১৯ অক্টোবর, ২০১৯ ২১:৫১

বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রাষ্ট্রের বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে : সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রাষ্ট্রের বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে : সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

ফাইল ছবি

প্রফেসর ইমেরিটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ব্রিটিশ যুগ থেকে রাষ্ট্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। কেবল রাষ্ট্র নয়, জনগণের সঙ্গেও রাষ্ট্রের একটা বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই রাষ্ট্রকে বদলাতে হবে। আর বদলানোর জন্য জ্ঞানের প্রয়োজন। উত্তেজিত হয়ে, আবেগ দিয়ে রাষ্ট্রকে ছোট করা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র বদলায়নি।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে শনিবার ড. মীজানূর রহমান শেলীর স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

একাডেমিক প্রেস অ্যান্ড পাবলিশার্স লাইব্রেরি (এপিপিএল) এই স্মরণ সভার আয়োজন করে। সহযোগিতায় ছিল ড. মীজানূর রহমান শেলী পরিষদ। স্মৃতিচারণ করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দীন আহমদ, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল আহসান চৌধুরী, রাজনীতিবিদ মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, সাবেক এমপি আবু হেনা, ড. মীজানূর রহমান শেলীর ভাই মাহমুদুর রহমান টিপু প্রমুখ। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রফেসর রহিম বক্স তালুকদার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক এম এ হেনা।

প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ব্রিটিশের রাষ্ট্র, পাকিস্তানের রাষ্ট্র এবং এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই রাষ্ট্রকে চিনতে মীজানূর রহমান শেলীর কাজ আমাদের সাহায্য করে। কারণ রাষ্ট্রকে তিনি জানার চেষ্টা করেছিলেন, যা আমাদের জানতে সাহায্য করে। 

তিনি বলেন, আজ আমরা এই উপলব্ধিতে পৌঁছেছি যে, এই রাষ্ট্রকে বদলাতে হবে। এই বদলানো কথা দিয়ে, বক্তৃতা দিয়ে, উত্তেজনা প্রকাশ করে, হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে হয় না। আবেগ দিয়ে রাষ্ট্র ছোট হয়েছে। বড় রাষ্ট্র থেকে ছোট রাষ্ট্র হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের যন্ত্রগুলো বদলায়নি। সে বদলানোর ক্ষেত্রে জ্ঞানের আড়ষ্টতা আছে। রাষ্ট্রের গোটা ব্যবস্থা ও বৈরী সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমাদের বড় হতো হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

ড. মীজানূর রহমান শেলীর স্মৃতিচারণ করে ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ১৯৫৩ সাল থেকে আমাদের বন্ধুত্ব। শেলীর বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পড়াশোনা ছিল। সাহিত্য, সাধারণ জ্ঞান থেকে শুরু করে সে প্রচুর বই পড়ত স্কুল জীবন থেকেই। ফলে যে কোনো আড্ডায় যে কোনো বিষয় নিয়ে প্রাসঙ্গিক ঘটনা বলে মজা করতে পারতো। তার অভাব আমরা অনুভব করি।

অনুষ্ঠানে ড. মীজানূর রহমান শেলীর জীবনী তুলে ধরা বলা হয়, তিনি ছিলেন একাধারে পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা ছেড়ে ১৯৬৭ সালে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৮০ সালে সমাজকল্যাণ অধিদফতরের পরিচালক থাকা অবস্থায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন শেলী। তিনি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী ছিলেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. ফারস উদ্দীন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রকিবউদ্দীন আহম্মদ। 

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর