১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ১৭:০৫

মালয়েশিয়া পুলিশ প্রধানের সাথে হাইকমিশনারের মতবিনিময়

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি :

মালয়েশিয়া পুলিশ প্রধানের সাথে হাইকমিশনারের মতবিনিময়

বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম মালয়েশিয়া পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন করেছেন। তিনি মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান দাতো সেরি তান শ্রী আবদুল হামিদ বদর-এর সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় হাইকমিশনের কাউন্সিলর (শ্রম ২) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মণ্ডল এবং প্রথম সচিব (পলিটিক্যাল) রুহুল আমিন, মালয়েশিয়ান পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের পরিচালক দাতো হুজির বিন মোহামেদ, পুলিশ সেক্রেটারি দাতো রামলি মোহামেদ ইউসুফ এবং ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনের প্রধান দাতুক গোহ বন কেংসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

হাইকমিশনার বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, উভয় দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সম্পর্ক আরো জোরদার করতে বাংলাদেশ সরকার বদ্ধপরিকর। এ জন্য তিনি অপরাধ দমনে একসাথে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।  পুলিশ প্রধান মালয়েশিয়ার উন্নয়নে বাংলাদেশী কর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, তারা অনেক পরিশ্রমী, দক্ষ এবং সৎ। 

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনে সফল হওয়া এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। উভয়ের মধ্যে গ্রেফতার, ইমিগ্রেশন, ডিটেনশন, কর্মী,  আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ে আলোচনা হয়। 

আইজিপি জানান, মালয়েশিয়ায় থেকে কিছু অপরাধমূলক কাজ করা হচ্ছে যেমন অপহরণ, চাঁদাবাজি, প্রতারণা এবং প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার যা উভয় দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। সোশ্যাল ও সংবাদ মিডিয়ায় মালয়েশিয়া সম্পর্কে বিভিন্ন ভুল তথ্য পরিবেশন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন মালয়েশিয়া পুলিশ প্রধান। অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং প্রোপাগান্ডাসহ যেকোন প্রকার আইন বহির্ভূত কাজে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স অবস্থান জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, অপরাধ দমনে হাইকমিশন যেকোন সহযোগিতা করবে।   

হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের কিছু কর্মী দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়। তারা প্রতারণার জন্য মামলা করে এবং মামলার প্রেক্ষিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তল্লাশির সময় গ্রেফতারকৃতদের কিছু দিন পর কোম্পানি ও কাগজপত্র থাকা সাপেক্ষে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে তল্লাশির সময় তাদের গ্রেফতার না করার জন্য অনুরোধ করেন। ডিটেনশন সেন্টারে যারা রিমান্ড এবং অনেকে মামলার সাক্ষী হিসেবে মাসের পর মাস অপেক্ষা করে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া বা দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন। বিশেষ করে কাউকে মামলার সাক্ষী হিসেবে ডিটেনশন সেন্টারে না রেখে বাইরে থাকার এবং কাজ করার অনুমতি দিতে অনুরোধ করেন। 

হাইকমিশনারের এই আলোচনাকে গুরুত্ব দিয়ে আইজিপি বলেন, তিনি এ বিষয় বিবেচনা করবেন এবং  ইমিগ্রেশনের সাথে আলোচনা করবেন। এছাড়া বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, মালয়েশিয়া আগমনের পর বিমানবন্দরে অনেক সময় বাংলাদেশি টুরিস্টকে মালয়েশিয়া প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। তখন বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি এ ধরণের একটি ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে আইজিপি ইমিগ্রেশন’র সাথে আলাপ করবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

হাইকমিশনার উভয় দেশের পুলিশের মধ্যে প্রশিক্ষণ সেমিনার-সিম্পোজিয়াম ইত্যাদি বিনিময় করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বিষয়টি পুলিশ প্রধান সাদরে গ্রহণ করে বলেন, মানব পাচার, কাউন্টার টেররিজম, অপরাধ দমন এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে উভয় দেশ একসাথে কাজ করতে পারে। তিনি জানান, শীঘ্রই মালয়েশিয়া পুলিশের একটি টিম বাংলাদেশ সফর করবে।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর