বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোনো প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ করেনি বিশ্বব্যাংক : ইকবাল মাহমুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে কোনো প্রকল্পে দুর্নীতির ঘটনায় দুদকে কোনো অভিযোগও করেনি বিশ্বব্যাংক। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ল বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি পলিসি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মূল্যায়নে এমনটাই বলেছে। বাংলাদেশ সামাজিক খাতে এগিয়ে থাকলেও সরকারি খাতের দুর্নীতিতে পিছিয়ে পড়ছে। এমন তথ্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমান কমিশনের আড়াই বছরে সরকারি খাতে দুর্নীতি কমেছে। এ ছাড়া দুদক প্রতিরোধ ও পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে বিগত আড়াই বছরে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পত্রপত্রিকায় আমিও প্রতিবেদনটি দেখেছি। আমি বলতে চাই কেবল দুর্নীতি নিয়ে কাজ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবির ২০১৭ সালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ২৮ স্কোর পেয়েছে।

অর্থাৎ ২০০১ সাল থেকে টিআইবির এ ধারণা সূচকে বাংলাদেশের স্কোর পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ স্কোর ২৮ অর্জন করেছে। একই বছরে বিশ্বব্যাংক ও টিআইর (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল) মতো প্রতিষ্ঠানের জরিপের এ বৈপরীত্য অবাক করার মতোই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবকাঠামোসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বর্তমান কমিশন আড়াই বছরের নিরবচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ৬১৬ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন ২৭৮ জন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে প্রায় ৪৫% সরকারি কর্মকর্তা। এমনকি গত মঙ্গলবার দুজন সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে দুদক। একই সময়ে ৭ শতাধিক দুর্নীতির মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলার বেশির ভাগ আসামিই সরকারি কর্মকর্তা। অনুরূপভাবে ১ হাজার ২৪টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। কমিশনের মামলায় সাজার হার বৃদ্ধি পেয়ে ৬৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে কমিশন ৫২টি ফাঁদ মামলা পরিচালনা করে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুর্নীতিপরায়ণ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করেছে। ফলে ঘুষ গ্রহণের প্রবণতাও কমে আসছে। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে হাওরাঞ্চলের বাঁধ নির্মাণে এবার দুর্নীতির কোনো বিষয় কমিশনের গোচরে আসেনি। বিআরটিএ, পাসপোর্ট অধিদফতর, নৌপরিবহন অধিদফতরসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে কমিশনের ফাঁদসহ প্রতিরোধমূলক অভিযানে দুর্নীতির প্রবণতা অনেকটাই কমে এসেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বিলিং সিস্টেম, টেলিফোন, ওয়াসার বিলিং সিস্টেম অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজড হওয়ায় বিলিং সিস্টেমের হয়রানি-দুর্নীতি কমেছে। কমিশন অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন-১০৬-এর মাধ্যমে দুর্নীতি অথবা জনহয়রানির অভিযোগ পেলে তত্ক্ষণাৎ অভিযান পরিচালনা করছে। এ ছাড়া সরকারি অফিসগুলোর দুর্নীতি নিয়ে আগের মতো আর পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর