১৭ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:৩২

সিডনিতে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের পরিবেশনা ‘রুদ্ধ সময়েও মুক্ত প্রাণ’

নাইম আবদুল্লাহ

সিডনিতে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের পরিবেশনা ‘রুদ্ধ সময়েও মুক্ত প্রাণ’

অনলাইন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা।

বিযুক্ত সময়ে সংযুক্তির আহ্বানে আয়োজিত হয়েছে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের পরিবেশনা রুদ্ধ সময়েও মুক্তপ্রাণ। শনিবার স্কুলের ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত এই অনলাইন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক, কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং সিডনির প্রখ্যাত শিল্পীরা অংশ নেন।

সিডনি সময় সন্ধ্যা ৭টা এবং বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে যুক্ত হন দুই বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী, একুশে পদক প্রাপ্ত কিংবদন্তী নজরুল গীতি শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা ও বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের প্রবাদ প্রতিম শিল্পী সেলিনা আজাদ।

বাংলাদেশে ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরুর পর বাংলা স্কুলের সাধারণ সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান। এরপর স্কুলের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। স্কুলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য নাজমুল আহসান খান।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে একক সংগীত পরিবেশন করে রাসমিয়া, জেইনা, রেহনুমা, আরিক, রুশনান, এলভিরা, অর্ণা, দৈত সংগীতে অংশ নেয় নাদিন ও নারমিন, একক আবৃত্তি নিয়ে আসে মারজান, নাজিহা, সাফা, স্বপ্নীল, স্বাধীন, এষাণ ও মেহুলী, দৃপ্ত, আলিশা, আরিক ও ইয়াশফিন। একক নৃত পরিবেশন করে অলিভিয়া। স্বাধীনতার গল্প বলে সবাইকে অভিভূত করে তোলে অপলা ও অরূপা। স্কুলে বাংলা শেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সব শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানায় অস্কার। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটি পরিবেশনা অনলাইন দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করে।

সিডনির প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী লুৎফা খালেদ, তামিমা শাহরিন এবং ফায়সাল খালিদ শুভ, রুমানা ফেরদৌস লনি সংগীত পরিবেশন করে সবাইকে বিমোহিত করে তোলেন। বাংলাদেশের একান্ত নিজস্ব দোতারায় প্রাণের সুর তুলে আনেন আহমেদ তারিক। কবিতা পাঠ করেন বাচিক শিল্পী মৌমিতা চৌধুরী। নৃত্য শিল্পী অমৃতা পাল চৌধুরীর ধ্রুপদী নৃত্য অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

বাংলা সংগীতের তিন দিকপাল শিল্পী এই সুদূর প্রবাসে দীর্ঘ দুই দশকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি প্রসারে ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের গৌরবজ্জল ভূমিকার ভূয়সি প্রশংসা করেন। তারা স্কুলের উত্তরোত্তর আরও উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। তারা এক প্রাণবন্ত আলাপচারিতায় অংশ নিয়ে তাদের জীবনের স্মরণীয় ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য আবদুল জলিল ও শাহ আলম সৈয়দ। তারা স্কুলের আজকের অবস্থানের জন্য সবার অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং আগামীতেও প্রত্যেকের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রধান সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান ও রুমানা ফেরদৌস লনির পরিকল্পনায় এই অনলাইন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কারিগরি নিয়ন্ত্রণ, অঙ্গসজ্জা ও পরিচালনায় ছিলেন রাফায়েল রোজারিও।

সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন স্কুলের কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি ফয়সাল খালিদ শুভ ও স্কুলের সংগীত শিক্ষক রুমানা ফেরদৌস লনি। সহায়তায় ছিলেন শ্রেণি শিক্ষক আনজুমান আরা আইরিন, শায়লা ইয়াসমিন নুসরাত, অনিতা মণ্ডল, মাহবুব শাহরিয়ার, শারমিন সুলতানা ও সাজ্জাদ সিদ্দিক। প্রচারে ছিলেন ইয়াকুব আলী ও রুমানা খান মোনা। সিডনি সময় রাত ১২টায় বাংলা স্কুল সভাপতি মসিউল আজম খান স্বপন সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলে কোভিড মহামারির প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে মুখোমুখি শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও অনলাইনে শিক্ষাক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে চলছে। বাংলা স্কুল প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব বাংলা ভাষাভাষীর জন্য উন্মুক্ত থাকে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর