রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বহু বিষয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞা আসে, যায়। এটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহু রকম সম্পর্ক রয়েছে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা একটি অংশ মাত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগের তুলনায় এখন আরও অনেক শক্তিশালী।’ গতকাল সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যেসব পর্যবেক্ষণ ও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি, যাতে আমাদের অবস্থা আরও উন্নত হয়। আমাদের কোনো দুর্বলতা থাকলে যাতে তা দূর হয়। এসব ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সজাগ ও সচেতন। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করছি। শিগগিরই আমরা এটা ওভারকাম করতে পারব।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগেই সিলেটের কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে অগ্রগতি হবে আশা প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাসের শুরুর দিকে ভারত সফরে যাবেন। এ সফরের আগে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বহুল প্রতীক্ষিত সভা হবে। সে সভায় কুশিয়ারা নদী নিয়ে অগ্রগতি হতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করছি যৌথ নদী কমিশনের সভায় কিছুটা অগ্রসর হব। আমাদের রহিমপুর খালের উৎসমুখে কুশিয়ারায় খনন করতে পারছি না। বহুদিন ধরে এটা নিয়ে ঝামেলায় আছি। আমরা আশা করছি এবার অগ্রগতি হবে।’

স্মৃতিচারণা করে মন্ত্রী বলেন, ‘৫৪টি নদী তাদের (ভারত) সঙ্গে আমাদের। এগুলো সচল হলে জিনিসপত্র সস্তায় বেচাকেনা করা যাবে, সস্তায় যাতায়াত করা যাবে। আমরা কানেকটিভিটি চাই। নদীপথটা খুব উত্তম একটা মাধ্যম। কারণ খরচ কম। আমরা বলেছি সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করব। আমরা চাই সব নদী আগে যেমন ছিল, সেভাবে উন্মুক্ত থাকবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘আমি একটি প্রস্তাব করেছি, আমাদের সিলেট এলাকায় ঢলের ফলে বন্যা হয়। ঢলটা আসে আসাম থেকে। তারা ঢল নিয়ে আগাম যে তথ্য পায় সেগুলো আমাদের সঙ্গে যেন শেয়ার করে। এ ছাড়া তারা অনেক ড্যাম তৈরি করেছে। তারা যখন ড্যাম ছাড়বে তখন আমাদের আগাম জানাবে। এতে নদী অববাহিকতার মানুষ উপকৃত হবে। বন্যা, প্লাবনে ক্ষয়ক্ষতি কমবে।’

বেহেশতে আছি বক্তব্যের ব্যাখ্যা : ‘বৈশ্বিক মন্দায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি, সুখে আছি। বলতে পারেন বেহেশতে আছি’- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের এ মন্তব্যের জেরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। শুক্রবার করা তাঁর এ মন্তব্য সংবাদমাধ্যমেও গুরুত্ব পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ‘বেহেশতে আছি’ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন ড. মোমেন।

গতকাল সিলেটে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করতে গেলে তিনি শুক্রবারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘(বেহেশতের কথা) আমি বলেছি, কম্পারেটিভ টু আদার কান্ট্রি (অন্য দেশের তুলনায়)। আর আপনারা সব জায়গায় লিখেছেন “বেহেশত বলেছেন”। টুইস্ট করার চেষ্টা করেছেন। বলেন নাই যে আমাদের মূল্যস্ফীতি অন্য দেশের তুলনায় কম।’ তখন সাংবাদিকরা বলেন, ‘আপনি যা বলেছেন, তা-ই অনএয়ার (প্রকাশিত) হয়েছে...।’

এরপর মন্ত্রী বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি ইংল্যান্ডে ১২ ভাগ, তুরস্কে ৬৭ ভাগ, পাকিস্তানে ৩৭ ভাগ, শ্রীলঙ্কায় ১৫০ ভাগ, আর আমরা ৭ ভাগ। সেই দিক দিয়ে আমরা ভালো আছি। আমি বলেছি, অন্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। এবং তাদের তুলনায় আমরা বেহেশতে আছি, এ কথা বলেছিলাম। কিন্তু আপনারা (সাংবাদিকরা) এক্কেবারে উল্টা!’

সর্বশেষ খবর