তুরস্কের আঙ্কারায় জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। শনিবার রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দীকী কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এরপর দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নবনির্মিত প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রতিকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে দূতাবাসের নবনির্মিত বিজয় একাত্তর মিলনায়তনে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের কর্মর্কতা-কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিতে বাণী পাঠ করা হয়। এসময় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও অর্জনের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, বাঙালি জাতির কল্যাণে ও তাদের অধিকার নিশ্চিতকল্পে বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করে শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাই এনে দেননি বরং স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এবং বাঙালি জাতির মূল্যবোধ, আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রত্যেক বাংলাদেশিকে যার যার অবস্থানে থেকে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকারীরা বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনাকে বাংলাদেশের আপামর জনতার মন থেকে যেমন মুছে ফেলতে পারেনি, তেমনিভাবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশ আজ একটি সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর জন্য রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
শোক দিবসের অন্য কর্মসূচিতে বাংলাদেশ দূতাবাস তুর্কী রেড ক্রিসেন্ট (তুর্ক কিজলেই)-এর সহযোগিতায় আঙ্কারায় বসবাসরত ১০৫টি দুস্থ সিরিয়ান শরণার্থী পরিবারের মধ্যে খাদ্য-সামগ্রী বিতরণ করে। ২০১৬ সাল হতে প্রতি বছর দূতাবাস জাতীয় শোক দিবসে সিরীয় শরণার্থীদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে আসছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই