বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত কয়দিন ধরে আবার সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি-ধামকি দিতে শুরু করেছেন। পবিত্র রমজান মাসে প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো ইফতার আয়োজনে যোগ দিয়ে তিনি বক্তৃতা করেছেন এবং সব বক্তৃতাতেই যথারীতি সরকারের মুণ্ডুপাত করছেন। শুধু জামায়াতের ইসলামীর ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়ে বেগম জিয়া বক্তৃতা করেননি। পৌঁছতে দেরি হয়েছে বলে তিনি জামায়াতের ইফতারে বক্তৃতা করেননি বলা হলেও কৌশলগত কারণেই বেগম জিয়া জামায়াতের ইফতার পার্টিতে বক্তৃতা দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন বলে কোনো কোনো রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের ধারণা। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে গণমাধ্যমে নানা ধরনের খবর ছাপা হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে ইদানীং সম্পর্কটা খুব ভালো যাচ্ছে না, বিভিন্ন কারণে দুই দলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, দুই দলই দুই দলকে এড়িয়ে চলতে চাইছে ইত্যাদি খবর প্রচারের পাশাপাশি এমন খবরও রটেছে যে, দেশ-বিদেশের চাপে বিএনপি নাকি জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ ঘটাতেও পারে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর, তার সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠক এবং তারপর ভারতীয় পত্রপত্রিকায় বেগম জিয়াকে মোদি জামায়াত ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে সংবাদ প্রকাশের পর কারও কারও মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হয় যে, সত্যি বুঝি বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
এসব ধারণা যে সত্য নয়, সেটা বেগম জিয়া প্রমাণ করেছেন জামায়াতের ইফতারে যোগ দিয়ে। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির যদি বড় ধরনের কোনো ভুল বোঝাবুঝি দেখা দিত কিংবা জামায়াতকে দূরে ঠেলার কোনো আগ্রহ বিএনপির থাকত, তাহলে জামায়াতের ইফতারে অনুপস্থিত থেকে বেগম জিয়া সেটা সবার কাছে আরও স্পষ্ট করতে পারতেন। আর অনুপস্থিত থাকার জন্য একটি 'অজুহাত' তৈরি করা কোনো কঠিন কাজ ছিল না। সফররত ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা না করার অজুহাত হিসেবে হরতালকে কি ব্যবহার করা হয়নি? জামায়াত-বিএনপির মধ্যে দূরত্ব বাড়ার বিষয়টি যে জল্পনা-কল্পনা মাত্র সেটা প্রমাণ করতেই বেগম জিয়া জামায়াতের ইফতারে উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত হয়ে কিছু না বলাটাও ছিল পরিকল্পিত। জামায়াতের ইফতারে কথা বললে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত ও দণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের প্রসঙ্গটি এড়ানো সম্ভব হতো না। স্পর্শকাতর মনে করেই বেগম জিয়া সম্ভবত বক্তৃতা এড়িয়েছেন কিন্তু জামায়াতকে এই বার্তা দিয়েছেন যে, তিনি তাদের সঙ্গে আগে যেমন ছিলেন, এখনো তেমনি আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
জামায়াতের ইফতারে বক্তব্য না দিলেও পরে ২০-দলীয় জোটের শরিক কয়েকটি দলের ইফতার পার্টিতে বিএনপি চেয়ারপারসন কথা বলেছেন। তিনি ধর্মকর্ম কিংবা ইবাদত বন্দেগি নিয়ে কথা বলেননি, বলেছেন রাজনীতি প্রসঙ্গেই। জানুয়ারির ৩ তারিখ থেকে এপ্রিলের ৪ তারিখ পর্যন্ত গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কাটিয়ে ৫ এপ্রিল বাসায় ফেরার পর বেগম জিয়ার বক্তৃতা-বিবৃতি গণমাধ্যমে খুব একটা আসেনি। দীর্ঘ তিন মাসের আন্দোলনের ব্যর্থতা হয়তো বেগম জিয়াকে বক্তৃতা দেওয়া থেকে নিবৃত্ত করেছিল। তারপর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ও বর্জনের নাটকীয়তার পরও বেগম জিয়াকে মূলত নীরবতা পালন করতেই দেখা যায়। সম্ভবত ব্যর্থতাজনিত হতাশা থেকে তিনি কিছুটা নিস্পৃহ ছিলেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ বিএনপির পক্ষ থেকে তোলা হলেও তার প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি সবাইকে বিস্মিত করলেও বেগম জিয়ার কাছ থেকে কোনো কথা শোনা যায়নি। এরপর থেকেই বিএনপি সম্পর্কে গণমাধ্যমে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনানির্ভর প্রতিবেদন ছাপা হতে থাকে। বিএনপি এখনই আর কোনো আন্দোলনে যাবে না। আগে দল গোছানা, পরে আন্দোলন। বিএনপির নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হবে। আন্দোলন থেকে যারা দূরে থাকে, দুঃসময়ে যাদের পাশে পাওয়া যায় না, তাদের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে 'ত্যাগী, পরীক্ষিত' নেতাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে ইত্যাদি। কিন্তু দলের পরিবর্তন আনার বিষয়টি এখন পর্যন্ত ভাবনার মধ্যেই আছে। বাস্তবে তেমন কিছু দৃশ্যমান হচ্ছে না। গত দুই-আড়াই মাস বেগম জিয়ার মুখ থেকে সরকারবিরোধী কড়া কোনো বক্তব্য শোনা না যাওয়ায় কেউ কেউ মনে করছিলেন, বিএনপির রাজনীতিতে হয়তো বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। বিএনপি হয়তো নিজেদের রাজনৈতিক কৌশলে পরিবর্তন আনছে। আন্দোলন কেন সফল হয় না- তার একটা মূল্যায়ন-পর্যালোচনা হয়তো দলের পক্ষ থেকে করা হবে। দলটি হয়তো আর হটকারিতার পথে চলবে না। সন্ত্রাস-সহিংসতা-পেট্রলবোমার রাজনীতি ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এক বক্তৃতায় বলেছেন, 'সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করতে চায় বিএনপি'। তার এই বক্তব্য সবার মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। বিএনপি সত্যি সরকারের সঙ্গে সমঝোতা চায় কিনা সে প্রশ্ন যখন সামনে আসে তখনই কয়েকটি ইফতার পার্টিতে বক্তৃতা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়েছেন। বেগম জিয়া পরিষ্কার করেছেন যে, বিএনপি পুরনো পথেই হাঁটবে। বিএনপি থাকবে বিএনপির জায়গাতেই। আর সেটা হলো, সরকারের বিরুদ্ধে শব্দবোমা নিক্ষেপ অব্যাহত রাখা। কৌশলগত কারণে সাময়িকভাবে আগুন-সন্ত্রাস বন্ধ থাকলেও বাক-সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছেন বেগম জিয়া।
বিএনপির চেয়ারপারসন গত ২৮ জুন এক ইফতার আয়োজনে বলেছেন, 'গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে।' গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর কথা বেগম জিয়া এর আগে বহুবার বলেছেন। তিনি একাধিকবার গণঅভ্যুত্থানের ডাকও দিয়েছেন। কিন্তু গণঅভ্যুত্থান হয়নি। তার ডাকে বিএনপির নেতাকর্মীরাও সেভাবে সাড়া দেয়নি। বেগম জিয়ার ডাকে দেশে গণঅভ্যুত্থান হওয়ার কোনো সম্ভাবানাও নেই। কোনো নেতানেত্রী ডাক দিলেই কোনো দেশে গণঅভ্যুত্থান হয় না। উনসত্তরে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। তখন ক্ষমতায় ছিল অনির্বাচিত স্বৈরাচারী সামরিক সরকার। আইয়ুব খানের কোনো গণভিত্তি ছিল না। দেশের ছাত্রসমাজসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অবস্থান ছিল আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে নব্বইয়ের সূচনায়। তখনো ক্ষমতায় ছিলেন সামরিক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরশাদেরও গণভিত্তি ছিল অত্যন্ত দুর্বল। দেশের মূল ধারার রাজনৈতিক শক্তি ছিল এরশাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। ছাত্র-শ্রমিকসহ পেশাজীবী সংগঠনগুলোর অবস্থান ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। তারপর থেকে দেশে আর কোনো গণঅভ্যুত্থান হয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের মতো আন্দোলন-অভিজ্ঞ দলও বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় আন্দোলন করেও প্রকৃতপক্ষে কোনো গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে পারেনি। রাজনৈতিক চাপের মুখে বেগম জিয়াকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে হয়েছিল কিন্তু গণঅভ্যুত্থানে বেগম জিয়ার সরকারের পতন হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হওয়া। এরশাদ পতনের পর নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের একটি ধারা যেমন দেশে তৈরি হয়েছে, তেমনি দেশে প্রবল রাজনৈতিক মেরুকরণও ঘটেছে। রাজনীতি প্রধানত দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক ধারার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, অন্য ধারার নেতৃত্বে বিএনপি। আওয়ামী লীগের গণভিত্তি আছে। বিএনপিরও আছে। গণভিত্তিসম্পন্ন কোনো রাজনৈতিক দলের সরকার ক্ষমতায় থাকলে তার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটানো সহজ হয় না। বেগম জিয়ার হিসাবে এখানেই হচ্ছে মস্ত বড় ভুল। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগের পেছনে মানুষের সমর্থন নেই। আওয়ামী লীগ যেন হাওয়ায় ভেসে আসা দল। দেশের সব মানুষ বেগম জিয়া তথা বিএনপির পক্ষে। বাস্তবটা তা নয়। আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি করলেও আওয়ামী লীগ অনুসারীরা বিএনপিকে সমর্থন করবে না। যেমন সমর্থন বদল করে না বিএনপি অনুসারীরাও। বিএনপির ভুলত্রুটির জন্য তার সমর্থকরা কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের দিকে ঝুঁকবে না। দেশে কিছু মানুষ আছেন মধ্যবর্তী অবস্থানে। কিন্তু তারা ভোটের সময় নানা বিবেচনায় এদিক ওদিক করলেও যত অসন্তোষই থাক- আন্দোলন করে সরকার বদলানোর ঝুঁকির মধ্যে যেতে চায় না। আমাদের দেশের গত আড়াই দশকের অভিজ্ঞতা তাই বলে। আর, এখন বেগম জিয়া চাইলেও তার নেতৃত্বে সুস্থ ধারার গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলাও সম্ভব হবে না। কারণ আন্দোলনের নামে রেললাইন উপড়ে ফেলা, ট্রেনে-বাসে-ট্রাকে আগুন নিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার জন্য জনমনে যে আন্দোলন-ভীতি তৈরি হয়েছে তা সহজে দূর হবে না। নির্বাচন ছাড়াই সরকার উৎখাতের অন্ধ-আবেগি জেদ বেগম জিয়ার রাজনীতিকে জটিল আবর্তে ঠেলে দিয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার বদলের কথা বেগম জিয়া যতই বলুন না কেন, মানুষের কাছে এখন আর সেটার কোনো আবেদন নেই। বেগম জিয়ার কিছু অন্ধ সমর্থক গণঅভ্যুত্থানের কথা শুনে উত্তেজনাবোধ করলেও করতে পারে, সাধারণ মানুষ এসব কথা কানে তোলে না। 'জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে' বেগম জিয়ার এসব বক্তৃতাও মানুষকে কোনোভাবেই উদ্বুদ্ধ বা অনুপ্রাণিত করে না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসালেই দেশে জনগণের সরকার, গণতন্ত্র, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে- এটা দেশের অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করে না। বিএনপি এর আগে একাধিকবার ক্ষমতায় ছিল। তখন কি দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল? সার ও বিদ্যুতের দাবি জানিয়ে কৃষক ও সাধারণ মানুষকে তখন প্রাণ দিতে হয়েছিল কেন? হাওয়া ভবন কি সুশাসনের প্রতীক ছিল? বেগম জিয়া নিজেকে এবং তার দলকে যতটা গণতান্ত্রিক বলে মনে করেন, দেশের মানুষ কি তা করে? বিএনপি দলটিকে অনেকেই না-গণতান্ত্রিক বলে মনে করে, না-গণতন্ত্রের পক্ষের বলে মনে করে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যাদের বসবাস তাদের পক্ষে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় সেটা বোঝার ক্ষমতা মানুষের আছে। ৩০ জুন এক ইফতার আয়োজনে খালেদা জিয়া বলেছেন, 'জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। এখন তাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।' এসব কথা বলে বেগম জিয়া আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন? কারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে? কারাই বা আওয়ামী লীগকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা করছে? বেগম জিয়া কি প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়া ও থাকার জন্য ভারতকেই বিএনপি দায়ী করে থাকে। বেগম জিয়া এই বক্তৃতাটা ভেবেচিন্তে দিয়েছেন, নাকি পুরনো অভ্যাসবশত দিয়ে ফেলেছেন? নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার দেখা-সাক্ষাতের ফলাফল তাহলে কি দাঁড়াল? দিলি্ল যদি এখনো আওয়ামী লীগকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা করতে থাকে, তাহলে বেগম জিয়া কি করবেন?
পাদটীকা : বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, 'দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া, যাতে কোনো কারচুপি না হয়।' দুদিন আগে বললেন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর কথা। দুদিন পর বললেন, বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো নির্বাচন। বেগম জিয়ার মনের কথা কোনটা? তিনি আসলে কী চান? কীভাবেই বা সেটা অর্জন করবেন? নিজের দলের ওপরই তো এখন বেগম জিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেই। ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমিটি গঠনের এক বছর হতে চলল। ফলাফল কি? পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কোনো খবর নেই। দল গুছিয়ে, দলের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজের সক্ষমতার পরিচয় না দিয়ে বেগম জিয়া বক্তৃতায় ক্রমাগত চড়া সুরে কড়া কথা বলতে থাকলে তা কি এক সময় কেবল লোক হাসানোর উপাদান হয়ে পড়বে না?
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।