বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের প্রকাশক এম.এন.এইচ. বুলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলায় শোন অ্যারেস্ট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ কে. এম. ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।
বনানী থানায় দায়ের হওয়া সিআইডির এক মামলায় গত ১৬ নভেম্বর জামিন চাইতে গেলে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদলাত। এরপর একই ঘটনায় দুদক মামলা দায়ের করে ব্যবসায়ী এম. এন. এইচ. বুলুকে শোন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে আদালত একই বিষয়ে একধিক মামলা থাকায় ব্যবসায়ী এম. এন. এইচ. বুলুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার শোন অ্যারেস্ট খারিজের নির্দেশ দেন।
আদালতে এম.এন.এইচ. বুলুর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী।
জানা গেছে, এম.এন.এইচ. বুলু বিএনএস গ্রুপ অব কোম্পানীজের চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি বিএনএস গ্রুপ এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক, চ্যানেল-২১ এর চেয়ারম্যান ও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিযুক্ত ছিলেন এবং স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার হিসাবে মালিকানা বিদ্যমান, প্রাইম এশিয়া ইনিভার্সিটি এবং অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকার একজন সম্মানিত ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য। ঢাকা শহরের প্রাণ কেন্দ্র গুলশান, বনানী ও উত্তরা এলাকায় ৩টি বাণিজ্যিক বহুতল ভবনের মালিক। বিএনএস গ্রুপ অব কোম্পানীজের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন শিল্প কারখানায় শত শত শ্রমিক কর্মচারী কর্মরত আছেন।
বনানী থানায় সিআইডি কর্তৃক একটি এজাহার দায়ের করা হয় যাতে ৩নং আসামি হিসাবে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর নাম এজাহারভুক্ত করা হয়। এজাহারে উল্লেখিত বিষয়ে কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নাই ব্যবসায়ী এম. এন. এইচ. বুলুর। ২০২০ সালে ১৩ আগস্ট এজাহারে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুকে উক্ত এজাহারে তাকে ৩নং আসামি উল্লেখ করা হয়। সিআইডি কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় আমির ফুড নামীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রফতানির বিপরীতে সরকারি প্রণোদনার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির হোসেন। তিনি ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর কোম্পানিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজ মালিকানায় প্রতিষ্ঠান খুলে উল্লেখিত কার্যকলাপ সম্পাদন করতে পারেন।
তৎকালীন সময়ে উক্ত আমীর হোসেন মিষ্টার একটি ব্যাংক হিসাব খোলার সময় ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর অজান্তে তাহার একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি সংগ্রহ করে উক্ত ব্যাংক হিসাবে নমিনি হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করে। যাহা ফলে রপ্তানির বিপরীতে আত্মসাৎকৃত অর্থের বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ইউনাইটেড কামর্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের গত ২০১৫ সালের ৪ মার্চ তারিখে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করে যাতে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুকে ৩নং আসামি হিসাবে উল্লেখ কর হয়।
উক্ত বিষয়ে জানার পর ইউনাইডে কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের নিকট উক্ত বিষয়ে অভিযোগ করেন এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের দালিলিক কাগজপত্রাদি যাচাই-বাছাই করে বনানী থানায় এক লিখিত পত্রের মারফতে অবহিত করে যে, তাহাদের দায়েরকৃত এজাহারের সহিত ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলু কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নাই এবং উক্ত এজাহার হইতে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলুর নাম বাতিল করার জন্য অবহিত করেন। যেহেতু উক্ত ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্তৃক উক্ত পত্র দাখিল এর পূর্বেই এজাহারটি বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত নং-১, ঢাকাতে প্রেরণ করা হয় সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী এম.এন.এইচ. বুলু উক্ত মামলা শুনানির জন্য বিচারকের সম্মুখীন হয় এবং বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালত নং-১ এর বিচারক উক্ত মামলার চার্জশিট শুনানি অন্তে তার রায় প্রকাশ করেন। যাতে তিনি উল্লেখ করেন “উক্ত পর্যালোচনায় দেখা যায় আসামি এম.এন.এইচ. বুলু অত্র মামলার ঘটনার সহিত মৌখিক বা দালিলিক কোন সম্পৃক্ততা নাই বিধায় তার পক্ষে দাখিলীয় অব্যাহতির আবেদন মঞ্জুর করা হলো এবং আসামি এম.এন.এইচ. বুলু-কে ফৌঃ কাঃ বিধির ২৪১(এ) ধারায় অব্যাহতি দেওয়া হলো।