ফোবানার অপারেটিং প্রসিডিউরের ১৭তম ধারার ওপর ভিত্তি করে ৩০ আগস্ট বুধবার ফ্লোরিডার সংগঠক কুদরত-ই-খুদাকে ফোবানার বাংলাদেশ সম্মেলনে আগমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এখন থেকে আর কখনোই তিনি ফোবানার কোন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না।
ফোবানা (ফেডারেশন অব বাংলাদেশী এসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকা)’র চেয়ারপার্সন আজাদুল হক ৩০ আগস্ট এক জরুরী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
টেক্সাসের হিউস্টনে বসবাসরত আজাদুল হক এ সংবাদদাতাকে জানান, ‘আসছে অক্টোবরে মায়ামীতে ফোবানার বাংলাদেশ সম্মেলন হবে। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এমনই অবস্থায় উপরোক্ত কুদরত-ই-খুদা ফ্লোরিডার মায়ামীতে একই সময়ে ফোবানার বিরুদ্ধে একটি সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে সর্বত্র বিভ্রান্তি তৈরী করেছেন। এহেন অপতৎপরতা থেকে বিরত হবার অনুরোধ জানানোর পরও তিনি ক্ষান্ত না দেয়ায় মাস তিনের আগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও জারি করেছিলাম। কিন্তু তিনি সেই নোটিশের তোয়াক্কা না করে ফোবানার সময়ে পাল্টা কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় ফোবানার নির্বাহী কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।’
আজাদ উল্লেখ করেন, ‘এর আগে উপরোক্ত কুদরতই খোদা ফোবানার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমান কমিটির কোন পদে তিনি নেই। তবুও আমরা তাকে নিষিদ্ধ করছি ভবিষ্যতের জন্যে।’ এমন অপতৎপরতা তথা কম্যুনিটিকে বিভক্তির জন্যে যিনি বা যারাই চিহ্নিত হবেন, তাদেরকেই নিষিদ্ধ করা হবে ফোবানায়-বলেন আজাদ।
এদিকে আসছে অক্টোবরের ৬ থেকে ৩ দিনব্যাপী ফোবানার ৩১তম বাংলাদেশ সম্মেলন তথা ফোবানা সম্মেলনের হোস্ট কমিটির এক প্রস্তুতি সভা গত ২৭ আগস্ট শনিবার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ডেলরেবীচ সিটির একটি পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলন হবে মায়ামীর হায়াত রিজেন্সী হোটেলে।
প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন হোস্ট কমিটির আহবায়ক এম রহমান জহীর এবং পরিচালনা করেন সদস্য সচিব আরিফ আহমেদ আশরাফ। আয়োজক সংগঠন ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ফ্লোরিডা’র সর্বস্তরের সদস্য-কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত থেকে আয়োজনের বিভিন্ন অগ্রগতি উপস্থাপন করেন। এ সময় প্রধান সমন্বয়কারি আতিকুর রহমান জানান, হোটেলে যতগুলো সীট ছিল, সবগুলোই রিজার্ভ হয়ে গেছে। এখন চেষ্টা করা হচ্ছে আশপাশের হোটেলের সীটগুলো সংরক্ষণ করার। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এবার মেক্সিকো থেকেও আসছেন প্রবাসীরা। যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৬টিরও অধিক সংগঠন আসবে নিজ নিজ পরিবেশনা নিয়ে।
প্রধান উপদেষ্টা আব্দুল ওয়াহেদ মাহফুজ এবং প্রধান পৃষ্টপোষক নওশাদ চৌধুরী পৃথক পৃথকভাবে সকলকে অবহিত করেন যে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ প্রতিভার অধিকারি বেশ কিছু বাঙালি আসবেন এবারের সম্মেলনে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও আসতে সম্মত হয়েছেন।
সাংস্কৃতিক পরিচালক এ বি এম গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনে এ প্রস্তুতি সভায় আরো উল্লেখ করা হয় যে, প্রবাসে জন্মগ্রহণকারি নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে রাখতে ফোবানার মূল চেতনার পরিপুরক একটি পর্ব থাকবে এবারের সম্মেলনে। এছাড়াও, ৩ দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রায় প্রতিটি পর্বেই থাকবে নতুন প্রজন্মের সরব উপস্থিতি।
সার্বিক পরিস্থিতির অগ্রগতি নিয়ে আরো আলোচনা করেন হোস্ট কমিটির নির্বাহী কো-কনভেনর রানা হক, ওসমান চৌধুরী অপু এবং একরামুল হক চাকলাদার, কো-কনভেনর নাজমুন মাহফুজ, আজম চৌধুরী, এ কে এম হোসেন হিঠু, আলমগীর কবীর, মিন্টু চৌধুরী, শেখ লিয়াকত আলী, সরকার হারুন, দুলু ভূইয়া, কামাল ভূইয়া এবং আমিরুল ইসলাম অপু, নির্বাহী সচিব ফারুক সরকার এবং মোহাম্মদ শাহেদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, এর আগে ১৯৯৬, ২০০৫ এবং ২০১২ সালেও এই ফ্লোরিডায় ফোবানার সম্মেলন হয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এবার সবদিক থেকেই দৃষ্টিনন্দন একটি সম্মেলনের সংকল্পে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন