ফি যেখানে ৬০০ টাকা, সেখানে ১৩ লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বাধ্য হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নিজের পোশাক কারখানার ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার কথা জানালেন খোদ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ নেতা এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তার অভিযোগ, ঢাকার আশপাশে ট্রেড লাইসেন্স নিতে লাখ লাখ টাকা দিতে হয়। আবার বন্ড লাইসেন্স নিতেও লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। সেই বন্ড লাইসেন্স নবায়নওে লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। আমাদের দাবি, ব্যবসার সকল প্রকার লাইসেন্সে ভোগান্তি কমাতে হবে। দেশে ব্যবসার খরচ কমাতে সনদ প্রাপ্তি ও নবায়নে জটিলতার অবসান চাই।
আজ মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে ‘প্রেজেন্ট সিচুয়্যেশন অফ দ্যা ওয়ান স্টপ সার্ভিস সিস্টেম অফ বিডা’ শীর্ষক সেমিনারে এ সব কথা বলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এফবিসিসিআই ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- বিডা যৌথভাবে আয়োজিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজুল ইসলাম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডার পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায়। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক মোঃ নাসের, সাবেক পরিচালক এস এম কামাল উদ্দীন, বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ, এফবিসিসিআইর উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মোঃ শহীদুল্লাহ, প্যানেল উপদেষ্টা ড. মোস্তফা আবিদ খান প্রমুখ।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সেবা গ্রহণের আহ্বান জানান। ওএসএসে অন্তর্ভুক্ত অন্য সংস্থাগুলোর সেবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না পেলে বিডাকে জানানোর অনুরোধও করেন তিনি। নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, কোন সংস্থা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা না দিলে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। এছাড়াও আইনটি বাস্তাবায়নে অর্থমন্ত্রীকে প্রধান করে একটি কমিটিও রয়েছে। কমিটিতে অন্যান্য মন্ত্রীরাও রয়েছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে প্রয়োজনে মন্ত্রীদের কাছে যাওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর নবায়ন করতে গিয়ে বাড়তি টাকা, সময় ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। একাধিক সংস্থার কাছ থেকে জটিল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সনদ সংগ্রহ পদ্ধতি ও বছর বছর নবায়ন প্রক্রিয়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
তিনি প্রতিবছর লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে সরকারি সংস্থাগুলো নিরীক্ষা পরিচালনা করে দেখতে পারে। ৮ থেকে ১০টি সংস্থার কাছ থেকে কারখানার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সনদ নিতে হয়। এসব সনদ একটি সংস্থার কাছ থেকে ইস্যু হওয়া উচিত।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন পুরো ইপিজেড বন্ডেড হলেও, এখানকার কারখানাগুলোকে বন্ড লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতির ওপর ভর করে বিদেশিরা এদেশের ইপিজেডে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু এমন পদক্ষেপে তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
ওই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বিডার পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় বলেন, বিডার ওএসএসে সেবা দিতে ৩৯টি সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আরো ১১টির সঙ্গে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বর্তমানে ৫৮ টি সেবা ওএসএসের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ১৮টি বিডার নিজস্ব সেবা, বাকিগুলো অন্যান্য সংস্থার।
বিডি প্রতিদিন/এএ