টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তৃণমূলে আইসিটি সেবা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব সিস্টেমস সায়েন্স (আইএসএস) এর মিলনায়তনে আয়োজিত ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর পার্লামেন্ট শীর্ষক সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
স্পিকার বলেন, উন্নয়নের ধারাকে টেকসই, গুণসমৃদ্ধ ও গতিশীল করতে নির্বাহী বিভাগ ও জাতীয় সংসদের কার্যক্রম তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক হওয়া বাঞ্ছনীয়। নির্বাহী বিভাগের পাশাপাশি সংসদ সদস্যগণের মাধ্যমে সারাদেশে আইসিটি ব্যবহার সমৃদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করার কার্যক্রম চলমান আছে। ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের আইসিটি সংক্রান্ত অগ্রগতি ব্যাখ্যা করে স্পিকার বলেন, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে আইসিটি’র ব্যবহার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থায়ী কমিটির সভা সংক্রান্ত কার্যক্রম এমআইএস এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদের নিজস্ব ডাটা সেন্টারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ কার্যক্রমকে আধুনিক করা হয়েছে। সংসদ সদস্যগণের পাশাপাশি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদেরও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন প্রদান করা হচ্ছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সরকারি সেবা প্রদান কার্যক্রমকে গতিশীল ও দক্ষ করার লক্ষ্যে এসব ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার প্রয়োজন। বাংলাদেশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ লক্ষে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনের কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু অবকাঠামো ও জনবল দিয়ে দক্ষ ও টেকসই সেবাদান প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকেই তথ্য-প্রযুক্তির প্রযোজ্য ক্ষেত্রের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। প্রশিক্ষণ প্রদান ও দক্ষতা বৃদ্ধি কার্যক্রমে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইএসএস এর সাথে তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার সংসদ সদস্যদের জন্য এমডিজি ট্র্যাকার এ্যাপ প্রবতর্ন করছে। এর মাধ্যমে সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের অগ্রগতি জানতে পারবেন। এ ট্র্যাকারে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ডাটা ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ ডাটা সংগ্রহের কাজটি আরও গতিশীল ও দক্ষ করার লক্ষ্যে প্রযুক্তির আইসিটি ব্যবহার জোরদার করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ডাটা সমন্বয়ও জরুরী।
স্পিকার বলেন, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিঙ্গাপুর সফরের সময় সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাথে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের একটি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়ে।এর ধারাবাহিকতায় প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে। আগামী বছর ঘোষিত মুজিববর্ষে জাতীয় সংসদ গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল ইত্যাদি ক্ষেত্রে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স এর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। তাই এসব নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট জনবলকে সর্বাধুনিক আইসিটি জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আইএসএস এর সিইও কং চান মেং, ইজিএল এর সেন্টার ডিরেক্টর অশোক কুমার, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. মেস্তাফিজুর রহমান, আইএসএস এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম