স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সরকার নানারকমের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বর্জ্যনিষ্পত্তি এবং সুপেয় পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে বেশকিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
গতকাল রাজধানীর হোটেল শেরাটনে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘টেকসই পানি এবং বর্জ্যব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ুসহিষ্ণু উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য শক্তিশালী স্থানীয় সরকার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ছাড়াও ভারত ও নেপালের সংসদ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের পাগলায় স্থাপিত পয়োশোধনাগার প্রকল্পের ক্ষমতা ১২০ এমএলডি থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ এমএলডি করার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এ ছাড়া দাসেরকান্দি পয়োশোধনাগার প্রকল্প যা ৫০০ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন বর্তমানে চলমান রয়েছে। ঢাকা উত্তরের জন্য উত্তরা ক্যাচমেন্ট, ঢাকা পশ্চিমের জন্য মিরপুর ক্যাচমেন্ট ও রায়ের বাজার ক্যাচমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৬.২ ও ৬.৩ পূরণে সহায়ক হবে।মো. তাজুল ইসলাম এ সময় চাষাবাদের জন্য সৌরশক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, কৃষিকাজে পানি সরবরাহের জন্য সৌর বিদ্যুৎ-চালিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে তা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হবে।
বর্জ্যব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃষি, শিল্প ও গৃহস্থালি বর্জ্য আলাদা ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ছাড়া বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে যে পরিমাণ ই-বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে তারও সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য।
দেশের উন্নয়নের ফলে মানুষের মধ্যে ভোগপ্রবণতা বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ফলে প্রচুর বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে, যা সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও পরিবেশের সঠিক সুরক্ষার জন্য কার্যকর বর্জ্যব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সম্মেলন যত বেশি হবে তত বেশি সুপেয় পানি, পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্যব্যবস্থাপনার বিষয়ে নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা হবে এবং সে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক ব্যবস্থাপনার উপায়ও বের হয়ে আসবে। আঞ্চলিক এ সম্মেলনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ নিজেদের মধ্যে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানের ফলে সমৃদ্ধ হবে এবং ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়া পানি ও বর্জ্যব্যবস্থাপনায় শক্তিশালী অবস্থানে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।