকার মইনউদ্দিন শরীফ, ফেনীর মো. রেদোয়ানুল আজাদ রানা, ঢাকার আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আব্দুল্লাহ, সিলেটের তামিম আহমেদ চৌধুরী, চট্টগ্রামের আসিফ আদনান, বি-বাড়িয়ার মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ওজাকি, গাজীপুরের মো. মুহিবুর রহমান, ঢাকার তাহমিদ রহমান সাফি, বনানীর তাউসিফ হোসেন, ঢাকার ডা. আরাফাত হোসেন তুষার/নাহিদ রেজা তুষার, চট্টগ্রামের মো. নিয়াজ মোর্শেদ রাজা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নজিবুল্লাহ আনসারী, ঢাকার মো. আশেকুর রহমান, ঢাকার শেহজাদ রউফ ওরফে অর্ক, ঢাকার তৌফিক হোসেন খান, ঢাকার ওয়াকি চৌধুরী, ঢাকার তাওসিফ হোসেন, বাড্ডার জুনায়েদ খান, ধানমণ্ডির জুবায়েদুর রহিম, লক্ষ্মীপুরের এটিএম তাজউদ্দিন, মিরপুরের আশরাফ মোহাম্মদ ইসলাম, কুমিল্লার মো. জহির ইসলাম চৌধুরী, কুমিল্লার আব্দুল্লাহ ইবনে সিরাজ, বরগুনার বেল্লাল হোসেন, ঝিনাইদহের বাপ্পি, নীলফামারীর মো. রহমতুল্লাহ, চট্টগ্রামের আসিফউদ্দৌলা আসিফ, রসুলপুরের আব্দুল্লাহ, ফেনীর মো. ফোরকান চৌধুরী, চাঁদপুরের সোহানুর রহমান, ফতুল্লার একেএম মেহেদী হাসান, বাহাদুরপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম, ঢাকার মো. জুলহাস শেখ, নীলফামারীর মো. রহমতুল্লাহ, কুষ্টিয়ার বাদল, চাঁদপুরের মোয়াজ্জেম হোসেন, ইন্দিরা রোডের মো. আবদুল হান্নান, কুড়িগ্রামের মফিজুর রহমান, শ্যামনগর গ্রামের মোসাজাদ হোসেন, কক্সবাজারের খাইরুল আমিন ওরফে পুতিক্যা, সিলেটের মো. ছাদিকুর রহমান জুবের, বাঁদুড়তলার মো. খোরশেদ আলম, জগন্নাথপুরের সৈয়দ জাহাঙ্গীর মিয়া, রসুলপুরের মো. আবির হোসেন, টাঙ্গাইলের মো. হৃদয়, মাদারীপুরের শাহিন, লালমনিরহাটের হাফিজ মাহমুদ মিলন, ফরিদপুরের মো. রবিউল, ফরিদপুরের মো. আল আমিন, চাঁদপুরের সাইফুল ইসলাম নোমান, ঝিনাইদহের ওয়াফিল, বাঁদুড়তলার মো. খোরশেদ আলম, কালুয়াখলার মো. ইমরুল, সিলেটের মো. ছাদিকুর রহমান জুবের, টেকনাফের মো. ইউসুফ, চাঁদপুরের সোহানুর রহমান, চাঁদপুরের মো. ইয়াসিন খান, মিরসরাইয়ের জরুল ইসলাম, যশোরের আমানউল্লাহ, যশোরের কামরুল জামান, যশোরের কামাল হোসেন, যশোরের সারাত আলী, যশোরের হাসানুর রহমান, যশোরের ইকবাল হোসেন, যশোরের তহিদুল ইসলাম, যশোরের পীর বক্স, যশোরের তপন, যশোরের শাহ আলম, যশোরের হাসান আলী, যশোরের ফারুক হোসেন, যশোরের সুমন হোসেন, যশোরের মাসুদুর রহমান, যাত্রাবাড়ীর আবু মুসা, ঢাকার মো. মোস্তাহার, যাত্রাবাড়ীর মো. হাবিবুলুল্লাহ, ঠাকুরগাঁওয়ের মো. নুরুজ্জামান আরিফ, ঠাকুরগাঁওয়ের মো. কামরুজ্জামান টুটুল, ঢাকার মোহাম্মদ বাসারুজ্জামান, ঢাকার ইব্রাহিম হাসান খান।
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ