খরচপাতি
ফেসবুক বন্ধু : প্রায় বিনাখরচে চ্যাটবক্সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেওয়া যায়। বিস্ময়কর হলেও সত্য, এখানে একে অপরকে জোরাজুরি করে খাওয়াতে। ক্ষুদা লাগলে বিশ্বের যে কোনো দেশের সুস্বাদু খাবার গুগল থেকে ছবি ডাউনলোড করে একে অপরকে শেয়ার করে। মেগাবাইটের খরচ ভিন্ন ফেসবুক আড্ডায় বাড়তি খরচ নেই। ছবি খাওয়া শেষে এখানে কে বিল দিবে সেই ঝামেলাও পোহাতে হয় না।
বাস্তব জীবনের বন্ধু : বাস্তব জীবনের বন্ধুত্বে প্রায় সময়ই শোনা যায়, দোস্ত ট্রিট দে... কিন্তু কেউ কাওকে ট্রিট দেয় না। এখানে দেখা হওয়া মানেই খরচ। ফুটপাতের পাশে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাখানেক আলাপ করলেও কয়েক প্রস্থ চায়ের কাপ শেষ হয়ে যায়। দামি কোনো রেস্টুরেন্টে চেয়ার টানার সঙ্গে সঙ্গে ‘স্যার, কী খেতে চান’ বলে ওয়েটার সামনে এসে দাঁড়ায়। অর্ডার নিশ্চিতকরণ না পর্যন্ত তারা হাসি হাসি মুখে দাঁড়িয়েই থাকে। খাওয়া শেষে আরেক বিপদ। বিলের কাগজ দেখেও না দেখার অভিনয় চলে বহুক্ষণ। অবশেষে পকেট হাতড়ে অর্থের জোগান দিতে হয়। অর্থ তো আর না, মনে হয় কলিজা খুলে দিয়ে আসতে হচ্ছে।
প্রাণখুলে আড্ডা
ফেসবুক বন্ধু : মাথায় সব সময় স্ক্রিনশটের ভয় কাজ করে বিধায় ফেসবুকে মন খুলে কথা বলা যায় না। বেফাঁস মন্তব্য করলেই তাড়াতাড়ি এডিট বাটনে হাত চলে যায়। ভাইরালের দুশ্চিন্তায় সর্বদা তটস্থ থাকতে হয়!
বাস্তব জীবনের বন্ধু : স্ক্রিনশটের ভয় নেই। ফলে প্রাণভরে কথা বলা যায়। বেফাঁস মন্তব্য করলেও চটজলদি ভিন্ন প্রসঙ্গে গিয়ে কথার মোড় ঘুরিয়ে ফেলে।
হাতাহাতি, হিরো থেকে জিরো
ফেসবুক বন্ধু : অনলাইনেই কমেন্ট কিংবা চ্যাটবক্সে একজন আরেকজনকে মেরে চোখ-মুখ ফাটিয়ে দিতে পারে। যাকে মারা হচ্ছে সে দিব্যি বিছানায় শুয়ে কমলার জুস খেতে খেতে চোখ টিপে কমেন্ট করে, ‘উফ বড্ড লেগেছে রে।’
বাস্তব জীবনের বন্ধু : হাতাহাতির সম্ভাবনা থাকলে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয়। এখানে কোনো কিছুই মিথ্যা নয়। বাস্তব জীবনের বন্ধু যত বড় হিরোই হোক, আড্ডায় তাকে বন্ধুরা টেনেহিঁচড়ে জিরোতে নামিয়ে নিয়ে আসে।
ইমোটিকন
ফেসবুক বন্ধু : মুখ ভ্যাংগাতে, দাঁত বের করে হাসতে কিংবা চোখ টিপতে মুখের মানচিত্র বদল করতে হয় না। ছোট একটা ক্লিকেই সব ধরনের অনুভূতি প্রকাশ পায়।
বাস্তব জীবনের বন্ধু : জনসম্মুখে আচমকা মুখ ভেংচি কাটলে কিংবা হো হো করে হেসে উঠলে আশপাশের লোকজন অবাক বিস্ময়ে ভেংচিরত মুখের দিকে সন্দেহপ্রবণ চোখে তাকায়।