ভারতের ১৬তম লোকসভা নির্বাচনের ভোটযুদ্ধ শেষ হলো আজ। শেষ হলো দেশটির সাধারণ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এখন ফলের অপেক্ষায় পুরো ভারত। প্রশ্ন একটাই- কে আসছেন ক্ষমতায়? মোদি, না রাহুল? নাকি মমতা, মায়াবতী অথবা অরবিন্দ কেজরিওয়াল?
দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নয় দফায় ভোটগ্রহণ হলো ভারতে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের সাধারণ নির্বাচনের ওপর নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। কয়েক লাখ পর্যবেক্ষক এসেছেন দেশের বাইরে থেকে।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংসতা ছাড়া ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া ছিল স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ। নির্বাচনী মাঠে তুমুল লড়াই দেখা গেছে প্রার্থীদের মধ্যে। প্রতিটা দল বাক্যবানে চূর্ণ-বিচূর্ণ করেছে প্রতিপক্ষকে।
ভারতের লোকসভায় আসনসংখ্যা ৫৪৩। এককভাবে সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ২৭২ আসন। পর পর দুইবার ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস এবার এত সংখ্যক আসন পাবে কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয় তৈরি হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এবার শক্ত অবস্থানে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
নির্বাচনপূর্ব সব জরিপে দেখা গেছে, বিজেপি এবার কংগ্রেসের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবে। বিজেপির অর্ধেক আসন পেতে পারে কংগ্রেস। কিন্তু গত দুবারের লোকসভা নির্বাচনেও এমন পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল। ‘শেষ পর্যন্ত সরকার গঠন করে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউপিএ)।
বলা হচ্ছে, ভারতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বহুদিন পরে জনগণের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছেন গুজরাটের হ্যাটট্রিক মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাটের উন্নয়ন মডেলের আদলে তিনি দেশকে পাল্টে দিতে চান- এই তার পণ।
এদিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বে এসেছে নতুন মুখ। গান্ধী পরিবারের উত্তরাধিকার হিসেবে রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের হাল ধরবেন- এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে। তিনিই সম্ভাব্য প্রাধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।
এ ছাড়া ভারতের নির্বাচনে এবার ম্যাজিক ম্যান হিসেবে হাজির হয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে তিনি লোকসভা নির্বাচনে তার দল আম আদমি পার্টিকে মাঠে নামিয়েছেন।
ভোট গ্রহণের শেষ দিন সোমবার ১২ মে উত্তর প্রদেশের বারাণসী আসনে ভোটে লড়েছেন কেজরিওয়াল। সেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বি নরেন্দ্র মোদি। কংগ্রেস থেকে লড়েছেন অজয় রায়। এ আসনে জয়টা শুধু জয়ই নয়, অনেক বেশি সম্মানের- এমনটিই মনে করে ভারতবাসী।
শেষ দফার ভোটে ৪১টি আসনে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশে ও বিহারে এ ৪১টি আসন। শেষ দিনেই যেন নির্বাচনের উৎসবে সবচেয়ে বেশি রং ছড়িয়েছে।
একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগের তির ছুড়লেও এখন সবাই অপেক্ষায়। ১৬ মে শুক্রবার ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। সেদিনই দেখা যাবে- দিল্লির মসনদে কে বসছেন?
তথ্যসূত্র : জিনিউজ, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে।