বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

গাজীপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহকর্মী ধর্ষণের অভিযোগ, তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধানের বিরুদ্ধে বাড়ির কিশোরী গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক অন্যত্র বিয়ে দিলে কয়েক দিন পরই সন্তান জন্ম দেয়। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। তবে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করছেন। এটি তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের গভীর ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন তিনি। এলাকাবাসী জানান, কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ব্যাপারীপাড়ার এক ব্যক্তির পালিত মেয়ে কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধানের বাড়িতে সাত বছর ধরে ঝিয়ের কাজ করছে। প্রায় বছরখানেক আগে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জোরপূর্বক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এ অবস্থায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গত জুন মাসের শেষের দিকে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই কিশোরীকে চেয়ারম্যানের বাড়ির কাজের ছেলে রইছ উদ্দিনের সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেন। তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বিয়ের কিছুদিন পরই রইছ উদ্দিন পালিয়ে যায়। পরে গত ১ আগস্ট কাপাসিয়ার তরগাঁও খেয়াঘাট এলাকার প্রবাসী জামান মিয়ার বাড়িতে মাসিক ৯০০ টাকায় একটি ঘর ভাড়া করে দেন চেয়ারম্যান। এদিকে ১৫ আগস্ট রাতে কিশোরীর প্রসব ব্যথা শুরু হলে তাকে কাপাসিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ১৬ আগস্ট সেখানে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে ওই কিশোরী কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। পরে কিশোরীটি নবজাতকসহ ভাড়া বাসায় ফিরে আসে। ভাড়া বাসার মালিকের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও শ্যালক প্রায়ই ভিকটিম কিশোরীর কাছে আসতেন।

 তারা নবজাতকের বাবা হিসেবে কোনোভাবেই যেন চেয়ারম্যানের নাম বলা না হয় সে জন্য কিশোরীকে শাসিয়ে যেতেন।

এলাকাবাসী জানান, ২৮ আগস্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা ভিকটিমের সাক্ষাৎকার নেন। ওই রাত থেকেই কিশোরী তার বাবা নবজাতকসহ নিখোঁজ রয়েছে।

কাপাসিয়ার বাসস্ট্যান্ড মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ নাজমুল ইসলাম জানান, ভিকটিম কিশোরীর বাবা এ মসজিদের জন্য দানের টাকা উত্তোলন করতেন। কিছুদিন যাবৎ তিনি আদায়কারীর কাজে আসছেন না। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভিকটিমের ব্যবহৃত ঘরের কিছু জিনিসপত্র মসজিদের বরান্দায় পাওয়া যায়।

এদিকে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধান বলেন, এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক নারী সদস্য তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এ ব্যাপারে ২৯ আগস্ট রাতে তিনি কাপাসিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও বার্তায় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, তিনি এই নবজাতকের বাবা নন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রয়োজনে ডিএনএ টেস্ট করার দাবি করেন তিনি। তার সুনাম ক্ষুণœ করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে অসত্য তথ্য প্রচার করছে বলে জানান তিনি।

কাপাসিয়া থানার ওসি এফ এম নাসিম বলেন, এরকম ঘটনা শুনেছি কিন্তু মেয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর