বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন, ম্যানচেষ্টার যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল শনিবার (১৫ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন, এক মিনিট নীরবতা পালন, বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শণ এবং আলোচনা সভা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সহকারী হাই কমিশনার দূতাবাসের সদস্যদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উল্লেখ্য যে, কোভিড-১৯ মহামরীর প্রেক্ষাপটে স্বাগতিক দেশের আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূতাবাস ঘরোয়াভাবে এই দিবস উদযাপন করে। দূতাবাসের প্রথম সচিব মাহমুদা খানমের সঞ্চালনায় পবিত্র গ্রন্থসমূহ থেকে পাঠের মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপরে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের উপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সহকারী হাই কমিশনার আবু নসর মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম তার বক্তব্যের শুরুতে শোকাবহ আগস্টে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, মা, মাতৃভূমি আর মাতৃভাষা যেমন অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কে আবদ্ধ, তেমনি বঙ্গবন্ধু, বাঙ্গালী জাতি আর বাংলাদেশ একই সুতোয় গাঁথা। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি মিত্র বাহিনীর বাংলাদেশ ত্যাগ, আর্ন্তজাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের অতি দ্রুত স্বীকৃতি পাবার ক্ষেত্রে সফল হন। কিন্তু ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ও বিয়োগান্ত ঘটনায় জাতির এই উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরপূর্তির শুভ মূহুর্তে জাতির পিতা ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পলাতক হত্যাকারীদের বিচারের কাজ সম্পূর্ণ করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জীবনের অন্যতম লক্ষ্য মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি সাধন এবং বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের স্বপক্ষে লড়াই করার উদ্দেশ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার কর্মসূচী এই স্বপ্নের ধারাবাহিক বাস্তবায়ন প্রয়াস।
সহকারী হাই কমিশনার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান। অনুষ্ঠানের শেষে ১৫ই আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ