ঈদযাত্রার শেষ দিনেও শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে ট্রেন। রাজধানীর কমলাপুর থেকে প্রায় প্রতিটি ট্রেনকেই নির্ধারিত সময়ের পরে স্টেশন ছেড়ে যেতে দেখা যায়। এতে ঘরমুখো মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। কারও কারও তো বাড়ি পৌঁছে ঈদের নামাজ পড়া নিলেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই এমন চিত্র চোখে পড়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে।
এর আগে, গত শুক্রবার টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুতির ঘটনায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল চলাচল চলাচল শুরু হলেও পরবর্তীতে শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে ওই রুট ব্যবহার করা সব ট্রেন। গতকাল শনিবার ওই রুটের ট্রেন ১-১২ ঘণ্টা বিলম্বে কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায়।
স্টেশনে ট্রেনের শিডিউল তুলে ধরা ডিজিটাল মনিটর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি এখনো কমলাপুরেই আসেনি। প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে ট্রেনটির অবস্থান পাবনার চাটমহরে। আর বিলম্ব না হলে ঢাকা থেকে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে সুন্দরবনের।
প্রায় একই অবস্থা ঢাকা-রাজশাহী রুটের ধূমকেতু এক্সপ্রেসের। সকাল ৬টায় কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এখনো রাজশাহী থেকেই যাত্রা করেনি ট্রেনটি। জিপিএস ট্র্যাকিং বলছে, প্রায় ১০ ঘণ্টা দেরিতে আজ রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে ট্রেনটি। সেক্ষেত্রে সোমবার বাড়ি পৌঁছে ঈদের নামাজও মিস করতে পারেন ট্রেনের যাত্রীরা।
ঢাকা থেকে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ৩ ঘণ্টা দেরিতে দুপুর ১২টায় সেটির ছেড়ে যাওয়ার নতুন সময় দেখানো হচ্ছে।
অন্যদিকে ঢাকা থেকে চিলাহাটির উদ্দেশ্যে নীলসাগর এক্সপ্রেস কখন ছেড়ে যাবে তা এখনো জানে না স্টেশন কর্তৃপক্ষ। আর ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী ১০টার একতা এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা দেরিতে ১১টায় কমলাপুর ছেড়ে যাবে বলে।
তবে কিছু ট্রেন পূর্ব নির্ধারিত সময়ের স্বল্প বিলম্বে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়। সকাল পৌনে ৭টায় প্রায় আধা ঘণ্টা দেরিতে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় পারাবত এক্সপ্রেস। ৭টা ২ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় সোনারবাংলা এক্সপ্রেস। দেওয়ানগঞ্জগামী ভোর ৫টার ট্রেন ৫টা ৪৪ মিনিটে ছেড়ে যায় কমলাপুর থেকে।
ঈদের আগের দিনও ট্রেনের এমন শিডিউল বিপর্যয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ভোরের ট্রেন ধরতে স্টেশনে আসা যাত্রীদের অপেক্ষা যেন শেষই হচ্ছে না। নারী, শিশু দুর্ভোগ থেকে বাদ যাচ্ছেন না কেউই। ঈদের নামাজের জামাত আর কোরবানির মুহূর্তটিতে প্রিয়জনদের পাশে থাকতে পারবেন কিনা সেই আশঙ্কাও আছে অনেকের; বিশেষ করে রাজশাহীর ট্রেন ধূমকেতুর যাত্রীদের। এজন্র কেউ কেউ একে অন্যকে প্রশ্ন করছেন, ঈদের নামাজ ট্রেনে পড়ার কোনো ব্যবস্থা কি রাখা হয়?
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব