শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

রূপসাগরে ডোবে না কেউ

জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন
রূপসাগরে ডোবে না কেউ

রাত্রিশেষে শালুকঢাকা পদ্মবিলের কিনারা ধরে হাঁটবে সে। থামবে সেইখানে শালুকের আবরণ সরালে যেখানে স্পষ্ট হয় স্বচ্ছতোয়ার শরীর। আর জলে নেমে দু’পা গিয়ে নিচে চাইলেই সে দেখবে তার সম্পূর্ণ অবয়ব, মুখচ্ছবিসহ, যদি সেই প্রভাতের রবিকর তাকে ভাসিয়ে দিয়ে যায়।

আমি-ই তাকে পদ্মবিলের কথা বলেছিলাম। দিগন্তবিস্তৃত সেই জলাধারের রূপ সামান্য বালকের বর্ণনায় কী-ই বা ফোটে-কোনোমতে বোঝানো যায় না শ্বেতরক্তিম সেই আংরাখার যে শেষ নেই! কিন্তু সে বুঝেছিল নিশ্চয়, দেখেছিল সব-ই-দৃশ্যের আড়ালে রয়ে গেলেও।

আমি-ই তাকে শুনিয়েছিলাম ছিন্নবস্ত্র অমলিন কন্যা আর তার হিংসুটে বৈমাত্রেয় ভগিনীর গল্প। অমলিন কন্যা পদ্মবিলে ডুব দিয়ে তীরে উঠে দেখে রাজকন্যার পোশাকে অলঙ্কারে সে ভুবনমোহিনী; দেখাদেখি তার হিংসাগ্রস্ত ভগিনীটিও ডুব দেয় এক-ই পদ্মবিলে। কিন্তু তীরে উঠে দেখে, অলঙ্কার নয়, জলজ কীট জড়িয়ে আছে তার শরীরে, মখমল মসলিন নয়, চিরপরিহিতা কুদর্শনা সে যেন ভিখারিনীই কেবল।

গল্প শুনে সে আমাকে আবার জড়িয়ে ধরেছিল। বলেছিল, তুই যা বলিস, সব-ই সত্যি হয়। এটিও হবে, তাই না? আমি তার দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, এ তো কেবল-ই গল্প। বইয়ে পড়া গল্প। ন-দশ বছর-ই বয়স তো তখন আমার। না হলে বলতাম, গল্প কখনো সত্যি হয় না। আর সে-ও তার সহজ বিশ্বাসে বলত, নিশ্চয়ই হয়।

২.

কোলে তুলে নেওয়ার মতো ছোট তখন আমি ছিলাম না, তবু মাসি আমাকে দেখামাত্র কোলে তুলে নিয়েছিল। স্টেশনে নেমে মামা পালকিতে উঠেছিলেন অন্য কোনো যান না-থাকায়। আর আমি এক পশ্চিমা মাঝির কাঁধে বসে এসেছিলাম পদ্মবিলের পাড় বরাবর ছড়ানো সবুজ পাতার মাঝে ফোটা হাজার শালুকের মেলা দেখতে দেখতে। চার মাইল রাস্তা। প্রভাতসূর্যে তখন তাপ-ও এসেছিল। তাই বুঝি মাসি আমাকে দেখেই কোলে তুলে নিয়েছিল। বয়স্ক মা-বাবা আর বিধবা দিদির সংসারে তখনো কিশোরী একলা মাসি আমাকে তার জীবনের আলো-ই ভেবেছিল বুঝি। হাত-পা ধুইয়ে, মুখ মুছিয়ে খাওয়ায় সে আমাকে আর তেমনি কোলে নিয়েই বেড়িয়ে যায় নিকট প্রতিবেশীদের দেখাতে।

মামাবাড়ির দুইপাশে পুকুর, তার পেছনে আম-কাঁঠালের বাগান, ঘন বাঁশের ঝাড়। পুকুরের পাড়ে পুরনো দিনের দালান, কাচারিবাড়ি। অন্য দু’পাশেও বাড়ির সীমানা অনেক দূর ছড়ানো। বাঁশঝাড়, বাগিচা, জঙ্গল পেরিয়ে মাঝখানে পায়ে হাঁটা রাস্তা ধরেই কেবল যাওয়া যায় সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশীর বাড়িতে। গ্রামের মূল লোকালয়ের শুরুও সেখানেই। গাছপালায় ঘেরা অনেক কটি বাড়ি-ই পরপর সাজানো ইউনিয়ন বোর্ডের রাস্তা বরাবর। রাস্তার পাশে দিয়ে চলে যায় বর্ষার স্রোত নিয়ে পদ্মায় নেমে যাওয়া খালটি। এপাশে আবার জঙ্গল, বাঁশঝাড়, ভিন্ন লোকালয়।

পায়ে হাঁটা রাস্তা ধরে এলে পাড়ার প্রথম বাড়িটিই তাদের-আমার গল্পে মুগ্ধ বিশ্বাসী শ্রোতার। মাসির সখী বলা যায়, যদিও মাসি তখনো হাঁটু পর্যন্ত নামা জামাই পরত আর তার সখীর পরনে শাড়ি। মাসির চেয়ে বড় সে নিশ্চয়-ই তবুও মাসির কোল থেকে আমাকে নেয় সে, বুকে জড়িয়ে ধরে। একটু কাঁদেও বুঝি, মাসিও। মাত্র কিছুকাল আগে মাতৃহীন আমি-আত্মীয়স্বজনের কান্নায় তখনো অভ্যস্ত। নিজে না কাঁদলেও তাদের কান্নার কারণ বুঝি। ততক্ষণে তার ছোট ভাইবোন কটিও চারপাশ ঘিরে দাঁড়ায়। বর্ষার ধারায় কোনো ধুয়ে যাওয়া বারান্দায় উঠে আসে সে। বারান্দায় কাঠের চেয়ারে বসা শীর্ণকায় প্রৌঢ় আমাকে দেখে আমার মৃত মায়ের নাম নিয়ে বলেন, তার-ই ছেলে কিনা আমি। মাসি ও সখী দুজনেই চোখ মুছে মাথা নাড়ে। বারান্দায় বসিয়ে ঘর থেকে নাড়ু, মোয়া ডালায় করে আমার জন্য নিয়ে আসে সে। আমি প্রায় কিছুই খাই না, মাসিও। আমার হাফপ্যান্টের পকেটে সেসব ঢুকিয়ে দেয় সে। ঘরে কি বাইরে আর কাউকে দেখি না। পরে জানি, অনেক আগে মাতৃহীনা সে ছোট কটি ভাইবোন ও রুগ্ন পিতাসহ এই সংসারের মূল।

গ্রামের স্কুল-সকালে শুরু হয়ে দুপুরের পরপর-ই শেষ হয়ে যেত। একলা হেঁটে মামাবাড়িতে ফেরার পথে আমি স্কুলের পেছনে সরষের হলুদ প্রান্তরের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, কি দেখতাম ভরা আমনের খেতে ধানের শীষে পাখির ওড়াউড়ি। কখনো দেখতাম অড়হরের ডালে ল্যাজঝোলা পাখি বসে গাছ দুলিয়ে আবার দূরে চলে যায়।  স্কুলের সীমানা ছাড়িয়ে বাজার, বাজারের মুখে পোস্ট অফিস। কখনো ডাকপিয়ন চলে না-গেলে পোস্ট অফিসের বারান্দায় তার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতাম

ওই দিন বিকালেই সইয়ের বাড়িতে আসে সে। দিদিমা, বড়মাসিসহ চারজনের মাঝখানে বসি আমি। সবার আদরের দুলাল, নয়নের মণি যেন। আমার নানা গুণের কথা মাসি বলে। এই বয়সেই বড় বড় সব গল্পের বই পড়তে পারি আমি। চাই কি শোনাতেও পারি সেসব গল্প। এই অল্প সময়ের মধ্যে আমার ক্ষমতার কথা মাসি জানলো কী করে ওই বয়সে অমন ভাবা স্বাভাবিক ছিল না। তাই গর্বে বুক ভরেছিল নিশ্চয়। গল্পে গল্পে সন্ধ্যা এসে গেছে প্রায় বুঝলে বড় মাসি বৈকালিক গৃহকর্মের জন্য উঠে যেতে চায়। ছোটমাসির সই তার হাত ধরে টেনে বসিয়ে বলে, আমি-ই করে দিচ্ছি এবং দ্রুত উঠে সে বৈকালিক কর্মে হাত লাগায়। বোঝা যায়, এটি তার জন্য নতুন কিছু নয়।

দু-একদিন পরপর-ই সে বিকালে জঙ্গল বাগিচা পার হয়ে হাঁটা পথ ধরে গল্প শুনতে আসত। কখনো বড়মাসি বই পড়ে শোনাত, কখনো বা আমি আমার পড়া গল্প মুখে মুখে বলতাম। ছোট মাসির লেখাপড়ায় তেমন মন ছিল না। গ্রামের প্রাইমারি স্কুল শেষ করে আর পড়েনি সে। বাড়িতেও না। তবু গল্প শোনায় তারও মন ছিল। সন্ধ্যার আলো জ্বলবার আগেই সবাইকে উঠতে হতো। সখীটিকেও। ঘরে ছোট ছোট ভাইবোন, রুগ্ন পিতা ভুলতে পারে না সে কিছুতেই। কখনো দেরি হলে বেশ কদিন আর আসত না সে। মাসি বলত, ওর বাবাই হয়তো দায়ী এ জন্য।

ওরকম সময়ে বাগিচা, জঙ্গল, বাঁশঝাড় পার হয়ে হাঁটাপথ ধরে মাসিকে নিয়ে, কখনো বা আমি একলাই চলে যেতাম তার বাড়িতে। কখনো ভাইবোনের আবদারে অস্থির, কখনো পিতার সেবায় ব্যস্ত, কখনো রান্নাঘরে আগুনের তাপে স্বেদময়। সে আমাদের দেখলেই হেসে দাঁড়াত সামনে এসে। জড়িয়ে ধরত বুকে আর আমিও তাকে ছাড়তে চাইতাম না। কখনো তাকে ঘরে না-পেলে শুনতাম গ্রামের শেষে পানের বরজে অসুস্থ পিতার বদলি খাটতে গেছে সে। কখনো বা দেখেছি ঘরের চালে উঠে পাতলা হয়ে যাওয়া আস্তরে খড় গুঁজে দিয়ে চালা বাঁধছে। আমি বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতাম। বড় মাসি, ছোট মাসি বা অমন কাউকে ওই-রকম কিছু করতে দেখিনি বলেই হয়তো।

৩.

আমি মামাবাড়ি যাওয়ার কিছু দিন পরেই ছোট মামা শহর থেকে এসে আমায় স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন। আমার বয়সে যে ক্লাসে স্বাভাবিক তার চেয়ে দুই ধাপ ওপরেই প্রায়। আসলে এক শ্রেণি ওপরই কিন্তু তখন স্কুলের বছর প্রায় শেষ, ক’ দিন পরেই বার্ষিক পরীক্ষা। পাস করলে তো দুই ক্লাস উপরেই চলে যাব শিক্ষকদের এই কথায় মা রাজি হয়ে যান। আমার নানা গুণের মধ্যে আরও একটি যোগ হয়।

গ্রামের স্কুল-সকালে শুরু হয়ে দুপুরের পরপর-ই শেষ হয়ে যেত। একলা হেঁটে মামাবাড়িতে ফেরার পথে আমি স্কুলের পেছনে সরষের হলুদ প্রান্তরের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, কী দেখতাম ভরা আমনের খেতে, ধানের শীষে পাখির ওড়াউড়ি। কখনো দেখতাম অড়হরের ডালে ল্যাজঝোলা পাখি বসে গাছ দুলিয়ে আবার দূরে চলে যায়। স্কুলের সীমানা ছাড়িয়ে বাজার, বাজারের মুখে পোস্টঅফিস। কখনো ডাকপিয়ন চলে না-গেলে পোস্ট অফিসের বারান্দায় তার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতাম। পরে পড়তি রোদে বাজারের শেষে পদ্মামুখী স্রোতের খাল পার হয়ে, বাঁশঝাড় জঙ্গলের ছায়ার গ্রামে ঢুকলে বড় মন খারাপ করত। আর তখন দূর গ্রামে ফেলে আসা স্বজনদের চেয়েও আমার গল্পের মুগ্ধ শ্রোতাটির কথাই মনে পড়ত বেশি।

ভরা বর্ষায় রাস্তার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া খালটি দুই কূল ছাপিয়ে ছুটত বড় খালের সঙ্গে মিশে পদ্মায় যাওয়ার জন্য। বড় খালও তখন যেন তীরহীন নদী। বাঁশের সাঁকো পার হয়ে ওপারে গেলে তবেই স্কুল। খালের দুই পাড় থেকে কয়েকটি বাঁশ পাশাপাশি রাখায় সাঁকোর দুই মুখ প্রশস্ত হলেও মাঝখানে পাতা কেবল একটি মোটা বাঁশ। আর বেশ উঁচুতে বাঁধা আর একটি সরু বাঁশ ধরে সেটি পার হতে আমার শরীর কাঁপত। একদিন সাঁকো পার হওয়ার সময়ে এক বাঁশের মাঝখানে এসে এত কাঁপতে থাকি যে চোখ বন্ধ করে ফেলি। তার পর কিছু যেন মনে পড়ে না, মনে পড়ে চোখ খুললে দেখি সাঁকোর প্রশস্ত প্রান্তে দাঁড়ানো আমি। আমার শ্রোতাকুল নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করে যে সেটি আর কিছু নয় কোনো অশরীরী শক্তিই আমাকে একবাঁশের অংশ পার করিয়ে দিয়েছিল। এরকম ঘটনা আরও দু-একটি ছিল।

গরমের সময়ে বড়ঘরের বারান্দায় মাদুর পেতে শুতাম আমি। আর কেউ নয়। মাসিরা, দিদিমা কি দাদু যার যার ঘরে-দরজা দেয়া। ওই বয়সে...তখনো নিতান্ত বালক-ই তো, কেন একলা শোয়ার ব্যবস্থা বুঝিনি। সেটি কি এ জন্য যে, শীতকালে লেপের মধ্যে ছোটমাসি আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমুলেও গরমের সময়ে পারত না-তার শোয়া খুব খারাপ ছিল। এজন্যই কি? অথবা বন্ধ ঘরের গরম আমার সইত না?

অমনি এক রাতে বারান্দায় একলা শোয়া আমার হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। উঠে বসি। মৃদু জ্যোৎস্নার রাত্রী। সদর দরজার দিকে চেয়ে দেখি সাদা কাপড়ে মোড়া এক মূর্তি ধীরে হেঁটে আমার দিকেই এগিয়ে আসে। বিবশ আমি চোখ বন্ধ করি। কতক্ষণ পরে জানি না চোখ খুলে দেখি সদর দরজার পাশে মূর্তিটি তেমনি দাঁড়ানো। আর মেঘ-জ্যোৎস্নার রাতে তখন মেঘ সরে যাওয়ায় সাদা জ্যোৎস্না সদর দরজার পাশে দাঁড়ানো মানকচুর পাতাটিকেই মূর্তি বানিয়েছে। আমার শ্রোতাকুল জ্যোৎস্নার কারুকাজ বিশ্বাস করে না। মাসির সখীটি তো কোনোমতে নয়।

স্কুল থেকে অথবা বাজার থেকে ফেরার সময়ে বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকলে রাস্তা কম পড়ত। ঘন বাঁশঝাড়ের নিচে দিয়ে পথ। পাতাঝরার দিনে শুকনো বাঁশপাতা এমন পুরু জাজিম বানাত যে, এক পা তুলে আরেক পা ফেললে পা ডুবে যেত সেই জাজিমে, আর মনে হতো কেউ যেন ঠিক পেছনেই হাঁটছে। পা ফেলার সঙ্গে সঙ্গে সে-ও ফেলে পা, শোনা যায় তার পায়ের আওয়াজ, বাতাসে ভাসে সেই শব্দ। আমি বাঁশপাতায় মোড়া সামান্য পথ দৌড়ে পার হয়ে আসি। এই গল্পেও তারা অশরীরীর চিহ্ন খুঁজে পায়। বাঁশবাগান চিরকাল-ই অজানা শঙ্কায় ভরা, তারা বলে। আর সেই শঙ্কা আদৌ অমূলক নয়। সেটি কাটানোর ক্ষমতা সবার থাকে না।

৪.

ভরা বর্ষার শেষে, শ্বেত শরতের কাল চলে গেলে হালকা কুয়াশার হেমন্তে বৈকালিক গল্পের আসর বসে আবার। অনেক দিন পর সে-ও আসে। বর্ষার ধারায় সিক্ত সজীব সে নয়। শরতের জ্যোৎস্না তার মুখে ছিল না, ম্লানমুখী বিষণ্ন সখীকে মাসি তার বাড়ি গিয়ে ডেকে এনেছিল। কখনো অসুস্থ, কখনো কর্মহীন পিতা তার, নিজে পিতার বদলি খেটে, বনেবাদাড়ে ঘুরে, শাকপাতা এনে, ঘরের পেছনে সবজি ফলিয়ে অর্ধাহারের ব্যবস্থা করে সে, এ সবই জানা। মাসি তার সই-এর দুঃখ কমাতে চেষ্টা করে কিন্তু সখীটি সংকোচে ও লজ্জায় সর্বদা ম্রিয়মাণ। এসব নানা কথাবার্তায় সেদিনের বৈকালিক আসর জমে না। বড়মাসি শেষে জিজ্ঞাসা করে, হ্যাঁ রে, তোর বাবা নাকি বিয়ের চেষ্টা করছে? এমনিতেই ভেজা চোখ তার, এবার জলে ভরে যায়। আমাকে কে বিয়ে করবে দিদি? আস্তেই বলে সে। আর আমি গেলে সংসার-ই বা চলবে কী করে? সে-কথা সবাই জানে, তবুও মাসি বলে, শুনি তোর বাবা নাকি আবার বিয়ে করবে? ম্লান স্বর শোনা যায়, তাকেই বা মেয়ে দেবে কে?

সে দিন আর কোনো গল্প হয় না। যে যার কাজে ফিরে গেলে আমি লণ্ঠন জ্বালিয়ে মাদুর পেতে বারান্দায় বসি স্কুলের বইখাতা নিয়ে। মাসি এসে পাশে বসে। আমার বইপত্র নিয়ে নাড়াচাড়া করে। নিজেরও কিছু বইপত্র আছে তার। হাইস্কুলে পড়বে বলে মামারা কিনে দিয়েছিল। অনেক পুরনো সে সব বই নিয়েও কখনো সে বসে আমার মাদুরে। কিন্তু আজ নয়। আজ সে এসে মাদুরের এক পাশে শুয়েই পড়ে। অঙ্ক কষতে থাকি আমি। অনেকক্ষণ চোখ বন্ধ করে রেখে বলে সে, মেয়েদের বিয়ে না-হওয়া বড় কষ্টের, তাই না? আমি একটু চমকে তার দিকে তাকাই, বিয়ের কথা শুনেই বুঝি। খেয়াল করে দেখি, আজ সে শাড়ি পরা। মনে পড়ে, সেই প্রথম দিন তাকে দেখার কিছু কাল পর থেকেই শাড়ি পরে সে। আর বিয়ে হলেই বা কী? কষ্ট তো তাতেও কমে না! বাল্যবিধবা বড় বোনের কথা ভেবেই বুঝি বলে আবার।

আমার বয়স দশ। প্রাইমারি স্কুল শেষ প্রায়। মামাবাড়ি থেকে লেখাপড়া করি। দাদুর সঙ্গে হাটবাজারে যাই। পোস্টঅফিসে চিঠি আনতে যাই। ছুটিছাটায় ছোটমামা বাড়ি এলে ঝাড় থেকে বাঁশ কেটে সারা দিনের রোদে মামার সঙ্গে বাড়ির চারপাশে বেড়া বাঁধি। আমি কি করব। আমার কোনো-ই ক্ষমতা নেই। মাসিরা যা-ই বলুক না কেন!

৫.

স্কুলের শেষে ফেরার পথে পোস্টঅফিসে যাই। ডাকপিয়ন তখনও ফেরেনি। হাটের দিনে সে বেশি দূরে যায় না। হাটেই চিঠি বিলি করে। যদি মামাদের কোনো চিঠি থাকে এই ভেবে দেরি করি। শেষে বেলা প্রায় পড়ার মুখে ঘরে ফিরি-বাঁশবাগানের শুকনো পাতা মাড়িয়ে, বাড়ির পেছনের সদ্যবাঁধা বাঁশের দরজা খুলে।

রান্নাঘরের বারান্দায় দেখি সবাই বসা। মাসির সইকে নিয়ে আলাপ-কাছে এলেই বুঝি। সারা দিন অন্যের খেতে, মাঠে, ফলবাগানে, ঘোরাঘুরি তার নিত্যকর্ম জানি বলেই রোদে পোড়া ঘামে ভেজা চেহারা দেখে অবাক হই না। তবুও আমি কাছে এলে তাদের কথাবার্তা থেমে যায়। বইখাতা রাখার জন্য ভেতর বাড়িতে যাই। শোবার ঘরের বারান্দার চালে ঝোলানো কাঠের তাকে বইখাতা রেখে ফিরে আসি। রান্নাঘরের দিকে মোড় নেওয়ার মুখে শুনি দিদিমার গলা, বিয়ে হবে তোর, সে তো ভালো কথা, কাঁদিস কেন? কিন্তু বিয়ের পর মাসি, বিয়ের পর-কে রাখবে আমাকে-, কেঁদেই বলে সে, বলে, বুকের কাপড় সরিয়ে দেয়। আর সে মুহূর্তে, রান্নাঘরের বারান্দার দিকে এগোনোর মুখে, আমি দেখি, তার খোলা বুক, মাসিদের কি দিদিমা কারও মতোই নয়। প্রায় আমার-ই মতো।

৬.

বিয়েবাড়ির কোনো চিহ্ন সেখানে ছিল না। তোলা বিয়ে। কনেকে নিয়ে রাখা হবে বিবাহোচ্ছুক পাত্রের গ্রামে-কোনো বাড়িতে। যথাকালে বিবাহস্থলে পৌঁছে দিলে চলবে আনুষ্ঠানিকতা। অসমর্থ পিতার কন্যার জন্য বিবাহরীতিটি নতুন কিছু নয়। তবুও দুপুরের মুখে, ভিন্নগ্রামে কনেকে নিয়ে যাওয়ার আগে, মাসির সঙ্গে তাকে দেখতে যাই আমি। রঙিন তাঁতের শাড়িতে তাকে কনে বউটির মতো-ই দেখায়। মাসি কাছে গিয়ে ক্রন্দমুখী তাকে জড়িয়ে ধরে। আমাকেও হাত বাড়িয়ে ধরে সে। বলে, তুই যা বলিস সব-ই তো সত্যি হয়। তাই না? আমি জবাব দিই, হ্যাঁ।

আশপাশের বাড়ির দু’চারজন পড়শি ছাড়া আর কাউকেই দেখি না। কেবল ভাইবোন কটি তাকে ঘিরে উঠানে দাঁড়ানো। বারান্দায় একটি ফুলপাতা আঁকা টিনের তোরঙ্গ। তার বাবা সেটি হাতে নিয়ে নেমে আসে। তিন-চার ঘণ্টার হাঁটা পথ। এখুনি বেরুতে হবে...বলে তার বাবা ইউনিয়ন বোর্ডের রাস্তার দিকে পা বাড়ায়। সে-ও চলতে শুরু করলে আমরা পেছনে পেছনে যাই। বড় রাস্তার মোড়ে গিয়ে তাকে দেখি। পেছন ফিরে ফিরে তাকায় সে বারবার।

ঘরে ফেরার মুখে আমরা কোনো কথা বলি না। বাড়িতে ফিরেও নয়। অন্তত তার কথা কেউ-ই বলে না।

৭.

অনেক অনেক রাতে ঘুম ভাঙে আমার। স্পষ্ট বুঝি পাশে কেউ বসে আছে। গায়ে তার হাতের স্পর্শ পাই। মুহূর্তে উঠে বসি। সেটিও জ্যোৎস্নার রাত্রি। চাঁদ অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় তার কিছু আলো বারান্দায় আমার মাদুরে পড়েছে। সেই আলোয় দেখি, বিবাহের কন্যা আমার পাশে। আমি কথা বলতে চাইলে সে আমার মুখে হাত চাপা দেয়। কাউকে ডাকিস না। এই আমি চলে যাচ্ছি... বলে ওঠে সে। ওঠার মুখে বলে, ওরা আমাকে নিলো না। সাদা জ্যোৎস্নায় তার চোখে জলের রেখা স্পষ্ট দেখা যায়। তখন প্রায় নিঃশব্দে বলে সে, না থাক আমার কিছু... আমি-ও তো মেয়ে! তার সঙ্গে আমিও উঠে দাঁড়াই। আমাকে আবার, শেষবারের মতোই বুঝি, জড়িয়ে ধরে সে। বলে, তোর কথা সব-ই তো সত্যি হয়, তাই না? আমি কিছু না-ভেবে, কোনো কথা না-ভেবে, সত্য কী অথবা কী মিথ্যা না-ভেবে। চোখ বন্ধ করে বলি, হ্যাঁ।

আমাকে ছাড়ে সে। বারান্দা থেকে নেমে বাইরের দরজার দিকে যায়। জ্যোৎস্নার আলো তখন আবার সেই মানকচুর পাতাটিকে কনেবৌ বানিয়ে দেয়।

৮.

পরদিন সারা গাঁ খুঁজেও তাকে কেউ পাবে না। আমি যদিও জানি সে কোথায়। জানি, সে বড়রাস্তার শেষে পদ্মবিলের কিনারা দিয়ে যাওয়া পায়েহাঁটা পথ ধবে হাঁটবে। জ্যোৎস্নার শেষে না-আলো না-অন্ধকারের প্রভাত তার সামনে পথরেখা স্পষ্ট করে দিলে, সে তার সামনে পাশে পদ্মবিলের শ্বেতরক্তিম শালুক আর সোনালি পদ্মের যোজনবিস্তৃত প্রান্তর দেখবে। আকাশের কোলে লাল মেঘের নিচে তখন আলোর আঁধার। সেই আলোয় চিনে নেবে সে পদ্মবিলের স্বচ্ছতোয়া স্থানটিকে। লাল দিগন্তের দিকে মুখ করে জলে নামবে সে। দুই পা নেমে আরও দুই পা গিয়ে প্রথম ডুবটি দেবে, তারপর উঠে আসবে। রক্তিম দিগন্তের উৎস তখন তার সম্মুখে। জলের কিনারায় দাঁড়াবে সে, মাথা সামান্য নিচু করে দেখবে তার মুখচ্ছবি। দেখবে, জলে কাঁপে নিরাবরণ, নিরাভরণ সৃষ্টির প্রথম নারী। ঈভ।

এই বিভাগের আরও খবর
একগুচ্ছ কবিতা
একগুচ্ছ কবিতা
লাল শাপলার বক্ষটান
লাল শাপলার বক্ষটান
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাসাহিত্য
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাসাহিত্য
রূপকথার গান গানের রূপকথা
রূপকথার গান গানের রূপকথা
একটি চুমুর আকাঙ্ক্ষা
একটি চুমুর আকাঙ্ক্ষা
প্রভাত পাখির গান
প্রভাত পাখির গান
রঙ বদলের খেলা
রঙ বদলের খেলা
বিষণ্নতা
বিষণ্নতা
একা দাঁড়িয়ে একটি গাছ
একা দাঁড়িয়ে একটি গাছ
চূর্ণ পঙ্ক্তি
চূর্ণ পঙ্ক্তি
ইস্কুলকালের ইরেজার
ইস্কুলকালের ইরেজার
আঁকারীতি
আঁকারীতি
সর্বশেষ খবর
আজকের রায় প্রমাণ করে স্বৈরশাসকেরাও বিচারের ঊর্ধ্বে নয়: সাইফুল হক
আজকের রায় প্রমাণ করে স্বৈরশাসকেরাও বিচারের ঊর্ধ্বে নয়: সাইফুল হক

এই মাত্র | রাজনীতি

‘একটি দল ক্ষমতায় যেতে প্রলাপ বকছে’
‘একটি দল ক্ষমতায় যেতে প্রলাপ বকছে’

৫ মিনিট আগে | ভোটের হাওয়া

চলচ্চিত্র পরিবারের লোকজনও ছেলেদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন: কঙ্গনা
চলচ্চিত্র পরিবারের লোকজনও ছেলেদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন: কঙ্গনা

৫ মিনিট আগে | শোবিজ

তরুণদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ফরাসি কোচ
তরুণদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ফরাসি কোচ

৯ মিনিট আগে | মাঠে ময়দানে

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে কেরানীগঞ্জে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে কেরানীগঞ্জে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

৯ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

নভেম্বরের ১৬ দিনে এলো ১৭০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
নভেম্বরের ১৬ দিনে এলো ১৭০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

১০ মিনিট আগে | অর্থনীতি

চট্টগ্রামে নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার ২
চট্টগ্রামে নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার ২

১১ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খাগড়াছড়িতে মহিলা দলের সমাবেশ
খাগড়াছড়িতে মহিলা দলের সমাবেশ

১৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে নেজামে ইসলাম পার্টির বৈঠক
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে নেজামে ইসলাম পার্টির বৈঠক

১৮ মিনিট আগে | রাজনীতি

সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে থাকবে চীন
সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাশে থাকবে চীন

২৩ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ৫ আগস্টের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রতীক
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ৫ আগস্টের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রতীক

২৪ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সৌদিতে দুর্ঘটনায় ভারতের এক পরিবারেরই মারা গেছেন ১৮ জন!
সৌদিতে দুর্ঘটনায় ভারতের এক পরিবারেরই মারা গেছেন ১৮ জন!

২৫ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আজকের রায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে : প্রিন্স
আজকের রায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে : প্রিন্স

৩০ মিনিট আগে | রাজনীতি

পাবনায় শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
পাবনায় শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

৩৪ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

‘আল্লাহ আমাকে হায়াত দেন, যেন শেখ হাসিনার ফাঁসি দেখে যেতে পারি’
‘আল্লাহ আমাকে হায়াত দেন, যেন শেখ হাসিনার ফাঁসি দেখে যেতে পারি’

৩৫ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

বগুড়ায় কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
বগুড়ায় কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

৪৩ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

২৮ নেতাকে দলে ফেরাল বিএনপি
২৮ নেতাকে দলে ফেরাল বিএনপি

৪৩ মিনিট আগে | রাজনীতি

নাচের তৃপ্তি অভিনয়ে পাইনি: মালাইকা
নাচের তৃপ্তি অভিনয়ে পাইনি: মালাইকা

৫৮ মিনিট আগে | শোবিজ

ধানের শীষের বিজয় মানেই মানুষের মুক্তি: আজহারুল
ধানের শীষের বিজয় মানেই মানুষের মুক্তি: আজহারুল

১ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

কবে আসছে এফ-৪৭?
কবে আসছে এফ-৪৭?

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

অপহরণের ৫ দিনেও উদ্ধার হয়নি দশম শ্রেণির ছাত্রী
অপহরণের ৫ দিনেও উদ্ধার হয়নি দশম শ্রেণির ছাত্রী

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দেখতে বিসিবি সভাপতিকে আমন্ত্রণ জানাল বাফুফে
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দেখতে বিসিবি সভাপতিকে আমন্ত্রণ জানাল বাফুফে

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

রাজসাক্ষী মামুনের ৫ বছরের সাজায় শহীদ পরিবারের অসন্তোষ
রাজসাক্ষী মামুনের ৫ বছরের সাজায় শহীদ পরিবারের অসন্তোষ

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেখ হাসিনার রায়ে নারায়ণগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ
শেখ হাসিনার রায়ে নারায়ণগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ ফিরে পেলেন খুরশিদ আলম মতি
ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ ফিরে পেলেন খুরশিদ আলম মতি

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা
মোংলায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ বিষয়ক সমন্বয় সভা

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

মশা নিধনে চসিকের বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম
মশা নিধনে চসিকের বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে রাবিতে মিষ্টি বিতরণ
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে রাবিতে মিষ্টি বিতরণ

১ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

উগান্ডাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা বাংলাদেশের
উগান্ডাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভসূচনা বাংলাদেশের

১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

সর্বাধিক পঠিত
যে কারণে আপিল করতে পারবেন না হাসিনা
যে কারণে আপিল করতে পারবেন না হাসিনা

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

অগ্নিসন্ত্রাসের জনক একজনই: সোহেল তাজ
অগ্নিসন্ত্রাসের জনক একজনই: সোহেল তাজ

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ধানমন্ডি ৩২-এ নেওয়া হচ্ছে দুটি বুলডোজার
ধানমন্ডি ৩২-এ নেওয়া হচ্ছে দুটি বুলডোজার

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

আমি আসলে খুব কষ্ট পাচ্ছি : শেখ হাসিনার আইনজীবী
আমি আসলে খুব কষ্ট পাচ্ছি : শেখ হাসিনার আইনজীবী

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন ছাত্র-জনতা
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন ছাত্র-জনতা

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জনতার উল্লাস
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জনতার উল্লাস

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ট্রাইব্যুনালে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া চলছে
ট্রাইব্যুনালে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া চলছে

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মক্কা-মদিনা রুটে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, নিহত অন্তত ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী
মক্কা-মদিনা রুটে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, নিহত অন্তত ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী

৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় বিমানঘাঁটি,
মুখোমুখি ভারত-চীন
১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় বিমানঘাঁটি, মুখোমুখি ভারত-চীন

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের অপরাধ প্রমাণিত
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের অপরাধ প্রমাণিত

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে যা বলল ভারত

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

রাজধানীতে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ
রাজধানীতে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ

১৯ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

হাজার বার ফাঁসি দিলেও হাসিনার জন্য তা কম হবে: স্নিগ্ধ
হাজার বার ফাঁসি দিলেও হাসিনার জন্য তা কম হবে: স্নিগ্ধ

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার রায়ের খবর
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার রায়ের খবর

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

কেন ধনী যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ মানুষ এখনও খালি পেটে ঘুমায়?
কেন ধনী যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ মানুষ এখনও খালি পেটে ঘুমায়?

১৬ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে ৫ অভিযোগ
হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে ৫ অভিযোগ

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিপিএল থেকে নাম প্রত্যাহার তামিমের
বিপিএল থেকে নাম প্রত্যাহার তামিমের

৭ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি মামুনকে
ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি মামুনকে

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যা জানালো জামায়াত
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যা জানালো জামায়াত

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

স্ত্রী-মেয়েসহ সাবেক মন্ত্রী নানকের ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
স্ত্রী-মেয়েসহ সাবেক মন্ত্রী নানকের ৫৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া করলেন চিফ প্রসিকিউটর
শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া করলেন চিফ প্রসিকিউটর

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

চুক্তি অনুসারে হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া ভারতের দায়িত্ব : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
চুক্তি অনুসারে হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া ভারতের দায়িত্ব : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলা নিয়ে মনস্থির করে ফেলেছি: ট্রাম্প
ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলা নিয়ে মনস্থির করে ফেলেছি: ট্রাম্প

১২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আগুন সন্ত্রাসীদের গুলির নির্দেশ
আগুন সন্ত্রাসীদের গুলির নির্দেশ

১৯ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

মহেশ বাবু–রাজামৌলির ‘বারাণসী’র চোখ ধাঁধানো টিজার
মহেশ বাবু–রাজামৌলির ‘বারাণসী’র চোখ ধাঁধানো টিজার

১০ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

টিএসসিতে হাসিনার রায় সরাসরি সম্প্রচারের আয়োজন
টিএসসিতে হাসিনার রায় সরাসরি সম্প্রচারের আয়োজন

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে থেকে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে থেকে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

৬ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

মামলা নিয়ে মুখ খুললেন মেহজাবীন
মামলা নিয়ে মুখ খুললেন মেহজাবীন

৭ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

প্রিন্ট সর্বাধিক
শেখ হাসিনার রায় আজ
শেখ হাসিনার রায় আজ

প্রথম পৃষ্ঠা

আন্ডার সঙ্গে ডান্ডার বন্ধন, সর্বনাশের সাত লক্ষণ
আন্ডার সঙ্গে ডান্ডার বন্ধন, সর্বনাশের সাত লক্ষণ

সম্পাদকীয়

ইসলামী ব্যাংক থেকে এক পরিবার তুলেছে ৫০ হাজার কোটি
ইসলামী ব্যাংক থেকে এক পরিবার তুলেছে ৫০ হাজার কোটি

প্রথম পৃষ্ঠা

অপেক্ষা ৬৩ আসনে
অপেক্ষা ৬৩ আসনে

প্রথম পৃষ্ঠা

ভোটের আগে পদোন্নতি নয়
ভোটের আগে পদোন্নতি নয়

পেছনের পৃষ্ঠা

কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন : সেনাপ্রধান
কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন : সেনাপ্রধান

প্রথম পৃষ্ঠা

কারসাজির ‘অক্টোপাস’ চসিক নির্বাহী
কারসাজির ‘অক্টোপাস’ চসিক নির্বাহী

পেছনের পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

দেখা মিলল বকফুলের
দেখা মিলল বকফুলের

পেছনের পৃষ্ঠা

নতুন বাংলাদেশে পুরোনো দুর্নীতি
নতুন বাংলাদেশে পুরোনো দুর্নীতি

প্রথম পৃষ্ঠা

সারা দেশে আগুন ককটেল বোমা
সারা দেশে আগুন ককটেল বোমা

প্রথম পৃষ্ঠা

এবার নতুন শাকিব খান
এবার নতুন শাকিব খান

শোবিজ

লাল ড্রাগনে স্বপ্নপূরণ
লাল ড্রাগনে স্বপ্নপূরণ

পেছনের পৃষ্ঠা

ক্লোজডোর অনুশীলনে ভারত
ক্লোজডোর অনুশীলনে ভারত

মাঠে ময়দানে

সারা দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরামের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি
সারা দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফোরামের কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি

নগর জীবন

রুনা লায়লা সুরের ইন্দ্রজালে জীবন্ত কিংবদন্তি
রুনা লায়লা সুরের ইন্দ্রজালে জীবন্ত কিংবদন্তি

শোবিজ

নতুন পে-স্কেল নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ
নতুন পে-স্কেল নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ

পেছনের পৃষ্ঠা

কার অপেক্ষায় মাহি?
কার অপেক্ষায় মাহি?

শোবিজ

আগুন সন্ত্রাসীদের গুলির নির্দেশ
আগুন সন্ত্রাসীদের গুলির নির্দেশ

প্রথম পৃষ্ঠা

হামজার বাকি শুধু গোল কিপিং!
হামজার বাকি শুধু গোল কিপিং!

মাঠে ময়দানে

নিবন্ধন পেল এনসিপি ও বাসদ মার্কসবাদী
নিবন্ধন পেল এনসিপি ও বাসদ মার্কসবাদী

প্রথম পৃষ্ঠা

নৈরাজ্য রুখে দাঁড়াতে হবে
নৈরাজ্য রুখে দাঁড়াতে হবে

প্রথম পৃষ্ঠা

ঋণ পেতে ঘাম ঝরে নারী উদ্যোক্তাদের
ঋণ পেতে ঘাম ঝরে নারী উদ্যোক্তাদের

পেছনের পৃষ্ঠা

এনএসসিতে চিঠি পাঠানোর কথা অস্বীকার শিখার
এনএসসিতে চিঠি পাঠানোর কথা অস্বীকার শিখার

মাঠে ময়দানে

৯৩ রানে অলআউট ভারত
৯৩ রানে অলআউট ভারত

মাঠে ময়দানে

১৩ মাস পর মিরপুরে ফিরছে টেস্ট
১৩ মাস পর মিরপুরে ফিরছে টেস্ট

মাঠে ময়দানে

দর্শক মাতালেন কনা
দর্শক মাতালেন কনা

শোবিজ

সেনেগালকে প্রথম হারাল ব্রাজিল
সেনেগালকে প্রথম হারাল ব্রাজিল

মাঠে ময়দানে

শুভ জন্মদিন রুনা লায়লা
শুভ জন্মদিন রুনা লায়লা

শোবিজ

বিশ্বকাপ কাবাডির ট্রফি উন্মোচন
বিশ্বকাপ কাবাডির ট্রফি উন্মোচন

মাঠে ময়দানে