বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটল বৃহস্পতিবার। টাঙ্গাইল জেলার ১২ উপজেলায় এবার ১২৪৭ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজারীরা তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী অশ্রুসিক্ত হয়ে মা দুর্গার বিসর্জন দেন। জেলা সদর, কালিহাতী, মির্জাপুর, নাগরপুর ও মধুপুরে মহাসমারোহে বিসর্জন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
জেলার কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন দৌলতপুর খেলার মাঠে বৃহস্পতিবার হয়েছে প্রতিমা প্রদর্শনী ও সিঁদুর দান অনুষ্ঠান। একশ বছরের বেশি সময় হওয়া এ অনুষ্ঠানটি এলাকায় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে দেখা যায় শত বছরের পুরনো এ অনুষ্ঠানে আশেপাশের এলাকার মণ্ডপগুলোর দুর্গা প্রতিমা দর্শনার্থীদের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। নিকটবর্তী কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার দর্শনার্থী এখানে এসেছেন প্রতিমা দেখতে। হিন্দু নারীরা সিঁদুর, ধান, দুর্বা ও আলোকবাতি দিয়ে প্রতিমাগুলোয় ভক্তি প্রদর্শন করছেন। উলুধ্বনি আর ঢাকঢোলের বাজনার তালে তালে চলে নারী-পুরুষদের আরতি প্রদর্শন। পরে নারান্দিয়া, নগরবাড়ী ও দৌলতপুর গ্রামের প্রতিমাগুলো মাঠের পাশে লৌহজং নদীর জলে ডুবানো হয়। নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদ এবং পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কমিটি।
প্রতিমা প্রদর্শনীর মাঠে শুভেচ্ছা মঞ্চে বক্তব্য রাখেন নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ডা. আবু সাইম আল সালাউদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান মোহর আলী, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলাম শাহজাহান ও সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, নারান্দিয়া ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গুপিনাথ মোদক ও সাধারণ সম্পাদক রানা সরকার, ইউনিয়ন পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বাক মাধাই চন্দ্র দাস ও সদস্য সচিব শিবেশ চন্দ্র মোদক প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ করতে দায়িত্বপালন করেন পুলিশ, সেনাবাহিনী, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পূজারী, দর্শনার্থী ও আয়োজকরা।
এদিকে বিজয় দশমী উপলক্ষে নারান্দিয়ায় হয়ে থাকে তিন দিনব্যাপী দশমীর মেলা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে মেলাটি চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। মাঠে আসবাবপত্র, বাহারি খাবার, খেলনা, মাটির হাড়িপাতিল বিক্রির অসংখ্য দোকানপাট বসেছে। তিন দিনে কোটি টাকার কেনাবেচা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন