প্রতি ক্যান্টনমেন্টে একটি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড গঠন, বোর্ডকে ক্ষেত্রমতো সিটি কর্পোরেশন বা পৌর সভার সমমান প্রদান করে ‘ক্যান্টনমেন্ট আইন-২০১৮’ বিল পাস করেছে সংসদ।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্ব সংসদের ২১তম অধিবেশনে আজ সংসদীয় কমিটির সুপারিশকৃত আকারে কন্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন। এরআগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
নামকরণসহ সংসদীয় কমিটি বিলে যেসব সুপারিশ গৃহীত হয় তাতে বলা হয়েছে, এই আইন ক্যান্টমেন্ট আইন ২০১৮ নামে অবহিত হবে। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, প্রত্যেক ক্যান্টনমেন্টের জন্য একটি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড গঠন করতে পারবে। প্রত্যেক ক্যান্টন্টমেন্টে বোর্ডের জন্য একজন এক্সিকিউটিভ অফিসার থাকবেন। এছাড়া সরকার আবশ্যক মনে করলে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন নৌ ঘাঁটি বা বিমান ঘাঁটির জন্য বোর্ড গঠন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলি, প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাপেক্ষে উক্তরুপ বোর্ডের জন্যও প্রযোজ্য হবে।
বিলের ১৯ দফা পরিমার্জন করে বলা হয়েছে, কোনো ক্যান্টনমেন্ট বা তার অধিকাংশ অংশ কোনো সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার নির্ধারিত এলাকার মধ্যে অবস্থিত হলে বা কোনো ক্যান্টনমেন্ট যে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার নিকটতম ওই ক্যান্টনমেন্টের বোর্ড উক্ত সিটি কর্পোরেশনের অনুরুপ যথাক্রমে একটি সিটি কর্পোরেশন বা একটি পৌরসভা হিসেবে গণ্য হবে।
সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার অধীন এলাকায় নাগরিকগনকে যেরুপ পৌর সুবিধা দেয়া হয় ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড যতদূর সম্ভব সেরূপ সুবিধাদি কান্টনমেন্টের বাসিন্দাদের প্রদান করবে। ক্যান্টমেন্ট এলাকায় বসবাসের জন্য কর প্রযোজ্য হবে। কর আদায়ে ব্যর্থ হলে মালামাল ক্রোক করার ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। ক্যান্টনমেন্টের নিরাপত্তা বা অন্যবিধ প্রয়োজনে বোর্ড বা সামরিক কর্তৃপক্ষ সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ বা টহল দিতে পারবে। ক্যান্টনমেন্ট সীমানার বাহিরে সীমানার সন্নিহিত ১০০ মিটার এলাকাকে সংলগ্ন এলাকা হিসেবে গণ্য করা হইবে এবং উক্ত সংলগ্ন এলাকায় ৪০ ফুটের অধিক উচ্চতার কোনো ভবন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে নির্মাণ করা যাইবে না।
বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের বিধানাবলি লঙ্ঘন করে কোনো অপরাধ সংঘটিত করার কারণে ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য বিনা পরোয়ানায় কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। এছাড়া ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে অসামরিক পুলিশ কর্তৃক কোনো ব্যক্তিকে কোনো অভিযোগে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্টেশন কমান্ডারকে অবহিত করতে হবে বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্যান্টনমেন্ট এ্যাক্ট ১৯২৪ দ্বারা ক্যান্টনমেন্টসমূহের প্রশাসন পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশে প্রচলিত ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজি ভাষা প্রণীত আইনসমূহ বাংলায় ভাষান্তর সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং সময়ের ব্যাপ্ত পরিসরে পরিবর্তিত প্রেক্ষিত ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিদ্যমান ক্যান্টনমেন্ট এ্যাক্ট হালনাগাদ করে এই আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার