ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার আদ্দিস আবাবায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে শোক দিবসটি পালন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে স্থানীয়-বিদেশি গণ্যমান্য অতিথি, ইথিওপিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এবং দূতাবাসের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সপরিবারে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণ শোক দিবসের বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানার দিয়ে সজ্জিত করা হয়। এ সময় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অর্ধনমিত করা হয়।
এরপর ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর কালরাতে শাহাদাতবরণকারী সকল শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং ইউনেস্কো মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করে শুনানো হয়।
এ সময় আগত অতিথিদের অংশগ্রহণে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তারপর দর্শক শ্রোতাদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সংক্ষিপ্ত চা-বিরতির পর প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে উৎসাহী অংশগ্রহণকারীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ আগস্টের সকল শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে কবিতা ও সংগীত পরিবেশন করেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ বিভিন্ন লেখক-কবির রচনা পাঠ করে শোনানো হয়।
এরপর শুরু হয় মুক্ত আলোচনা পর্ব। এ পর্বে আগত অতিথিরা বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল জাগরণে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
দিবসের সমাপনী বক্তব্যে দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তার বক্তব্যে বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের সন্ধানে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং প্রতিটি বাংলাদেশিকে তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করার জন্য আহ্বান জানান।
আগত বাংলাদেশিরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রূপায়ণে তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন। শোক দিবসে শাহাদাত বরণকারী সকল শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ও আত্মার মাগফেরাত প্রার্থনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনা করে দিনব্যাপী কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। কোরআন খতম শেষ করে বিশেষ দোয়া এবং মোনাজাত করা হয়।
আগত অতিথিদের অনেকে শিশু-কিশোরসহ দূতাবাসের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন আলোকচিত্র দিয়ে সাজানো প্রদর্শনী দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা বঙ্গবন্ধু কর্নারে পুস্তক এবং অন্যান্য প্রকাশনা আরও বাড়ানোর ব্যাপারে মন্তব্য করেন এবং এটিকে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারে রূপ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রেরিত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এবং তার জীবন ও কর্মের ওপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
শোক দিবস উপলক্ষে আদ্দিস আবাবার বিভিন্ন উপাসনালয়, অনাথাশ্রম এবং দাতব্য সংস্থালয়ে শোক দিবসের বিশেষ খাবার বিতরণ করা হয়।
এছাড়াও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রবাসী বেশ কিছু বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এসব প্রবাসী বাংলাদেশিরা যে আবাসিক কোয়ার্টারে কোয়ারেন্টিনে আছেন, সে সব স্থানে দূতাবাসের পক্ষ থেকে শোক দিবসের বিশেষ খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই