“জলবায়ু সৃষ্ট ঝুঁকি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানো এবং অভিযোজন এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আমরা যুবাদের আন্তনিহিত শক্তি, অভিযোজন ক্ষমতা, প্রবল আবেগ ও মানসিক বল অত্যাবশ্যক নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি- যাতে তারাই হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতা মোকাবেলায় নেতৃত্বদানকারী শক্তি”। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘যুব ২০৩০: তরুণদের জন্য এবং তরুণদের সাথে কাজ করছে’ শীর্ষক এক ইন্টারেক্টিভ রাউন্ড টেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার একথা বলেন বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল এমপি। ইভেন্টটির মডারেটর ছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিবের যুব বিষয়ক বিশেষ দূত জয়ত্মা উইক্রামানায়েকে।
ক্লাইমেট অ্যাকশন লক্ষসমূহ অর্জনে যুব ক্ষমতায়ন বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যাকশন এর লক্ষ্যসমূহ অর্জনের ক্ষেত্রে যুব ক্ষমতায়নে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। আশা করছি, পরবর্তী কয়েক দশকে আমরা জনসংখ্যার লাভ ঘরে তুলতে পারবো। কেননা আমাদের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ হচ্ছে যুব-সম্প্রদায়। আর যুব সম্প্রদায়ই হচ্ছে আমাদের দেশে সকল অর্জনে সম্মুখ শক্তি যারা এসডিজি’র বিভিন্ন অভিষ্ট বিশেষ করে অভিষ্ট-১৩: ক্লাইমেট অ্যাকশন বাস্তবায়নে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত”। ক্লাইমেট অ্যাকশন এর অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিট ২০১৯ জোটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে মর্মেও উল্লেখ করেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “দেশের নারী এবং যুব সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে সীমিত সম্পদ ও সামর্থ্য দিয়ে দীর্ঘ সময়ব্যাপী আমাদের সরকার দেশীয় অভিযোজন ও প্রশমন কৌশল বাস্তবায়ন করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্ব সতর্কতা ও জরুরি জানমাল স্থানান্তরের ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ও পরিক্ষীত দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশল বাস্তবায়নে আমাদের যুব সম্প্রদায় বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবীগণ হচ্ছে আশা সঞ্চয়কারী শক্তি। যুব-সম্পৃক্ত এ সকল উদ্যোগ প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।’’
সরেজমিনে ক্লাইমেট অ্যাকশন বাস্তবায়নে দায়িত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে যুব নেতৃত্বের কথা এবং দুর্যোগ প্রশমনে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুবাদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ১৫৫ মিলিয়ন মোবাইল ব্যবহারকারী এখন স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে। অধিকন্তু, যুব-ভিত্তিক ক্লাব, সংঘ ও সংস্থা যেমন ‘ওয়ার্কস ফর গ্রিন বাংলাদেশ’ ও ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ডেভেলপমেন্ট’সহ অনেক প্রতিষ্ঠান জলবায়ু বিষয়ে সরেজমিনে কাজ করছে। তারা গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস, সবুজ প্রযুক্তি ও সৌর শক্তির ব্যবহারের মত বিষয়গুলো নিয়ে র্যালি, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও সম্মেলনের আয়োজন করছে”।
উল্লেখ্য, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল এমপি জাতিসংঘের চলতি ‘২০১৯ ইকোসক ইয়ুথ ফোরাম’ -এ বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিডি-প্রতিদিন/১০ এপ্রিল, ২০১৯/মাহবুব