দারিদ্র্য বিমোচন, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন এবং সর্বোপরি উন্নততর জীবনের জন্য দূষণমুক্ত মহাসাগরের কোন বিকল্প নেই। সমুদ্র, মহাসমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং এর টেকসই ব্যবহারের বিষয়গুলো শুধু কথার মধ্যে না রেখে একে কাজে পরিণত করার এখনই সময়।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চলমান মহাসমুদ্র সম্মেলনে এ অভিমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার এডমিরাল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. খুরশিদ আলম। উল্লেখ্য, তিনি ছয় সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ সম্মেলনে।
গতকাল বুধবার ম্মেলনের সাধারণ সভায় খুরশিদ আলম আরও বলেন, সমুদ্রের অব্যাহত দূষণ, সমুদ্র সম্পদের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং সামুদ্রিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে এলডিসির দেশসমূহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যদিও এতে এ সকল দেশসমূহের ভূমিকা খুবই নগণ্য।
এ প্রেক্ষিতে সমুদ্র দূষণ মোকাবেলায় সকল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, বিজ্ঞানের ব্যবহার, যথাযথ আর্থিক নীতি প্রণয়ন, নেতিবাচক মৎস্য ভতুর্কি বন্ধ এবং অবৈধ মাছ ধরার প্রতি নিষেধাজ্ঞাসহ সাতটি সুনির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ করেন খুরশিদ আলম।
বিদ্যমান বিভিন্ন চুক্তি ও কাঠামো অনুযায়ী এলডিসির জন্য সামুদ্রিক ও অন্যান্য প্রযুক্তি হস্তান্তর সক্ষমতা বৃদ্ধি, সকল স্তরে কার্যকর অংশীদারিত্ব এবং টেকসই তহবিল গঠনে জি-৭ সহ উন্নত দেশগুলোকে কার্যকর প্রদক্ষেপ নিতে তিনি আহ্বান জানান।
জুন মাসের ৫ তারিখে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী এই মহাসমুদ্র সম্মেলনে ১৪ জন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে তারা সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ ও এর টেকসই ব্যবহারের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন।
এলডিসির দেশসমূহের পক্ষে বক্তব্য প্রদান ছাড়াও বাংলাদেশ ৭টি বিষয়ভিত্তিক আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ ও ২টি সাইড-ইভেন্টের আয়োজন করে। প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার, মৎস্য ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রজাতি, বনায়ন এবং ম্যানগ্রোভ বনের প্রতিবেশগত টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে বাংলাদেশ এ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট পিটার থমসন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আগামীকাল শুক্রবার ‘কল-ফর-অ্যাকশন’ গ্রহণের মাধ্যমে এ সম্মেলন শেষ হবে।
বিডি প্রতিদিন/৮ জুন, ২০১৭/ফারজানা