সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে বাড়িতে অবস্থান নেওয়া স্বামীপরিত্যক্তা এক নারীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পরকীয়া প্রেমিক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ানবাড়ী গ্রামের মনিরের বাড়িতে ওই নারীকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তার নাম রোকসানা আক্তার (৩৮)। লাশ ঢামেক হাসপাতালে রেখেই পরকীয়া প্রেমিক মনির হোসেন, তার স্ত্রী ও ছেলে রানা মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান। লাশ মর্গে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের ফাঁড়ি ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর আগে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় নিহতের মা শাফিয়া বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
সোনারগাঁ তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাজু আহম্মেদ জানান, দেওয়ানবাড়ী গ্রামের মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেনের সঙ্গে বাইশটেকি গ্রামের মৃত মনু মিয়ার মেয়ে স্বামীপরিত্যক্তা রোকসানা আক্তারের পরকীয়া গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন উভয়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক চলে। বিষয়টি উভয়ের পরিবারসহ এলাকার লোকজন অবগত ছিল।
গতকাল ভোরে প্রেমিক মনিরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন রোকসানা। এ সময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেন। রোকসানা তার অবস্থানে অনড় থাকায় দুপুরে মনির, তার ভাই গোলজার, খোকন ওরফে খোকা, ছেলে রানা, মনিরের স্ত্রীসহ সাত-আট জনের একটি দল এসএস পাইপ, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় রোকসানাকে মনির, রানা ও মনিরের স্ত্রী ঢামেক হাসাপাতালে নিয়ে যান। পথে রোকসানার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রোকসানাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মনির ও তার পরিবারের লোকজন লাশ রেখেই মোবাইল বন্ধ করে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। রোকসানার মৃত্যু সংবাদ মনির তার মোবাইল ফোনে জানিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ বাইশটেকি গ্রামের একাধিক নারী-পুরুষ জানিয়েছেন, মনিরের বাড়ির লোকজনের একাধিক বিয়ের রেওয়াজ রয়েছে। সকাল থেকে অবস্থান নেওয়া ওই নারীকে মনির ও তার লোকজন একাধিকবার পিটিয়েছেন। মুমূর্ষু অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে জানতে পারি তিনি মারা গেছেন।
ফাঁড়ি ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, রোকসানার লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। যারা এ নারীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তারা মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর পালিয়ে গেছেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, এক নারীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় একটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই নারীর মৃত্যু হওয়ায় সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
