অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, ফয়জুলের উপর আমার কোনো রাগ নেই। কিন্তু, তার মতো যারা মনে করেন এ রকম করলে বেহেশতে যাবে, তাদের জন্য করুণা হয়।
মঙ্গলবার নিজের উপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল এক গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যাদের কথা শুনে তারা এরকম মনে করেন, তাদের প্রতি আমার ক্ষোভ আছে। যেহেতু তিনি একটা অপরাধ করেছেন, প্রচলিত আইনে তার সাজা হয়েছে। কিন্তু তার উপর ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো ক্ষোভ নেই।’
মঙ্গলবার ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলায় প্রধান আসামি ফয়জুল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়াকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে আদালত ফয়জুলকে ২০ হাজার টাকা এবং সোহাগকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া এ মামলা থেকে ফয়জুলের বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুর রহমান ও ভাই এনামুল হাসাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে বসা অধ্যাপক জাফর ইকবালকে পেছন থেকে মাথায় ছুরিকাঘাত করেন ফয়জুল হাসান।
হামলাকারী ফয়জুলকে তখনই আটক করেন উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষকরা। তারপর তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গুরুতর আহত অধ্যাপক জাফর ইকবালকে প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরবর্তীতে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরদিন শাবিপ্রবি’র রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে জালালাবাদ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।
তদন্ত শেষে সে বছর ৬ মে ফয়জুলকে প্রধান আসামি করে মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।
এরপর সে বছরের ৪ অক্টোবর ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। পরে ২০২০ সালে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে মামলাটি এই ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত