ব্যবসায়ীরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন না। এমনকি জ্বালানি সংযোগ পেতেও তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। গতকাল রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমস্যা সমাধানে আয়োজিত এক সেমিনারে ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ করেন। আর এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যা সমাধানে উচ্চপর্যায়ে কমিটি গঠনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আশ্বাস দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের (বিইপিআরসি) চেয়ারম্যান সুবীর কিশোর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ ও বিডার নেতারা।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের এ কমিটি গঠন করা হবে। আর দুই মাসের মধ্যে কমিটিকে সরকারের কাছে সুপারিশ উপস্থাপন করতে হবে। আট থেকে ১০ মাসের মধ্যে সরকার সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে। এতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে। বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। নসরুল হামিদ আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন যে তারা নিয়মিত গ্যাস পাচ্ছেন না, বিদ্যুৎ থাকছে না। কোনো কোনো এলাকায় দুই ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। সংযোগ পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকে। কমিটি এসব সমস্যা নিরসনে কাজ করবে। ২০১৪ সালে জ্বালানি সংকট বেশি ছিল। এখন কমে এসেছে। আমরা ২৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ দিতে চাই। এ জন্য কাজ করা হচ্ছে। তবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে গিয়ে আমরা আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রামে কিছু সমস্যা দেখছি। এতে এখন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার; যা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে অনেকখানি সহায়ক হবে। এ ছাড়া সরকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এতে দুই-তিন বছরের মধ্যে পরিস্থিতি বদলে যাবে। এখন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চার হাজার কোটি টাকার গ্যাসের বিল বকেয়া আছে। এ বকেয়া পরিশোধে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো আমাদের আশ্বস্ত করেছে বকেয়া বিল পরিশোধে তারা সহযোগিতা করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ক্যাপটিভ ব্যবসায়ীদের ক্যাপটিভের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। কো-জেনারেশন, ট্রাই জেনারেশন করতে হবে। প্রয়োজনে সরকার এতে আর্থিক সহায়তা দেবে।