রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাংবাদিক বান্ধব মানুষ। বিশেষ করে সংসদ বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক। দীর্ঘদিন সংসদের স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার-এর দায়িত্ব পালন কালে এ সম্পর্ক গভীর হয় বেশী। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরও তিনি তাদের উপেক্ষা করেননি। তিনি যখনই সংসদ ভবনে এসেছেন একবার সাংবাদিক লাউঞ্জে এসে সাংবাদিকদের সাথে সত বিনিময় এখন রেওয়াজ হয়ে গেছে।
আজও বাজেট অধিবেশনের শুরুতে সাংবাদিকরে সাথে খোশ গল্পে মেতে ওঠেন স্বভাব সুলভভাবে। প্রায় ২১ মিনিট তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। কথা বলেন নানা বিষয়ে। তবে বেশির ভাগ কথাই ছিল হাওরাঞ্চলের মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ৭৪ বছরের এই জীবনে এমন আগাম বন্যা দেখিনি। ১৯২৯ সালে এ রকম আগাম বন্যা হয়েছিল। তিনি বলেন, প্রতিবছরই আগাম বন্যা হয় হাওরে। কিন্তু, এবারের আগাম বন্যাটা অনেক আগে হয়েছে। তাই মানুষের এতো দু:খ ও ক্ষয়ক্ষতি। এ সময় তিনি হাওরবাসীর জন্য সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। সংসদ ভবনের ছয় তলায় অধিবেশন কক্ষে রাষ্ট্রপতির বক্সে বসে অর্থমন্ত্রীর বাজেট উপস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নতুন অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন চলাকালে রাষ্ট্রপতি সংসদে আসবেন। আর সংসদে আসলে তিনি সাংবাদিক লাউঞ্জে আসবেন, এটা সবার জানা।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন সাংবাদিক লাউঞ্জে এসে রাষ্ট্রপতি আসার খবর নিশ্চিত করলেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অর্থাৎ দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে অধিবেশন কক্ষে রাষ্ট্রপতির বক্স থেকে সংসদ ভবনে নিজের চেম্বারে ফেরার সময় জাতীয় সংসদের ৭ম তলায় সাংবাদিক লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে খোঁজ-খবর নেন সাংবাদিকদের। জিজ্ঞেস করেন কেমন চলছে? কোনো সমস্যা আছে কিনা? সাংবাদিকদের সাথে ভাল মন্দ খোঁজ নেওয়ার নেওয়ার মাঝেই চেয়ারে বসেন।
হাওরের মানুষ তিনি। তাই হাওরের মানুষের দুর্দশার চিত্র উঠে আসে তার কথায়। এ সময় রাষ্ট্রপতির আত্মজীবনী লেখার প্রসঙ্গও চলে আসে আলোচনায়। তিনি বলেন, আত্মজীবনী লিখব, তবে প্রিয় লেখকই যে মরে গেছে। ২১ মিনিট সাংবাদিক লাউঞ্জে অবস্থান শেষে দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে সাংবাদিক লাউঞ্জ ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি।