দেশের কৃষকরা কীটনাশক ব্যবহারের নীতিমালা অনুসরণ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন। এ কারণে দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যগুলোর মধ্যে ফল ও সবজিতে কীটনাশক ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি বলেও মনে করেন তিনি।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. রুহুল আমিন বলেন, দেশে উৎপাদিত কোনো খাদ্য কতটুকু নিরাপদ তাও জানা যায় না। এসব নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণাও হয় না।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএফএসএ এর সদস্য মাহমুদুল কবির মুরাদ ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. রুহুল আমিন। তিনি এ সময় আরও বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি গোলে খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাবারের ব্যাপারে বলা হয়েছে। আমাদের দেশে গ্রামের মানুষ ২৩.৮ ও শহরে ৩৮ শতাংশ ফল খেয়ে থাকে। বিভাগ অনুযায়ী হিসাব করলে খাদ্যে ফল গ্রহণের এই হার বরিশালে ৪০.২, চট্টগ্রামে ১৭.৩, ঢাকায় ২৬.৫, খুলনায় ২৬.২, ময়মনসিংহে ৩৫.৮, রাজশাহীতে ৪৮.৯, রংপুরে ৬০.১ ও সিলেটে ৪৫.৭ শতাংশ।
এদিকে খাদ্যে গরুর মাংস ও পোলট্রি মাংস গ্রহণের হার গ্রামের মানুষের মধ্যে ১৫.৭ শতাংশ ও শহরে ৩৩.১ শতাংশ এবং ডিম গ্রহণের হার গ্রামের মানুষের মধ্যে ১০.১, শহরের মানুষ ১৮.৯ শতাংশ। তা ছাড়া দেশে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। সেখানে ধনীদের এটি গ্রহণের হার ৭ শতাংশ ও গরিব মানুষের মাত্র ২ শতাংশ।
ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদেশে রপ্তানি করতে হলে নিরাপদ খাদ্য রপ্তানি করতে হবে। তা না হলে বিদেশিরা আমাদের পণ্য কিনবে না।
কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, সবজিতে কীটনাশক সরাতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে কিছুটা কমে। বেশি অনিরাপদ বা ক্ষতিকারক খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন কলিজা জাতীয় খাবার। এ খাবার পরিমাণে কত খেতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'খোলাবাজারে পণ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কঠিন। কেননা এটা তারা উৎপাদন করে না। তবে রেস্টুরেন্টে ভেজাল খাবার দেয় কিনা তা আমরা ধরে থাকি। আর ভেজাল পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ কাউকে ছাড় দেয় না। তা ছাড়া রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা আদালতের ওপর নির্ভর করতে হয়।' এদিকে কুষ্টিয়ায় মসলায় চক পাউডারের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমএস