ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। শনিবার এক বিবৃতিতে ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, দুর্নীতি ও অপচয় রোধ না করেই আবারো ডিজেল, কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। যা শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হয়েছে। এতো বেশি মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী। হয়তো সরকারের ফের কোনো দুরভিসন্ধি আছে। দেশ যে শ্রীলঙ্কা তথা দেউলিয়াত্বের পথে যাচ্ছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
জ্বালানি তেলের রেকর্ড পরিমাণ দাম তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, বাজারে এখন ভোজ্যতেল সয়াবিনসহ চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, টুথপেস্টসহ প্রায় সব পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। এমতাবস্থায় জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে বড় সঙ্কটে ফেলবে। অথচ দুর্নীতি ও অপচয় বন্ধ করেও ঘাটতি সমন্বয় করা যেত। সরকার সেই পথে হাঁটেনি। জ্বালানি তেলের দাম গণশুনানি করে বাড়ালে তা সহনীয় থাকত। এখন মূল্যবৃদ্ধির যে ‘টর্নেডো’ চালিয়ে দেয়া হলো, তাতে জনগণ তথা ভোক্তার অধিকার তছনছ হয়ে গেছে।
ইউট্যাবের নেতৃদ্বয় বলেন, বিগত দুই বছর মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিশেষভাবে শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত গোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। অনেকের আয়ের পথ বন্ধ হয়েছে। অনেকেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামে গেছেন। এরইমধ্যে শুক্রবার জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি অতিপ্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য যেমন- পানি, চাল, ডাল, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে কয়েকগুণ। ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ এখন দিশেহারা।
তারা বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির খবরে মধ্যরাত হতেই দেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি ব্যবহারকারীদের ভিড় তৈরি হয় চোখে পড়ার মতো। এতে করে আরো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আসলে বাংলাদেশে বর্তমানে জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার না থাকায় হুটহাট নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে মানুষকে বিপদে ফেলা হচ্ছে। এর পেছনে ক্ষমতাসীন দলের লাগামহীন দুর্নীতিই দায়ী। তা না হলে এই সরকার মানুষের চরম দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতো। কিন্তু আমরা তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। এভাবে চলতে থাকলে ক্ষুব্ধ জনগণ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। তখন কিভাবে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিবে? সুতরাং অবিলম্বে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর আহ্বান জানান। অন্যথায় সরকারকে কঠোর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট এবং মহাসচিব।
বিডি প্রতিদিন/এএ