নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করা ৩১ রাজনৈতিক দলের কাছে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি। আজ শনিবার কমিটির প্রথম বৈঠকে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে পাঁচটি করে নাম আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে এই নামগুলো থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ১০ জনের নাম পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির কাছে। তাদের মধ্যে থেকে নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপ্রধান।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দলগুলো থেকে নাম সংগ্রহের পাশাপাশি আগামী সোমবার সার্চ কমিটি রাষ্ট্রের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত গ্রহণ করবে। বিশিষ্ট নাগরিকরা হলেন সাবেক বিচারপতি আব্দুর রশিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম এ ফায়েজ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কাশেম ফজুলল হক ও সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সার্চ কমিটির সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে দুপুর ১টার দিকে ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ।
২০১২ সালের সার্চ কমিটি ২২ জানুয়ারি গঠনের পর ৭ ফেব্রুয়ারি ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে দিয়েছিল। তার মধ্য থেকে পাঁচ জনকে ৮ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপ্রধান। এদিকে নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ে রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের যে সার্চ কমিটি করেছেন ওই কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতিতে অন্তত একজন নারীসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। যাতে স্পষ্ট হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনাকারী সাংবিধানিক এই সংস্থাটিতে একজন নারীকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি।
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। সিইসি ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ অফিস করবেন বলে জানান বর্তমান ইসি ও এর সচিবালয়। তার পরই সাংবিধানিক সংস্থাটিতে দায়িত্ব নেবেন নতুন ব্যক্তিরা, যাদের অধীনে হবে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। সংবিধানে বলা আছে, একটি আইনের অধীনে তিনি এই নিয়োগ দেবেন। তবে চার যুগেও ওই আইনটি হয়নি। আগের রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। তাদের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে নিয়োগ দেন। অর্থাৎ সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন ঠিক করে দেবে না, তারা রাষ্ট্রপতিকে সহায়তা করতে কিছু নাম বাছাই করে দেবে।
সার্চ কমিটি যেভাবে লোক বাছাই করে : বিগত সার্চ কমিটি প্রথম সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ জমা দেওয়ার। পরে সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সব মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্যসচিবের নামের তালিকা কমিটির কাছে পাঠাতেও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বলা হয়। একইভাবে সুপ্রিম কোর্টের নিবন্ধককে অবসরপ্রাপ্ত জেলা বিচারকদের নামের তালিকা কমিটিতে পাঠানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া সার্চ কমিটির সদস্যরা নিজ বিবেচনায় যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সংগ্রহ করেন।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ