বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

পরিবর্তনের জন্য কথা বলে যেতে হবে : শাহদীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, কথা বললেই সবকিছু পরিবর্তন হওয়ার আশা ক্ষীণ হলেও আমাদের কথা বলে যেতে হবে।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘নির্যাতন রোধের দায়দায়িত্ব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি এর আয়োজন করে। সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম।

সভায় নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলেন পা হারানো মো. লিমন হোসেন, কোটা আন্দোলনে নির্যাতিত আতাউল্লাহ ও নাইম চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নারী অধিকার কর্মী শিরীন হক।

শাহদীন মালিক আরও বলেন, আমরা সবাই উন্নতি চাই, কিন্তু অধিকার না দিলে ২০৪১ কেন, ২০৬১ সালের মধ্যেও কোনো ধরনের উন্নতি সম্ভব নয়। প্রায় প্রতিদিন রিমান্ড দেওয়ার নাম করে ম্যাজিস্ট্রেট সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণœ করার নেপথ্যে কাজ করে চলেছেন। তিনি বলেন, কাউকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য জোর করা যাবে না। কারণ, এটি একটি সাংবিধানিক অধিকার। রিমান্ডের ফলে যা ব্যাপকহারে লঙ্ঘিত করছে আমাদের সংবিধান।

আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশ ২০১৩ সালে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ করার জন্য আইন করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ আইনে কারও শাস্তি হয়নি, এমনকি এ আইনে মামলা দিতে গেলেও নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। বিধানমতে ২১০ দিনের মধ্যে হেফাজতে মৃত্যুর বিচার সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এ আইনের অধীনে দায়েরকৃত প্রথম মামলাটিরই নিষ্পত্তি হয়নি গত পাঁচ বছরেও। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারার মামলায় গ্রেফতার ও পুলিশ রিমান্ডে নির্যাতন নিষিদ্ধ করাসংক্রান্ত নির্দেশনার পরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, নির্যাতন বন্ধের পাশাপাশি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার নিষ্ঠুর ও অমানবিক সাজার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। নিষ্ঠুর, অমানবিক সাজা এবং নির্যাতন বন্ধের বিরুদ্ধে সবাই মিলে সোচ্চার হয়ে আওয়াজ তোলার এখনই সময়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা একটি নির্যাতনমুক্ত দেশ পাব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় পা হারানোর মর্মান্তিক কাহিনি তুলে ধরেন লিমন হোসেন। তিনি বলেন, সবার দ্বারে দ্বারে গিয়েও সঠিক বিচার পাইনি। বরং বিচার চাইতে গিয়ে বিভিন্ন মামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

গুম হয়ে যাওয়ার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন নাইম চৌধুরী। তিনি জানান, ৫৩ দিনের জন্য গুম হয়েছিলেন তিনি। সম্পত্তি নিয়ে একটি দ্বন্দ্বের ফলে চোখ বেঁধে ৫৩ দিনের জন্য গুহার মতো একটি সেলে বন্দী করে রাখা হয়েছিল তাকে।

সর্বশেষ খবর