ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনা এবং হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তার মতে, এই যুদ্ধ শুধু দুই দেশের জন্য নয় বরং পুরো অঞ্চল ও এর বাইরেও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। বর্তমান সংকট নিরসনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বিশ্বকে ভারতের আগ্রাসন সম্পর্কে জানাতে একটি উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বুধবার ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী এক হামলার ঘটনার পর দুই দেশ কীভাবে পারমাণবিক যুদ্ধের কাছাকাছি চলে যেতে পারে, তা আমরা দেখেছি। বিলাওয়াল ভুট্টো এই পরিস্থিতিকে ‘নতুন স্বাভাবিক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ভারতীয় প্রচেষ্টার কঠোর সমালোচনা করেন এবং এটিকে উভয় দেশের জন্য অকল্যাণকর বলে মন্তব্য করেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নির্দেশে গঠিত কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি নিজেই। এই দলে রয়েছেন সিনেটর শেরি রেহমান, ড. মুসাদিক মালিক, ইঞ্জিনিয়ার খুররম দস্তগীর, হিনা রাব্বানি খার, ফয়সাল সাবজওয়ারি, তেহমিনা জানজুয়া ও জলিল আব্বাস জিলানির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এই প্রতিনিধি দলের মূল উদ্দেশ্য হলো, বিশ্ব নেতাদের কাছে ভারতের আগ্রাসন এবং আঞ্চলিক শান্তি বিনষ্টের প্রচেষ্টার বিষয়ে পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থান তুলে ধরা।
ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক আলোচনা শেষে বিলাওয়াল ভুট্টো জানান, প্রতিনিধি দলটি যুদ্ধবিরতি, কাশ্মীর, সন্ত্রাসবাদ এবং সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রাথমিক ব্রিফিং পেয়েছে। আগামী দিনগুলোতে আরও ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে এবং এরপর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন দেশ সফর করবে।
সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, কাশ্মীর বিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ — যেকোনো উত্তেজনার মূল সংকটের সমাধান ছাড়া এই অঞ্চলে শান্তি আসতে পারে না। তিনি বলেন, পাকিস্তান শান্তি চায়। বিলাওয়াল ভুট্টো আরও উল্লেখ করেন যে, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের অন্যতম বৃহৎ ভুক্তভোগী। তার মতে, কাশ্মীর, সন্ত্রাসবাদ এবং পানি — এই তিনটি প্রধান সমস্যার সমাধান না হলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। তিনি সন্ত্রাসবাদ সংকটের সমাধানে উভয় দেশের মাঝে সংলাপের আয়োজন এবং সেখানে সমাধানের পথ খোঁজার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সূত্র: ডন
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল