২৫ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:৫২

সংঘাত সংঘর্ষ বাড়ছে ইউপি নির্বাচনে

বেনাপোলে বোমা বিস্ফোরণে তিনজন আহত, ফরিদপুরে বাড়িঘর ভাঙচুর-লুটপাট

প্রতিদিন ডেস্ক

সংঘাত সংঘর্ষ বাড়ছে ইউপি নির্বাচনে

ইউপি নির্বাচন ঘিরে ফরিদপুরে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে ঘটছে হানাহানি, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট। সংঘাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। গত শনিবার থেকে গতকাল পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে, বেনাপোলে বোমা বানানোর সময় তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ফরিদপুরে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদেও একজন নিহত হয়েছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বেনাপোলে তিনজন গুরুতর আহত : যশোরের বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত এলাকার এক বাড়িতে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে তিন যুবক গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় গ্রামের মধ্যপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে আহতরা হলেন বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা (৩৫), জিয়াউর রহমানের ছেলে রাশেদ (৪০) ও একই এলাকার আবদুুর রাজ্জাকের ছেলে আশিকুর রহমান (৪২)। আহতদের মধ্যে রাশেদের ডান হাতের কব্জি উড়ে গেছে। সোহেল রানা ও আশিকুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সোহেল রানা দাবি করেন, তারা তিন বন্ধু রাত সাড়ে দশটার দিকে পুটখালী মধ্যপাড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন  সময় প্রতিপক্ষরা তাদের ওপর বোমা হামলা করে। এ সময় রাশেদের বাম হাতের কব্জি উড়ে যায়। তবে অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা বোমা তৈরি করছিলেন। এ সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে। বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান জানান, বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে কেউ থানায় মামলা করেনি।

ফরিদপুরে হামলা, ভাঙচুর : ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে মারিজ সিকদার (৩৫) নিহতের ঘটনায় গত শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা বলেন, পুলিশ বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আটটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের ৩৬টি গুলি ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসব ঘটনায় ১৫ জনকে আটক করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ১৫ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। যদুনন্দী ইউনিয়নের নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুর রব ও বিদ্রোহী প্রার্থী রফিক মোল্লার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে রফিকের সমর্থক মারিজ নিহত হন। আহত হন ২০ জন।
নিহতের ঘটনায় শনিবার রাতেই মামলা হয়েছে। মারিজের স্ত্রী জুঁই বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছেন, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে কীভাবে বাঁচব, বুঝে উঠতে পারছি না।’

সিলেটে সহিংসতা, আটক ১০ : সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক আলাউদ্দিন ওরফে আলাল (৪৫) হত্যার ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে। গত শনিবার রাতে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের আটক করে। তাদের মধ্যে আবদুল হামিদ নামে এক ইউপি সদস্যপ্রার্থীও আছেন। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বি এম আশরাফ উল্যাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ইউপি নির্বাচনে সদস্যপ্রার্থী গোলাম রব্বানী ও আবদুল হামিদের পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়। এর জের ধরে আলালের ওপর হামলা হয়েছে। তার বাড়ি জালালাবাদ ইউপির আলীনগর গ্রামে।

হামলায় বিদ্রোহী প্রার্থী আহত নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর :  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়ায় বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মারপিট ও নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। হামলার শিকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুদ রানা সুখন অভিযোগ করেন, কয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শনিবার বিকালে প্রচারণা শেষে সন্ধ্যায় সমর্থকদের নিয়ে তার কয়ড়া বাজারের নির্বাচনী অফিসে অবস্থান করছিলেন। এ সময় নৌকার প্রার্থী হেলাল উদ্দিন ও তার ২০-৩০ জন সমর্থক তার ওপর হামলা চালিয়ে অফিস ভাঙচুর করে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী হেলাল জানান, মনোনয়ন পেয়ে তার সমর্থকরা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি মাসুদ রানা সুখনের অফিসের সামনে গেলে তিনি মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যান। হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।

উল্লাপাড়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক জানান, কয়ড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী সুখনকে মারপিট ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর