বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একজন মুসলিম ধর্মপ্রাণ নারী হিসেবে ৩০-৩২ বছর ধরে শাড়ির উপরে চাদর অথবা ওড়না পরিধান করেন। তাকে চাদর অথবা ওড়না পরিধান করার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তাকে একরকম জোর করেই গাড়িতে উঠিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
দুই মাস কারাবন্দি থাকার পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়। হাসপাতালের উচ্চপর্যায়ের একটি মেডিকেল টিম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর দুপুর দেড়টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফের কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়ে বিকেলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন রিজভী। এ নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে বিএনপি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ হাসপাতালে আনার সময় সম্পূর্ণ অপ্রস্তুতভাবে আনা হয়েছে। কারাগারে তার কক্ষের কাছে গিয়ে বারবার তাগিদ দিতে থাকেন কর্মকর্তাসহ সাত-আটজন কারারক্ষী। একজন মুসলিম ধর্মপ্রাণ নারী হিসেবে ৩০-৩২ বছর ধরে তিনি (খালেদা জিয়া) শাড়ির ওপর চাদর অথবা ওড়না পরিধান করেন। এ সরকার এতো হীন মনোবৃত্তির যে একজন বয়স্ক নারী যিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাকে চাদর অথবা ওড়না পরিধান করার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তাকে একরকম জোর করেই গাড়িতে ওঠিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
পিজি (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালে ৫১২ নম্বর কক্ষে তাকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু চিকিৎসার নামে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রহসনেরই নামান্তর। কোনো চিকিৎসাই সেখানে তাকে দেওয়া হয়নি। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের কোনো পরামর্শের সুযোগ দেওয়া হয়নি। আইনেও আছে একজন বন্দি পূর্বে যেসব চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতেন কারাগারেও তাদের চিকিৎসা নিতে পারবেন।
রিজভী বলেন, গত পরশু দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়েছে যে খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের দ্বারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে প্রধান কারারক্ষকের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। অথচ এর কোনো প্রতিফলন আজকে দেখা যায়নি।
জিয়া ১৫-২০ বছর ধরে যে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের চিকিৎসা নিচ্ছেন অথচ চিকিৎসকদের চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। বেগম জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে-খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে গেলে সেখানে পরিবারের সদস্যদের পর্যন্ত দেখা করতে দেওয়া হয়নি।এসময় তিনি সরকারের এ বাতিকগ্রস্ত উদ্ভট আচরণের তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানান।
বিডি প্রতিদিন/০৭ এপ্রিল ২০১৮/আরাফাত