৫ মার্চ, ২০১৬ ১৪:৪০

যে ইতিহাস জাতিকে পথ দেখাবে

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

যে ইতিহাস জাতিকে পথ দেখাবে

বাঙালি জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। আর এই যুদ্ধ জয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণার জায়গা ৭ মার্চের ভাষণ। যুদ্ধের পুরো ৯ মাস অস্ত্রশস্ত্র গোলাবারুদের চেয়েও শক্তিশালী ছিল জয় বাংলা স্লোগান এবং বঙ্গবন্ধুর বজ্র কণ্ঠ। যুদ্ধের ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধারা কত সীমাবদ্ধতার মধ্যে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন সে ইতিহাস এখন সবাই জানেন।  শুধু যুদ্ধ করেননি, সেই অসম যুদ্ধে মাত্র ৯ মাসের মাথায় জয়ী হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধারা, বিশেষ করে যারা গণবাহিনী এবং গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গেরিলা যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন তারা কখনো দিনে একবেলা খেয়েছেন তো আরেক বেলা খাবার সুযোগ হয়নি, কখনো আবার আধাপেট খেয়ে দিন পার করেছেন। অস্ত্রপাতি গোলাবারুদের সীমাবদ্ধতা তো ছিলই। কিন্তু এসব কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল কখনো নষ্ট হয়নি। ওই কঠিন সময়ে মনোবলের টনিক হিসেবে কাজ করেছে বঙ্গবন্ধুর বজ্র কণ্ঠ, ৭ মার্চের ভাষণ। সে যে কী শিহরণ আর উত্তেজনা শরীর-মনে সৃষ্টি হতো সে অনুভূতির কথা প্রকাশ করা যায় না, কেবল নিরন্তর মনের বীণায় বাজে। সময়ের চাপে শরীরে জং ধরলেও আজ ৪৫ বছর পরে এখনো তা মনপ্রাণকে অন্য রকম করে নাড়া দেয়, মনে হয় সব কিছু এখনো চির নবীন চির অম্লান। কী বলব, গত ৪৫ বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশে যে প্রলয় কাণ্ড ঘটে গেছে তাতে স্বাধীনতার মাস মার্চ এবং বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এলে মন স্থির থাকে না। বেদনাভরা মনে নিজেকেই জিজ্ঞাসা করি, এ জন্যই কি কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। যুদ্ধের মাঠে এমনও সময় গেছে খাবারের জোগাড় নেই। গোলাবারুদ কমে গেছে। নিজ পক্ষের হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের কারও চোখে-মুখে কখনো হতাশা ও ভয়ের চিহ্ন জায়গা পায়নি। সবার মুখে এক কথা, মরতে হয় মরব। কিন্তু পাকিস্তানি বর্বরদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করব। রাজাকার আলবদরদের খতম করব। কিছুর অভাবে কোনো একজনের মন খারাপ হলে আরেকজন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের অনুকরণ করে জোরে জোরে বলতাম, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলো, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। আমরা ওদেরকে ভাতে মারব, আমরা ওদেরকে পানিতে মারব। কী কঠিন প্রতিজ্ঞা, সে কথা এখন ৪৫ বছর পর ভাবা যায় না। নতুন প্রজন্মের সামনে এ কথা বললে তারা কতটুকু বিশ্বাস করে তা নিয়েও মনে এখন সন্দেহ জাগে। কারণ, একদল ক্ষমতা দখলদারি দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে মুক্তিযুদ্ধের এমন সব রোমহর্ষক প্রেরণাদায়ী কাহিনীকে স্তব্ধ করে দেওয়ার ক্ষমাহীন অপচেষ্টা চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই মূর্খরা হিংসা-বিদ্বেষের বশবর্তী হয়ে বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। এই চেষ্টা যারা করেছে তারা এতদিনে বুঝতে পেরেছে শেখ মুজিবের মতো নেতাকে হত্যা করা যায় না, মারা যায় না। তিনি শুধু বাঙালির মহান নেতা ও জাতির পিতা নন, বিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের মুক্তির কণ্ঠস্বর। মাত্র ৫৫ বছরের স্বল্পতম জীবনকালে রাষ্ট্রনায়কে উন্নীত হওয়ার ঘটনা সমসাময়িক ইতিহাসে বিরল। ইতিহাসে অনেক সফল রাজনৈতিক নেতা, সফল রাষ্ট্রপ্রধান এবং রাষ্ট্রনায়কের উদাহরণ আছে। তবে একজন রাষ্ট্রনায়কের যেসব বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি থাকে তার সব দিকের পরস্ফুিটন এবং বহিঃপ্রকাশ সাধারণত সবার ক্ষেত্রে দেখা যায় না এবং সে সুযোগ সবার জন্য আসেও না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আলেখ্য ছিল অন্যের চেয়ে ভিন্ন। দীর্ঘ সংগ্রাম, তারপর সশস্ত্র যুদ্ধ এবং যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে গড়ে তোলাসহ সব দর্শন ও প্রজ্ঞার পরস্ফুিটন ঘটেছে বঙ্গবন্ধুর জীবনে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী গণযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। এই রাষ্ট্রের স্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, তার চিন্তা-চেতনা, আদর্শ, দর্শন এবং দিকনির্দেশনা মুক্তিযুদ্ধের জন্য সমগ্র জাতিকে প্রস্তুত করেছে, যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে এবং সেই যুদ্ধে অভাবনীয় বিজয় অর্জিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় সামরিক কৌশলের যে নির্দেশনা তিনি ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে দিয়েছেন তা একজন দক্ষ সেনাপতিকেও হার মানায়। ভাষণের প্রায় শেষাংশে তিনি বলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলো, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু তোমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব। এই নির্দেশনার সবই যুদ্ধক্ষেত্রের রণকৌশলের অংশ। এই কথাগুলো ছিল বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের চিন্তার প্রতিফলন, যা ৭ মার্চের ভাষণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার মুখ থেকে বের হয়ে আসে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বাঙালিদের করতে হবে, এটি তার দূরদৃষ্টিতে বহু আগেই ধরা পড়েছিল।

সেই ষাটের দশকে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা ভেবে বিশ্বস্ত কয়েকজন যুবকের দ্বারা নিউক্লিয়াস গঠন করেছেন। ভারতের সঙ্গে কথা বলেছেন, বোঝাপড়া করেছেন। সুতরাং শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়। একটি দেশ, একটি জাতি এবং তার সঙ্গে মিশে থাকা সব চেতনা ও আদর্শের নাম শেখ মুজিব। বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি যতদিন টিকে থাকবে ততদিন বেঁচে থাকবে শেখ মুজিবের নাম। শুধু নামই বেঁচে থাকবে না, লক্ষ কোটি মুজিবের জন্ম হবে বাংলার মাটি ফুঁড়ে, যে মাটি স্নাত হয়েছে মুজিবের রক্তে। কারণ, নশ্বর পৃথিবীতে অবিনশ্বর হওয়ার জন্য ত্যাগের উদাহরণ যদি সর্বোত্কৃষ্ট উদাহরণ হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য একজন মানুষের পক্ষে সর্বোচ্চ যে ত্যাগ হতে পারে সেই নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন তিনি বাঙালির মুক্তির প্রশ্নে ছিলেন আমৃত্যু আপসহীন।

বঙ্গবন্ধু ইচ্ছা করলে পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোর ভিতরে আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানসহ সবার আমলেই মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে অতি সহজে বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল সহায়-সম্পত্তি করে নিজের পরিবার-পরিজনসহ ধনসম্পদে সমৃদ্ধ হয়ে জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের সব প্রস্তাব তিনি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলে পাকিস্তানি শাসকরা বঙ্গবন্ধুর ওপর সীমাহীন জেল-জুলুম, অত্যাচার চালিয়েছে। তাতেও তারা ব্যর্থ হয়। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু বাঁচতে পারলেন না। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় দেশি-বিদেশি পরাজিত শত্রুরা নির্মমভাবে হত্যা করল এমনই একজন মহান নেতাকে, যিনি আমাদের একটা স্বাধীন দেশ দিলেন, নিজস্ব পরিচয়ের বাহন বাঙালিত্বকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত করলেন। বঙ্গবন্ধু অন্তত যদি আরও দশটি বছর বেঁচে থাকতেন, তাহলে এতদঞ্চলের মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডের চেয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা আজ কোনো ক্ষেত্রেই কম হতো না।

পিতৃ হত্যার কলঙ্কের দায়ভার নিয়ে একটা জাতির ভাগ্যে যা হওয়ার আজ বাংলাদেশের অবস্থা তা-ই হয়েছে। রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষানীতি এবং রাষ্ট্রীয় দর্শন ও আদর্শ সব কিছু যেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। কিন্তু এত ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও তার মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে পারে না। তাই বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন পরে হলেও রাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছে। পঁচাত্তরের পর মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে যারা আবার পাকিস্তান বানানোর অপচেষ্টা করেছে তারা আজ মানুষের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে। এই বিশ্বাসঘাতক পাপীদের অন্যতম অংশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, ফাঁসিতে ঝুলছে। এই গোষ্ঠীর বড় শরিক আজ রাজনৈতিকভাবে বিপন্ন ও দেউলিয়া। দেশের নতুন প্রজন্ম মুক্তিসংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাথার প্রতি এখন প্রবল আগ্রহ সহকারে ঝুঁকছে। তারা জানতে চায় এত বড় কঠিন ও দীর্ঘ সংগ্রামের মহান নেতা কে ছিলেন, কার হুকুমে মানুষ অকাতরে প্রাণ দিয়ে মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করল। তারা আরও জানতে চায় কি সে দর্শন, আদর্শ ও চেতনা, যা সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এবং কীভাবে তৎসময়ে সাড়ে সাত কোটি মানুষের গহিনে তা প্রোথিত হয়েছিল। জানতে চায় সেই দীর্ঘ সংগ্রামের প্রতিটি গৌরব গাথার উজ্জ্বল কাহিনী। অতীতের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের শিক্ষাই আগামীতে বাংলাদেশকে সঠিক পথ দেখাবে। এ দেশেরই দুই সামরিক শাসক এবং তাদের প্রতিভূরা বাঙালির এমন স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাসকে কীভাবে বিকৃত করেছে তা আমরা সবাই জানি। এসব মীর জাফরদের কুকীর্তি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা দরকার। তাদের নাম-পরিচয় নতুন প্রজন্মের জানা প্রয়োজন। কারণ এই মীর জাফরের গোষ্ঠী এখনো নানা ছদ্মবেশে রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর দ্বারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বঙ্গবন্ধুর অমরকীর্তির বহু স্মারক ধারণ করে এখনো শূন্য হাতে দাঁড়িয়ে আছে তখনকার রেসকোর্স, বর্তমানের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ইতিহাসের স্মারক চিহ্ন জাতির জন্য মহামূল্যবান সম্পদ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যে স্থানে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরেও সেই জায়গাটি সংরক্ষণ করা তো দূরের কথা যথাযথভাবে চিহ্নিত পর্যন্ত হয়নি। মুক্তিসংগ্রামের বহু স্মৃতিবিজড়িত জাতীয় এই উদ্যানের দেখভালেও নেই কোনো কর্তৃপক্ষ। অথচ ২০১০ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৭ মার্চের ভাষণের স্থানসহ মোট ৭টি স্থান সংরক্ষণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। এই স্থানগুলো হলো— ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণের স্থান, ৭ মার্চের ভাষণের স্থান, পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের স্থান, পাকিস্তানের কারাগার থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন দেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থান, ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত হওয়ার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি যে স্থানটি থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়া হয়, ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণের স্থান এবং ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষণের স্থান।  আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, যদি কেউ বাঙালি হয়ে থাকেন তাহলে ওইসব স্থানে দাঁড়িয়ে তার প্রাণ রোমাঞ্চিত হয়ে উঠবে।

নতুন প্রজন্মের জন্যই প্রতি বছর এদিন এলে আমাদের নতুন করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ৭ মার্চের আবেদন ও তাত্পর্যের কথা বলতে হবে। কারণ এর আবেদন শেষ হওয়ার নয়, অফুরন্ত। কালের বিবর্তনে তা আরও শাণিত হবে, কঠিন সংকটে জাতিকে পথ দেখাবে।

লেখক : কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

ই-মেইল: [email protected]


বিডি-প্রতিদিন/ ০৫ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা

সর্বশেষ খবর