বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক বছরে ঢাবিতে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ২৭ শিক্ষার্থী!

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অন্তত ২৭ জন শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। একই সময় হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। এ ছাড়াও হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে ২৬ শিক্ষার্থীকে।

‘স্টুডেন্ট এগেইনিস্ট টর্চার’ বা স্যাট নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। গত বছর একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল সংগঠনটি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে প্রতিবেদন তৈরি করে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরে সংগঠনের ডকুমেন্টেশন টিমের হেড আহনাফ সাইদ খান বলেন, বছরজুড়ে মোট ২০টি ঘটনায় ২৭ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

নির্যাতনের ধরনের মধ্যে ছিল- ‘গেস্টরুমে’ নির্যাতন, মারধর, অসুস্থ অবস্থায় লাইটের দিকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করা, ধোঁয়া না ছেড়ে সিগারেট শেষ করতে বাধ্য করা, ‘মুরগি’ হতে বলা, অভিভাবককে ফোন করে ডেকে আনা, পুলিশে সোপর্দ করা প্রভৃতি। অন্যদিকে, প্রতিবেদনে নির্যাতনের কারণ হিসেবে ‘ম্যানার্স শেখানো’, সিনিয়র নাম বলতে না পারা, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অনিয়মিত হওয়া, ‘গেস্টরুমে যেতে দেরি হওয়া’, সালাম-করমর্দন করতে দেরি হওয়া, ফেসবুকে বিরোধী মত প্রকাশ, ইসলামী ও বামপন্থি বই পাওয়া, রুম স্থানান্তর ইত্যাদিকে দেখানো হয়। এসব ঘটনায় মাত্র চারটি ঘটনায় প্রশাসন নামমাত্র ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে স্যাটের পরিচালক সালেহ উদ্দীন সিফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান- শিগগিরই শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত নির্যাতকদের তদন্তপূর্বক প্রশাসনিক শাস্তি নিশ্চিত করুন এবং গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি প্রশাসনিক বিধি প্রণয়ন করুন। এ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেন তিনি। সিফাত বলেন, স্যাটের দাবি একটি টর্চার-মুক্ত ক্যাম্পাস। সে লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ‘কাঠামোগত উদ্যোগ’ গ্রহণ করতে হবে। কাঠামোগত বিচার অথবা পাবলিক কনফেশন ও ক্ষমাপ্রার্থনা ব্যতীত কেবল ‘বড় ভাইদের’ মধ্যস্থতায় গেস্টরুম নির্যাতনকে মীমাংসা করা যাবে না।

সর্বশেষ খবর